করোনাকালে উচ্চ মাধ্যমিকে কোথায় ভর্তি হবে?

সফিকুল ইসলাম সোহেল
 | প্রকাশিত : ৩০ মে ২০২০, ২১:০৭

আগামীকাল রবিবার এ বছরের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ফলাফল প্রকাশিত হতে যাচ্ছে। এই মহামারি দুর্যোগে স্বাভাবিকভাবেই ফল প্রকাশে বিলম্ব হয়েছে। তারপরও নানা বাধা বিপত্তি মোকাবেলা করে দেশের শিক্ষা বোর্ডগুলো ফলাফল প্রস্তুত করেছে এবং তা প্রকাশ করতে যাচ্ছে। এজন্য শিক্ষাবোর্ডের সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। ফলাফলের পরপরই আসবে কোন কলেজে তোমরা (শিক্ষার্থীরা) ভর্তি হবে এবং অভিভাবকরা চিন্তা করবেন আপনার সন্তানকে কোথায় ভর্তি করাবেন?

কলেজ নির্বাচনে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা কয়েকটি পরামর্শ অনুসরণ করতে পারেন-

১. বাসার কাছে বা নিজ শহরে ভালো কলেজ থাকলে এই করোনাকালে বাইরে ভর্তি না হওয়াই ভালো। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির এই দুই বছরের সময়ে ভিন্ন পরিবেশে একজন নতুন শিক্ষার্থীর খাপ খাইয়ে নিতে নানাবিধ সমস্যা হয়। আর এ বছর বিশ্বব্যাপী মহামারিতে রাজধানী শহরে আপনার সন্তানকে না পাঠানো বেশি ভালো, এটা আমার ব্যক্তিগত পরামর্শ।

২. আপনার সন্তানকে আত্মীয়-স্বজনের বাসায় রাখবেন নাকি মেসে রাখবেন? আমি মনে করি নিজেদের বাসা থাকলে সেখানে থাকবে, কিন্তু কোনো আত্মীয়-স্বজনের বাসায় থাকার চেয়ে মেস অধিক ভালো। তবে সবচেয়ে ভালো হয় যদি আপনি যে কলেজে আপনার সন্তানকে ভর্তি করাবেন, সেখানে যদি হোস্টেল থাকে। সেক্ষেত্রে হোস্টেল আপনার সন্তানের জন্য বেশি উপযুক্ত এবং শিক্ষার্থী এখানে সার্বক্ষণিক শিক্ষকদের তত্ত্বাবধানে থাকে।

৩. আপনার বাসা থেকে কলেজের দূরত্ব যদি আট কিলোমিটারের বেশি হয়, তবে অবশ্যই আপনার সন্তানকে কলেজের হোস্টেলে রাখার চেষ্টা করবেন। এতে শিক্ষার্থীদের যাতায়াত সময় বাঁচবে এবং পড়াশোনায় অধিক মনোযোগী হবে। আবার অতিরিক্ত ক্লাস থাকলে বা প্রাকটিক্যাল ক্লাস থাকলে শিক্ষার্থী তাতে মনোযোগ সহকারে অংশগ্রহণ করতে পারবে।

৪. দেশের যেকোনো সরকারি কলেজ পছন্দের তালিকার শীর্ষে রাখা যেতে পারে। কারণ হলো এখানে বেতন বা অতিরিক্ত খরচের যেমন ঝামেলা নেই। ঠিক তেমনি সাধারণত সকল সরকারি কলেজের শিক্ষকরা বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডার থেকে নিয়োগপ্রাপ্ত। যার ফলে শিক্ষার মান নিয়ে সন্দেহ করারও সুযোগ থাকে না।

৫. এমন কলেজ পছন্দের তালিকায় রাখবে, যেখানে শিক্ষার্থীদের জন্য হোস্টেল সুবিধা রয়েছে। এতে শিক্ষার্থীর সময় ও শ্রম দুটোই কম ব্যয় হবে।

৬. উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি হয়ে স্বপ্ন দেখবে পরবর্তী জীবনে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার। তাই শুরুতেই যাদের লক্ষ্য একই রূপ, তাদের সঙ্গে গ্রুপ করে পড়াশোনা করবে যাতে সাফল্য তোমার কাছে ধরা দেয়। যেহেতু ভর্তি পরীক্ষার পূর্বে এর জন্য পড়াশোনার সময় এখন আগের চেয়ে কম পাওয়া যায়। তাই এ সময়ে কিছু প্রস্তুতি নিয়ে ফেলবে।

৭. উচ্চ মাধ্যমিক হলো তোমার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়। তুমি জীবনের এ পর্যায়ে যে রকম বীজ বুনবে, পরবর্তী জীবনে ঠিক তারই ফলাফল ভোগ করবে। তাই এখানে দুবছরের ও কম সময়ে তোমরা আশা করি নিজেদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করে জীবনের স্বর্ণ শিখরে আরোহন করবে।

৮. তুমি কোন কোন বিষয়গুলো গ্রুপভিত্তিক চয়েজ করবে, সেক্ষেত্রে শুধু সহজ বিষয়ে প্রধান্য না দিয়ে যে বিষয়টি পরবর্তী জীবনেও কাজে লাগবে এমন বিষয় নির্ধারণ করার চেষ্টা করবে। অনেকে বিভাগ পরিবর্তন করতে চাও। যদি তোমার ওই বিভাগে বেসিক বেশি দুর্বল হয় তবেই এটি করবে। নয়ত প্রয়োজন নেই।

আশা করি উপরের বিষয়গুলো অনুসরণ করে তোমরা তোমাদের কাঙ্ক্ষিত কলেজগুলোতে ভর্তি হবে। জীবনের এ পর্যায়ে সঠিকভাবে পড়াশোনা করে সফলতা লাভ করবে। উচ্চ মাধ্যমিকে তোমার সময়কে একদমই নষ্ট করবে না।

লেখক: প্রভাষক, ইংরেজি বিভাগ, ৩৭তম বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা)

সংবাদটি শেয়ার করুন

মতামত বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :