‘ভূমিদস্যুদের’ হামলায় সাংবাদিক হাবিব আহত

পঞ্চগড় প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৯ মে ২০২০, ২১:০৮

পঞ্চগড়ে বোদায় এক বছর আগে জুয়া, মাদক, চাঁদাবাজি ও ভূমিদস্যুতা নিয়ে প্রকাশিত একটি সংবাদের জের ধরে সাংবাদিক এইচআর হাবিবের ওপর হামলা ও মারপিটের অভিযোগ উঠেছে। এ সময় তার সাথে থাকা সহকারী মিনারসহ আরও তিনজন আহত হন। বৃহস্পতিবার বিকালে উপজেলার ঝলইশালশিরি ইউনিয়নের নয়নীবুরুজ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

সাংবাদিক হাবিব এবিসি বাংলা টেলিভিশনের বিশেষ প্রতিনিধি এবং সারাদেশ টুয়েন্টিফোরডটকম’র সম্পাদক।

ঘটনার পর তিনি স্থানীয় মাহাবুব আলমসহ নয়জনকে আসামি করে বোদা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বর্তমানে সাংবাদিক হাবিব ছাড়া বাকি তিনজন হাসপাতলে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

পুলিশের কাছে দায়েরকৃত লিখিত অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ঢাকায় কর্মরত বিশিষ্ট থিয়েটার সংগঠন ও সাংবাদিক হাবিবের শ্বশুরবাড়ি পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার নয়নিবুরুজ এলাকায়। এবিসি বাংলা টেলিভিশনের বিশেষ প্রতিনিধি হওয়ায় ঢাকার বাইরেও বিভিন্ন জেলায় তিনি নিউজের কাজে যান। প্রায় এক বছর আগে তিনি শ্বশুরবাড়ি এসে তার সম্পাদিত অনলাইন নিউজপোর্টাল ‘সারাদেশ টুয়েন্টিফোরডটকম’-এ সেখানকার মাদক, জুয়া, চাঁদাবাজি এবং ভূমিদস্যুতা নিয়ে একটি সংবাদ প্রকাশ করেন। ওই সংবাদে স্থানীয় কয়েকজনের নাম উল্লেখ করায় সে সময় থেকে তারা সাংবাদিক হাবিবের ওপর ক্ষিপ্ত ছিলেন।

লিখিত অভিযোগে বলা হয়, গত ১২ মে তিনি আবার তার শ্বশুরবাড়ি এসে হোম কোয়ারেন্টাইনে ছিলেন। এক পর্যায়ে তিনি এবিসি বাংলা টেলিভিশনের এসাইনমেন্ট পেয়ে পঞ্চগড়ে উৎপাদিত মরিচ নিয়ে একটি বিশেষ প্রতিবেদনের জন্য ২৮ মে বৃহস্পতিবার বিকালে বোদা থেকে নয়নিবুরুজ এলাকায় যান। এ সময় তার সহকারী মিনারকে একা পেয়ে অভিযুক্ত মাহাবুব আলমসহ অন্যরা ধারালো অস্ত্র নিয়ে তার ওপর হামলা চালায় এবং সাংবাদিক হাবিবের খোঁজ করে। এক পর্যায়ে তারা হাবিবকে দেখতে পেয়ে ধাওয়া দেয় এবং রড ছুঁড়ে মারে। এতে তিনি সামান্য আহত হয়। তাদের হামলায় হাবিবের সহকারী মিনারসহ আরও তিনজন আহত হন। তিনি বোদা উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা নিলেও বাকিরা হাসপাতালেই ভর্তি রয়েছেন।

সাংবাদিক এইচআর হাবিব বলেন, আমি এক বছর আগে নয়নিবুরুজ এলাকার মদক ব্যবসায়ী, চাঁদাবাজ আর ভূমিদস্যুদের নিয়ে একটি নিউজ করেছিলাম। তখন থেকে তারা আমার ওপর ক্ষিপ্ত ছিলেন। আমি একটি এসাইনমেন্ট পেয়ে সেখানকার মরিচের উৎপাদন এবং বাজারজাত নিয়ে একটি বিশেষ প্রতিবেদন করছিলাম। তারা আমার উপস্থিতি বুঝতে পেরে গোপনে সংঘবদ্ধ হয়ে এই হামলা চলিয়েছে। আমি পালিয়ে কোনমতে প্রাণ রক্ষা করেছি। আমার সহকারী মিনারসহ তিনজন এখনো হাসপাতালে রয়েছেন। থানায় অভিযোগ দিয়েছি। এখনো মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়নি। তারা এখনো আমাদের মারার জন্য আশপাশে ঘোরাঘুরি করছে। একজন সাংবাদিক হয়েও আমাদের জীবনের কোন নিরাপত্তা নেই।

অভিযুক্ত মাহাবুব আলম বলেন, জমি নিয়ে নিয়ে পারিবারিক বিরোধ রয়েছে। এ নিয়ে আমাদের মধ্যে আপস-মীমাংসাও হয়ে গেছে। ওই সাংবাদিক যখন তখন এসে আমাদের নামে যা তা লিখে চলে যান। এবার তিনি এসেছেন- আমরা জানি না। তার সাথে আমাদের কারো দেখাও হয়নি। এর আগেও তিনি আমাদের নাম জড়িয়ে মিথ্যা সংবাদ করেছিলেন। এ ঘটনায় আমরা সংবাদ সম্মেলনও করেছিলাম। গতকাল তার আত্মীয় মিনারসহ অন্যরা আমাদের ওপর হামলা করেছেন। আমরাও থানায় জিডি করেছি। এখন মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি।

বোদা থানার ভারপ্রাপ্ত ওসি আবু সায়েম মিয়া বলেন, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, ঘটনাটি জমি সংক্রান্ত বিরোধ এবং এ নিয়ে একটি সংবাদ প্রকাশের জের। এছাড়া আহত সাংবাদিকের বাড়ি অন্য জেলায়। তিনি কয়েক মাস আগে তার শ্বশুরবাড়ির ওই এলাকায় কয়েকজনের নাম দিয়ে একটি সংবাদ প্রকাশ করেছিলেন। এরপর থেকেই তারা সাংবাদিকের ওপর ক্ষিপ্ত ছিলেন। ঘটনার পর তিনি একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। আমরা ঘটনাটি খোঁজ নিচ্ছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(ঢাকাটাইমস/২৯মে/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :