কুড়িগ্রামে তিস্তায় পানি বৃদ্ধি, পানির নিচে বাদাম ক্ষেত

প্রকাশ | ২৯ মে ২০২০, ১৯:৫৫ | আপডেট: ২৯ মে ২০২০, ২০:০৬

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

কুড়িগ্রামের উলিপুরে কয়েক দিনের টানা ভারি বর্ষণে তিস্তা নদীর পানি হঠাৎ বৃদ্ধি পাওয়ায় বিস্তীর্ণ চরে চাষাবাদ করা প্রায় ৩৫ হেক্টর জমির বাদাম ক্ষেত তলিয়ে গেছে। এ পরিস্থিতিতে তিস্তা নদী অববাহিকার থেতরাই, গুনাইগাছ ও বজরা ইউনিয়নের চরাঞ্চলগুলোতে বাদাম চাষাবাদ করা প্রায় শতাধিক কৃষককে লোকসান গুণতে হচ্ছে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার তিস্তা ও ব্রহ্মপূত্র নদের জেগে ওঠা চরাঞ্চলগুলোতে চলতি মৌসুমে প্রায় ৪১১ হেক্টর জমিতে বাদাম চাষ করে কৃষকরা। বাদাম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৮২২ মেট্রিক টন। অনুকূল আবহাওয়া ও কৃষকদের নিবিড় পরিচর্যার কারণে বাম্পার ফলন হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়। কিন্তু কয়েক দিনের টানা ভারি বর্ষণে তিস্তার নদীর পানি হঠাৎ বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে বজরা ইউনিয়নের ১০ হেক্টর, থেতরাই ৫ হেক্টর ও গুনাইগাছ ইউনিয়নের ২০ হেক্টর জমির বাদাম ক্ষেত তলিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। এর ফলে প্রায় ৫২ মেট্রিক টন বাদাম উৎপাদন ব্যাহত হতে পারে।

সরেজমিনে, উপজেলার থেতরাই ইউনিয়নের কিশোরপুর চরে গিয়ে দেখা যায়, বেশিরভাগ বাদাম ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। আবার কিছু বাদাম ক্ষেত আংশিক পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। ফলে বাদামের গাছগুলো পচে মরে যাচ্ছে।

এসময় বাদামচাষি বদরুল ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি জানান, প্রায় ১৫ হাজার টাকা খরচ করে ৫০ শতক জমিতে বাদাম চাষ করেছি। ফলনও ভালো হয়েছিল। হঠাৎ করে তিস্তার নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়া পুরো ক্ষেতই পানিতে তলিয়ে গেছে। চাষাবাদ করতে যে টাকা খরচ হয়েছে, এখন সে টাকাও আর উঠবে না। একই চরে বাদাম চাষ করা কৃষক হামিদুল ইসলাম জানান, প্রায় ৭ হাজার টাকা খরচ করে ৩৫ শতক জমিতে বাদাম চাষ করেছিলেন। ক্ষেত ডুবে যাওয়ায় সব শেষ হয়ে গেল।

একই পরিস্থিতি উপজেলার গুনাইগাছ ইউনিয়নের তিস্তার চরে চাষাবাদ করা বাদাম ক্ষেতগুলোও।

ওই ইউনিয়নের কৃষক কাজিম উদ্দিন জানান, প্রায় ৪৫ হাজার টাকা খরচ করে দেড় একর জমিতে বাদাম চাষ করেছিলাম। ফলনও ভালো হয়েছিল, পানিতে ডুবে যাওয়ায় সব শেষ হয়ে গেল।

এদিকে, উপজেলার বজরা ইউনিয়নের কৃষক আব্দুল কুদ্দুছের ৩৫ শতক জমির বাদাম, রফিকুল ইসলামের ৪৫ শতক জমির বাদাম ক্ষেত তিস্তা নদীর ভাঙনে নদীগর্ভে চলে গেছে। এরকম তিস্তা নদীর অববাহিকার বিভিন্ন চরে বাদাম চাষাবাদ করা অনেক কৃষক তাদের ক্ষতির কথা জানান।

উপজেলা কৃষি অফিসার সাইফুল ইসলাম বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা করা হয়েছে। সরকারিভাবে কোনো প্রণোদনা আসলে ক্ষতিগ্রস্ত এসব কৃষকদের দেয়া হবে।

(ঢাকাটাইমস/২৯মে/এলএ)