লিবিয়ায় গুলিতে নিহতদের আটজন ভৈরবের

ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৯ মে ২০২০, ২১:০৫ | প্রকাশিত : ২৯ মে ২০২০, ২০:৪২

ইতালি যাওয়ার স্বপ্ন পুরণ হলো না ভৈরবের আট যুবকের। গত মঙ্গলবার লিবিয়ায় ২৬ বাংলাদেশিসহ ৩০ জনকে গুলি করে হত্যা করেছে স্থানীয় এক মানবপাচারকারীর পরিবারের সদস্যরা। এ ঘটনায় ভৈরব উপজেলার বিভিন্ন এলাকার আটজন নিহত হয়েছেন বলে তাদের নাম-পরিচয় জানা গেছে।

ভৈরবের নিহতরা হলেন, সাদেকপুর ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামের মিয়াচান মিয়ার বাড়ির মেহের আলীর ছেলে মো. আকাশ, মোটুপী গ্রামের খালপাড় এলাকার আব্দুল আলীর ছেলে সোহাগ মিয়া, কালিকাপ্রসাদ ইউনিয়নের আকবরনগর গ্রামের

জিন্নত আলীর ছেলে মাহাবুব, শ্রীনগর ইউনিয়নের শ্রীনগর গ্রামের বাচ্চু মিলিটারির ছেলে সাকিব। বাকিরা শুম্ভপুর গ্রামের জানু মিয়া, মামুন মিয়া, সাদ্দাম মিয়া ও মোহাম্মদ আলী।

লিবিয়ায় নিহত আকাশের বড় ভাই মোবারক জানান, দেড় বছর আগে পরিবারের ভরপোষণের জন্য লিবিয়ায় যায় তার ভাই। সেখানে কাজ করার সময়ে ভৈরবের শ্রীনগর গ্রামের এক দালাল তানজীরের মাধ্যমে লিবিয়ার বেনজি হতে ত্রিপুলি হয়ে ইতালি যাওয়ার জন্য কথাবার্তা হয়। তারা ইতালিতে পৌঁছনোর পর তিন-চার লাখ টাকা পরিশোধ করতে হবে।

তিনি বলেন, ইতালির উদ্দেশ্যে রওনা দেয়ার কিছু দিন পর তাদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করতে পারেনি। হঠাৎ ২৭ মে সন্ধ্যায় ইমুতে একটি ভয়েস মেসেজ আসে। সেখানে জানতে পারেন তার ভাই বলছে ‘আমাকে বাঁচাও, আমাকে মেরে ফেলবে’। পাচারকারীরা আকাশের কাছে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করছে। যদি না দেয় তাহলে তাদের মেরে ফেলবে। এরপর থেকে আর তাদের কোনো খোঁজ মেলেনি। বাংলাদেশ সরকারের কাছে তার দাবি শেষবারের মতো যেন তার ছোট ভাইয়ের মুখটা দেখতে পারে সেই ব্যবস্থা করার দাবি জানান তিনি।

নিহত সোহাগের বাবা আব্দুল আলী জানান, এক বছর আগে লিবিয়ায় যান তার ছেলে। সেখানে কয়েকমাস থাকার পর ভৈরবের শ্রীনগর গ্রামের পূর্বপাড়ার সোনা মিয়া ছেলে তানজীরের মাধ্যমে ইতালি যাওয়ার জন্য তিন লাখ টাকার মাধ্যমে চুক্তি করে। ইতালিতে পৌঁছানোর পর টাকা পরিশোধ করতে হবে। তারপর থেকে তার ছেলের আর খোঁজ মেলেনি। দেশের কিছু দালালের খপ্পরে পড়ে ইতালিতে যাওয়ার জন্য জীবন বাজি রেখে টাঙ্গি পাড়ি দেয়। কিন্তু তাদের জিম্মি করে তাদের পরিবারের কাছে মোটা অংকের টাকা দাবি করে তাদের মারধোর করে। এইভাবে তাদেরকে আমরা হারালাম।

ভৈরব থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) তদন্ত বাহালুল আলম খান জানান, লিবিয়ায় মানব পাচারকারীদের গুলিতে নিহত ২৬ বাংলাদেশির মধ্যে ভৈরবের আটজনের নাম জানা গেছে। আমরা তাদের নামের তালিকা সংগ্রহ করে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি। পরবর্তীতে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী প্রদক্ষেপ নেবেন বলে তিনি জানান।

উল্লেখ্য, অভিবাসীরা লিবিয়ার মিজদা শহরের এক মানাবপাচারকারীর কাছে জিম্মি ছিলেন। অভিযুক্ত পাচারকারী মঙ্গলবার রাতে অভিবাসীদের হাতে কোনোভাবে খুন হন। এরপর তার সহযোগী ও আত্মীয়-স্বজনেরা জিম্মি অভিবাসীদের ক্যাম্পে নির্বিচারে গুলি চালালে ঘটনাস্থলে ২৬ জন বাংলাদেশিসহ মোট ৩০ জন মারা যান। এই ঘটনায় আরো ১১ জন বাংলাদেশি মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন। তাদেরকে বর্তমানে দেশটির জিনতান হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

(ঢাকাটাইমস/২৯মে/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

প্রবাসের খবর বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :