পড়াশোনা চালিয়ে গেলে একদিন ফলাফল আসবেই

রাজুব ভৌমিক
| আপডেট : ০১ জুন ২০২০, ১১:২২ | প্রকাশিত : ০১ জুন ২০২০, ১১:১৪

যেসব অভিভাবকের ছেলে বা মেয়ে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫.০ পায় নি বা পাশ করে নি তাদের জন্য কিছু কথা।

প্রথমতঃ মন খারাপ করবেন না। It is not the end of the world. যদি আপনার সন্তান এবারের পরীক্ষায় পাশ করেছে তাহলে এইচএসসিতে কিভাবে ভাল করে সেজন্য তাকে সহযোগিতা করুন। জিপিএ ৫.০ না পাইলে আপনার সন্তানকে সান্ত্বনা দিন। পরীক্ষার রেজাল্ট নিয়ে আপনার চেয়েও আপনার সন্তানের মন অনেক বেশি খারাপ। অযথা তাদের উপর কোন চাপ দিবেন না। তাহলে হিতে বিপরীত হতে পারে।

অনেক ছাত্র-ছাত্রী প্রতিবছর পরীক্ষার খারাপ ফলাফলের জন্য আত্মহত্যা করে। যদি পাশ না করে তাহলে পরবর্তীতে কিভাবে পাশ করে সেজন্য চেষ্টা করে যান। মানসিকভাবে আপনার সন্তানকে সাহস যোগান। পিতামাতার সাহস পেলে সন্তানেরা বিশ্বজয় করতে পারে। পাশ করে নি বা জিপিএ ৫ পায় নি বলে আপনার ঘোমড়া মুখ দেখাবেন না তাহলে তারা ভবিষ্যতের পৃথিবীর জন্য নিজেকে অযোগ্য ভাবতে শুরু করবে।

দ্বিতীয়তঃ শুধু জিপিএ ৫.০০ পেলেই যে আপনার সন্তান ভবিষ্যতে সফল হবে তা কিন্তু নয়। ভবিষ্যতে সফল হতে হলে পরীক্ষায় ভাল করার চেয়ে পড়াশুনা চালিয়ে যেতে হবে। পড়াশুনা চালিয়ে গেলে সে অবশ্যই সফল হবে। সেজন্য আপনার সন্তানের শিক্ষার তৃষ্ণা বৃদ্ধি করুন। নানা ধরনের বই কিনে ঘর সাজান। ঘরে সেলিব্রেটির ছবি না লাগিয়ে বিশিষ্ট জ্ঞানী ব্যক্তিদের ছবি দেয়ালে লাগান। প্রতিবেশীর সমালোচনা বা রাজনৈতিক সমালোচনা না করে পারিবারিক আড্ডাতে জ্ঞানী ব্যক্তিদের নিয়ে গল্প করুন। এতে আপনার সন্তানের শিক্ষার প্রতি আগ্রহ বাড়বে।

তৃতীয়তঃ আপনার সন্তান যদি এবার জিপিএ ৫.০ পায় বা শুধুমাত্র পাশ করে থাকে তাহলে তাকে নির্দিষ্ট কোনো বিষয়ে পড়তে বাধ্য করবেন না। সবার ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হবার যোগ্যতা নেই তাই বলে তারা কিন্তু কম স্মাট নয়। বাঘে মাংস খায় এবং হাতি কলাগাছ খায়। তাই বলে হাতিকে দ্রুত দৌড়ানোর জন্য মাংস খাওয়ালে চলবে না। ঠিক তেমনি আপনার সন্তানকে সফল করতে যেয়ে জোর করে বিজ্ঞানে ভর্তি করাবেন না। মনে রাখবেন একটু স্লো হলেও হাতি কিন্তু বাঘের চেয়েও শক্তিশালী।

পরিশেষে, আমার এসএসসির রেজাল্টটি দেখুন। ২০০২ সালের এসএসসি পরীক্ষায় আমি জিপিএ ৩.৫ পেয়েছি। সবার মত আমারও মন খারাপ হয়েছে। তখন আমার বয়স তের বছর ছিল। বড় বোনের সাথে আমার বাবা আমাকে একসাথে স্কুলে ভর্তি করে দিয়েছিল। এইচএসসি তে আমার রেজাল্ট আরো খারাপ হয়েছে। এইচএসসি পরীক্ষায় প্রথমবার পাশ করিনি। দ্বিতীয় চেষ্টায় ৩.১ জিপিএ নিয়ে কোনোমতে ২০০৫ সালে পাশ করেছি। কিন্তু পড়াশুনা করার ইচ্ছে আমার সবসময় ছিল।

তাই আজ প্রায় পনের বছর পরে আমি তিনটি ডক্টরেট ডিগ্রি, এবং চারটি মাস্টার্স ডিগ্রী শেষ করেছি। বর্তমানে চার নম্বর পিএইচডি করছি। বর্তমানে নিউইর্য়কে অধ্যাপনা করছি এবং পুলিশ বিভাগে কর্মরত আছি। সেজন্য আপনাদের বলতে চাই আপনার সন্তানের রেজাল্টের কারণে হতাশ হবার কোনো কারণ নেই। ওদের পড়াশুনার সুযোগ সৃষ্টি করে পাশে থাকুন। পড়াশুনা চালিয়ে গেলে একদিন ফলাফল অবশ্যই আসবে।

লেখক: কবি ও পুলিশ কর্মকর্তা

ঢাকাটাইমস/১জুন/এসকেএস

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফেসবুক কর্নার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :