পাকা ধান ঘরে তুলতে না পারায় কুড়িগ্রামের কৃষকদের দুশ্চিন্তা

অনিরুদ্ধ রেজা, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ৩০ মে ২০২০, ২১:০৫

কুড়িগ্রামে পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টিতে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তলিয়ে গেছে চরাঞ্চলের উঠতি বোরো ধান। এ অবস্থায় কয়েকশ হেক্টর জমির আধাপাকা ধান পানিতে তলিয়ে থাকায় তা ঘরে তুলতে পারছেন না কৃষকরা। দ্রুত পানি নেমে না গেলে তলিয়ে থাকা এসব ধান পুরোপুরি নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা।

কুড়িগ্রাম জেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত ব্র‏হ্মপুত্র ও দুধকুমর নদের অববাহিকার প্রায় দুই শতাধিক চরে বোরোর আবাদ করেছেন চরাঞ্চলের কৃষকরা। এসব এলাকায় দেরিতে ২৯ জাতের বোরো ধান চাষ করায় তা এখনও ঘরে তুলতে পারেননি বেশির ভাগ কৃষক। এবারে আগাম বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

কুড়িগ্রাম সদর উপেজেলার পোড়ার চর, মাঝিয়ালির চর, বড়ুয়া, রলাকাটা, ভগবতীপুর, পারবতীপুর, ঝুনকার চর, নাগেশ্বরীর নারায়রনপুর, কালার চর, অষ্টআশির চর, উলিপুর উপজেলার সাহেবের আলগা, জাহাজের আলগা, দুই খাওয়া, আইরমারীসহ রৌমারী, রাজিবপুর ও চিলমারী উপজেলার প্রায় দুই শতাধিক চরসহ নিম্নাঞ্চলগুলোতে আবাদকৃত বোরো ধানের বেশিরভাগই পানির নিচে তলিয়ে আছে। এ অবস্থায় কৃষকরা পানির নিচ থেকে কিছু ধান ঘরে তোলার চেষ্টা করছেন।

সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের পারবতীপুর চরের খোকা মন্ডল জানান, চরের পাঁচ বিঘা জমিতে ২৯ জাতের বোরো ধান চাষ করেছি। হঠাৎ করেই নদীতে পানি বাড়ায় তলিয়ে গেছে। এর মধ্যে এক বিঘা জমির ধান সামান্য জেগে আছে সেই এক বিঘা জমির ধান লোকজন নিয়ে কাটছি। বাকিগুলো এখনও পানির নিচে পড়ে আছে।

সদরের ভগবতীপুর চরের আয়নাল হক বলেন, ধার-দেনা করে আবাদ করা এ ধান দিয়েই আমাদের সারা বছর চলে যায়। কিন্তু এবার প্রকৃতির এই বৈরি আচরণে অর্ধেক ধানও ঘরে তুলতে পারছি না। সব শেষ হয়ে গেল।

সদরের যাত্রাপুর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য শাহা জামাল বলেন, যাত্রাপুর ইউনিয়নের চরাঞ্চলসহ পার্শ্ববর্তী ইউনিয়নের চরাঞ্চলের সমস্ত ২৯ জাতের বোরো ধান পানির নিচে তলিয়ে আছে। কয়েকদিন ধরে এসব ধান পানির নিচে থাকায় তা নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এতে করে এসব এলাকার কৃষকের অপুরণীয় ক্ষতি হবে বলে জানান তিনি।

যাত্রাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আইযুব আলী সরকার বলেন, চরাঞ্চলগুলোর কৃষকরা যে বোরো আবাদ করেছেন পানি আসার আগে তার অর্ধেকও ঘরে তুলতে পারেননি। এখন দ্রুত পানি নেমে না গেলে তলিয়ে থাকা ধান নষ্ট হয়ে যাবে। কৃষকদের এ ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

বোরো ধান ক্ষেত পানিতে তলিয়ে থাকার বিষয়টি জানতে সরেজমিন থেকে যাত্রাপুর ইউনিয়নের দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আশরাফুল হকের নিকট জানতে চাইলে তিনি ধান তলিয়ে যাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘এ হিসাব আমি আপনাকে দিতে বাধ্য নই।’

এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মোস্তাফিজার রহমান প্রধানের কাছে কী পরিমান ধান তলিয়ে গেছে জানতে চাইলে তিনি সঠিক হিসাব দিতে পারেননি। তবে তিনি জানান যেসব ধান দেরিতে লাগানো হয়েছে চরাঞ্চলের শুধু সেসব ধান ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে বলে জানতে পেরেছি। ক্ষতির পরিমান জানতে কাজ চলছে।

দেশে চলমান করোনা পরিস্থিতিতে চরাঞ্চলে বোরো চাষীদের এ ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকারের সহযোগিতা কামনা করছেন এখানকার কৃষকরা।

(ঢাকাটাইমস/৩০মে/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

বিল বকেয়ায় সংযোগ বিচ্ছিন্ন, অবৈধ বিদ্যুতে চলছে ইউপি কার্যালয়

কেজি দরে অপরিপক্ক তরমুজ, পিস চাইলে দাম আকাশ ছোঁয়া

লক্ষ্মীপুরে যুবলীগ নেতার চোখ উপড়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা

ফেনী সরকারি কলেজে শিক্ষার্থীদের গণইফতারে ছাত্রলীগের হামলা, আহত ১০

মধ্যরাতে ফের মিয়ানমারের গুলির শব্দে কেঁপে উঠল টেকনাফ সীমান্ত

উত্তরবঙ্গের ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক, দুর্ঘটনা তদন্তে ৪ সদস্যের কমিটি

বরগুনা প্রেসক্লাবের নামে ভুয়া কমিটি গঠনের অভিযোগ 

ঝিনাইদহে বাজার নিয়ন্ত্রণে ভোক্তা অধিকারের অভিযান, ৩ প্রতিষ্ঠানে জরিমানা

যারা ট্রেনে আগুন দেয় তারাই ভাড়া বৃদ্ধির গুজব ছড়ায়: রেলমন্ত্রী

আলফাডাঙ্গায় দিনব্যাপী ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প অনুষ্ঠিত

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :