কোভিড উনিশে

ফজলুল বারী বাবু
 | প্রকাশিত : ০২ জুন ২০২০, ১২:৫০
ফজলুল বারী বাবু

লন্ডনের আকাশ খুব কম সময়ই একটানা পরিচ্ছন্ন দেখা যায়। মার্চ মাস থেকেই কামাল লক্ষ্ করেছে নীল আকাশটা আরও বেশি নীল! যেন কোনো রূপসী আকাশকন্যা নীল চাদর গায়ে জড়িয়ে দেখছে পৃথিবীর পরিচ্ছন্ন সৌন্দর্য! কামাল যে বাড়িতে ভাড়া থাকে তার সামনের রাস্তা দিয়ে ভোরের আলো হাসবার আগেই গাড়ির ছুটোছুটি চলে- কোনো কর্মজীবী দূরে তার গন্তব্যে ঠিক সময়মতো পৌঁছাবে সেই আশায়। কিংবা ঘড়ির কাঁটা যখন সোয়া আটটার আগেপিছে সেই সময়ে অনেক পিতামাতা তাদের স্কুলগামী সন্তানদের স্কুলে পৌঁছে দিতে গাড়ি নিয়ে কামালের বাসার সামনে দিয়ে চলে যায় কখনো নিয়মতান্ত্রিক গতিবেগে, আবার কেউ একটু দ্রুত। পায়ে হেঁটে অনেক ছাত্রছাত্রী ফুটপাত দিয়ে যাবার সময় কামালের বাড়ির সামনে কখনো-সখনো থমকে দাঁড়ায়!

কাজে যাবার আগে কামাল মাঝে মাঝে নতুন কোনো সুর বা গানের কথা মাথায় এলেই হারমোনিয়ামটা নিয়ে বসে। সেই শব্দেই অনেকে কৌতূহলে ঘাড় ঘুরিয়ে কামালের জানালার দিকে একপলক তাকিয়ে আবার চলতে থাকে আপন গন্তব্যের উদ্দেশে! এই বিষয়টি কামাল জানতে পেরেছে তার এক গানের ছাত্রীর কাছ থেকে। ছাত্রীটি তার এই এলাকারই অধিবাসী।

চীনের উহান শহরে এক ভাইরাস বাক্স ছেড়ে পালিয়ে মানবদেহে প্রবেশ করেছে। অদ্ভুত ধরনের ভাইরাস এটি। পৃথিবীতে এমন ভাইরাস এর আগে মাথাচাড়া দিয়ে পুরো ল্যাবরেটরির শাসন-অনুশাসন উপেক্ষা করে খোলা হাওয়ায় শাসন করার সুযোগ পায়নি। নাম দেয়া হয়েছে ‘করোনা’, এখানে বন্ধুদের আড্ডায় অনেকেই একে ‘করুণা’ বলে হাসাহাসি করে। কামালের কলেজজীবনের কিছু বন্ধু বিলেতের রাজধানীতে বসবাস করে জানাই হতো না, যদি না কামাল পরিবার নিয়ে অস্ট্রিয়া ছেড়ে এখানে পাড়ি না জমাত!

কামালের এইচএসসি আদমজী ক্যান্টনমেন্ট থেকে করায় ছেলে-মেয়েদের সাথে একসাথে পড়বার সুযোগ পেয়েছিল সেই সময়। এক ক্যাপ্টেনের মেয়ে কামালদের সাথেই কলা বিভাগের ছাত্রী ছিল, নাম করুণা আচার্য্য! অসামান্য রূপসী মেয়েটির নাম ‘করুণা’ জানতে পেরে চুপচাপ স্বভাবের কামাল টিফিনের সময় কলেজ সংলগ্ন পুকুরপাড়ে বসে শুধুই ভাবত মেয়েটিকে কী করে জিজ্ঞেস করবে কেন তার নাম রাখা হয়েছে ‘করুণা’! কিন্তু দীর্ঘ দুই বছরে একটিবারের জন্য কামাল সাহস জোগাতে পারেনি করুণাকে বলতে সেই কথা। আর পারবেই কী করে! যে দুর্দান্ত করুণা আচার্য্য, রূপের দৌরাত্ম্যের সাথে তার দুরন্তপনা সারা কলেজ মাতিয়েই রাখত না, অনেক পরে জানতে পেরেছিল এই করুণা যার ওপর একটু প্রেমের করুণা বর্ষণ করত, সে নিজেকে বাংলা রোমিও ভাবতে শুরু করে দিত। গোটা দশ-বারোজন সেই সময় করুণার রোমিও হয়ে কলেজের আসল কর্মের পরিবর্তে প্রেম-ভালোবাসায় ইন্টারমিডিয়েট পড়তে শুরু করে দিয়েছিল। প্রিন্সিপাল স্যার এমন একজন রোমিওকে হাতেনাতে পাকড়াও করে সোজা হাতে টিসি ধরিয়ে দিয়েছিলেন। বেচারা আম-কলা কিছুই পেল না করুণার প্রেমান্ধ হয়ে, পেল শুধু বঞ্চনা!

সেই করুণার প্রায় নামানুসারেই করোনাভাইরাস নিয়ে হাসি-ঠাট্টা বন্ধ হয়ে সামাজিক যোগাযোগ যখন বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল লকডাউনের নির্দেশনায়, ব্যস্ত গলিটা কেমন নির্লিপ্ত হয়ে পড়ল! সেই ছোটবেলায় স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় হাজারীবাগের বাসার সামনের গলিটা যেমন কারফিউ দেয়া হলে উদাস হয়ে মানুষ কিংবা খুব হালকা যানবাহনের জন্য অকুল হয়ে পড়ত, ঠিক তেমনি লাগছে লন্ডনের এই বাসার সামনের গলিটা। শুধু তফাত একাত্তরে পাকিস্তানি হায়েনারা বাঙালি নিধনে কারফিউ দিয়ে রাস্তায় যাতায়াত বন্ধ করে দিত, এখন এই লন্ডন করোনা নামের এক ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব থেকে বাঁচতে লকডাউনের মাধ্যমে রাস্তাঘাট নির্জীব করে দিয়েছে।

কথায় নয় শুধু, কার্যক্ষেত্রেও ব্রিটিশ বেনিয়ার বংশধর হওয়ায় বেশ দেরি করেই লকডাউন কার্যকর করায় এই মহামারি ইতালি কিংবা স্পেনের মতো না ঘুড়ে দাঁড়ায়, তাই নিয়ে বেশ শঙ্কা সাধারণ মানুষের মনে। কামালের ঠিক পাশের প্রতিবেশী মিস্টার জ্যাকব একজন রিটায়ার্ড পুলিশ অফিসার। বেশ স্বাস্থ্যসচেতন এই মানুষটির সিগারেটের এক অদম্য নেশা! গার্ডেনের দরজা খুলে মাঝে মাঝেই সুখটান দেয় মিস্টার জ্যাকব। বিশেষ করে গ্রীষ্মকালে কালেভদ্রে ছুটির দিনে গার্ডেনের কাজে ভোরবেলা বের হলে এই দৃশ্য দেখতে পায় কামাল। সুপ্রভাত বলে সম্ভাষণ জানালেই ভদ্রলোক হাতেধরা সিগারেট ফেলবার পাত্রটিতে ফেলেই বলবে, ‘খুবই দুঃখিত মাই ইয়াং ম্যান, সিগারেটটা আমাকে খেয়েই ফেলল!’ বলেই ঘরের ভেতরে চলে যাবে। বেশ পরোপকারী মানুষটি। কামালরা যে বছর এই বাড়িটি ভাড়া নিল, সেবারের প্রথম সামারে গার্ডেনের ঘাস এত বেশি বড় হয়ে পড়েছিল যে একদিন ভদ্রলোক তার নিজের ট্রিমার (ঘাস কাটার যন্ত্র) নিয়ে এসে পুরো বাগানের ঘাস নির্বংশ করে দিয়েছিল। সেই ঘটনায় কামাল কী যে লজ্জা পেয়েছিল! আসলে এর আগে কামাল কোনো হাউস বাড়িতে এমন গার্ডেনের বিলাসিতায় বসবাস করেনি, তাই এই বিষয়গুলো কামালের প্রায় জানাই ছিল না। কামালের স্ত্রী কঙ্কনা অবশ্য কয়েক দিন খুব বলেছে বিএন্ডকিউতে গিয়ে এসব বাগানবিলাসী যন্ত্রপাতি কিনে আনবার জন্য, কিন্তু কাজের চাপে আর কেনা হয়নি।

লকডাউনের বদৌলতে কামাল তার ইউনিভার্সিটি পড়ুয়া ছেলে রবি এবং মেয়ে রুপাকে কয়েক সপ্তাহ ধরেই ঘরে পেয়ে বেশ আনন্দে আছে। বিশেষ করে ছেলে রবি প্রায়ই ভার্সিটি কিংবা তার ডান্স গ্রুপের বন্ধুদের সাথে রিহার্সেল অথবা ক্লাশ ওয়ার্ক-এর কারণে দেরি করে বাসায় ফেরে! যতক্ষণ না ছেলের পায়ের শব্দ পাবে, ততক্ষণ কামালের ঘুম আসে না। এ জন্য কাজে গিয়ে কামাল প্রায়ই অস্বস্তিতে ভোগে! মেয়ে রুপা এখনো ভাইয়ের পদাঙ্ক অনুসরণ করতে শুরু করেনি, কিন্তু অচিরেই সেই সম্ভাবনা দেখা দিতে পারে! এ এক মহা পারিবারিক বিপদ সংকেত বলা যায়। মনে পড়ে যায়, কামাল স্কুলজীবন থেকেই গান ও নাটকে বেশ উৎসাহী ছিল। এসএসসি দিয়েই কামাল যখন প্রায়ই অনুষ্ঠান অথবা মহড়ার কারণে বাসায় দেরি করে ফিরত, কামালের মা শামসুন্নাহার স্টাফ কোয়ার্টারের বাসার জানালায় দাঁড়িয়ে মূল সড়কে যাবার মাঠ থেকে সামান্য দূরের বড় রাস্তার পানে চোখ মেলে বসে থাকতেন। অবশ্য রাত বলতে এই আটটা কিংবা নয়টা।

সে যাই হোক, করোনার করুণায় সবাই ঘরে থাকায় কামালের ছবি দেখার এক বিরাট নেশা হয়ে গ্যাছে। একদিন রুপার পছন্দের ছবি তো আরেকদিন রবির পছন্দের হলিউড মুভি, কিংবা নিজের নয়তো কামালের স্ত্রী কঙ্কনার পছন্দের বলিউড বা পশ্চিমবঙ্গের উত্তম-সুচিত্রার পুরনো দিনের রোমান্টিক ছবি। বেশ ভালোই কাটছে গভীর রাত অবধি সিনেমার চক্করে নির্ঘুম জেগে থাকা। চারজনের সিনেমা হল বলতে কামালদের বেডরুমের ডাবল বেড। অবশ্য রবি বেডের পাশেই টিভি অভিমুখে শীতল পাটির ওপর নিজের লেপটা জড়িয়ে একা আরামেই ছবি উপভোগ করে। কামাল, রুপা আর কঙ্কনা বেডে বসে ঠেলাঠেলি করে ছবি দেখে। মজার ব্যাপার হলো ছবির জন্য সবচেয়ে বেশি যে আগ্রহ প্রকাশ করে (কঙ্কনা) সে ছবি শুরুর মিনিট পনেরোর মধ্যেই হালকা নাকবাঁশির সুর ধরে। তবে তা এতই হালকা যে ছবির মনোযোগ কেড়ে নেয়ার মতো অবশ্যই নয়। শুধু একটাই সংকট, কঙ্কনাকে এই কথা বললেই সে মহা ক্ষেপে যায়! মাঝে মাঝে যেদিন এমন ঘটনার অবতারণা হয়, সেদিন খাবার ঘরে এক ধরনের অলিখিত কারফিউ জারি হয়ে যায়!

তেমন একটি ছবি দেখার রাত। দিনটি শুক্রবার হওয়ায় মনে হচ্ছিল কালকে ডে অফ সবার, তাই রাতে না ঘুমালেও ক্ষতি কিছু নেই। আসলে এখন যে প্রতিদিনই ডে অফ! তাই খুব খুঁজে খুঁজে রুপা এক হাসির ছবি ছেড়ে দিল। কঙ্কনা বেশ মজা করে ছবিতে ডুবে আছে! চোখ দেখে বোঝা যাচ্ছে সেখানে ঘুমের আজ জায়গা নেই। সবাই ছবির চাইতে কঙ্কনার হাসির চক্করে পতিত। অন্যদিকে ঘুমহীন কঙ্কনাকে দেখে সবার মনেই কিছু বলবার জন্য মুখ উসখুস করছে, কিন্তু বলার সাহস করছে না কেউ। কী দরকার এই লকডাউনে রমজান ছাড়াই দু-এক দিন রোজার প্র্যাকটিস করার! যদিও রমজানে রোজা রাখার জন্য এই ঘরের কারও কোনো অজুহাতে আজ অবধি পরিলক্ষিত হয়নি!

রাত তখন প্রায় একটা। কঙ্কনা রুপাকে ছবিটা স্টপ করতে বলে উঠে গেল ওয়াশ রুমে, সেখান থেকেই কিছু খাবার-টাবার আনতে নিচে রান্না ঘরে। ফিরে এসে খুব ভয়ে ভয়ে বলতে লাগল, ‘পাশের বাড়ির মিস্টার জ্যাকব খুব কাশছেন! সবাই একসাথে কঙ্কনার দিকে চোখ ঘুরিয়ে একটু শঙ্কিত ভাব প্রকাশ করতেই স্পষ্ট শুনতে পেলাম হালকা কাশির শব্দ! অবশ্য কঙ্কনা বলার আগে আমাদের কারওই ছবি দেখার কারণেই সম্ভবত বিষয়টি কর্ণগোচর হয়নি। তাই কঙ্কনার কথা শুনেই রুপা বলে উঠল, ‘সর্বনাশ! কী হবে এখন আমাদের!’ রুপার কথা শুনে মনে হলো জ্যাকব সাহেব নিশ্চিত করোনা আক্রান্ত হয়েছে এবং এখনই ইটের দেয়াল ভেদ করে সূক্ষ্ম ভাইরাস আমাদের এসে গ্রাস করবে!

রবি মায়ের কথা শুনে মাথা ঘুরিয়ে খোলা দরজার ওপাশে জ্যাকব সাহেবদের দেয়ালে চোখ বুলিয়ে লেপটা ভালো করে গায়ে জড়িয়ে নিল! কে জানে শব্দের ইথারে ভর করেই না আবার করোনা ছুটে আসে! মা আর ভাইয়ের এই ভীতসন্ত্রস্ত অবস্থা দেখে রুপা এবার একটু বিরক্ত হয়েই ছবিটা আবার চালু করে দিল! যুক্তিবাদী রুপার এই হচ্ছে সমস্যা, কখন সে ভয় পায় আর কখন তাকে ছুড়ে ফেলবে যুক্তির মারপ্যাঁচে, তা বোঝাই মুশকিল!

ছবিটা প্রায় শেষের দিকে। হঠাৎ পর্দার ফাঁক দিয়ে এম্বুলেন্সের আলো ঝিলিক মারতে লাগল। ঘরজুড়ে এক নীরবতা নেমে এল- রুপা অজান্তেই বুঝিবা রিমোট টিপে টিভি বন্ধ করে দিল। হালকা আলো-আধারি ঘরটির আবহাওয়া মুহূর্তে পরিবর্তন হয়ে গেল। কঙ্কনা শোয়া থেকে তড়িঘড়ি উঠেই পর্দার দিকে তাকিয়ে দোয়া ইউনুস পড়তে লাগল জোরে জোরে! রবি লেপ লেপটেই উঠে আসে বেডে! কামাল খুব দ্রুত বেড থেকে নেমে পর্দা সরিয়ে বাইরে জ্যাকব সাহেবের বাড়ির সামনে এম্বুলেন্সটা দেখেই রবিকে হালকা লাইটের আলো নিভিয়ে দিতে বলল। সাথে সাথে রবি লেপ গায়ে জড়িয়েই ছোট্ট সাইড টেবিলের আলো নিভিয়ে বেডে উঠে বসল। কামাল গায়ে একটা শাল জড়িয়ে জানালার পর্দা সরিয়ে দিতেই বুক কাঁপতে লাগল! সারা দেহের রক্ত বিরক্ত হয়ে ছুটোছুটি শুরু করতেই টের পেল তার বিপি বাড়ছে ক্রমশ। ঘাড়ের রগ হঠাৎই রাগ করে বসল! ব্যথার উপশম অনুভব করতেই টেবিল থেকে পানির বোতল নিয়ে ঢকঢক করে গলধঃকরণ করে পাশে মেয়ে রুপাকে পেয়ে একটু স্বস্তিবোধ করল কামাল। নিমেষেই রবি ও কঙ্কনা বেড ছেড়ে জানালার পাশে কামাল-রুপার কাছাকাছি।

নীল আলোয় চার জোড়া চোখ জানালার বাইরে মধ্যরাতের এনএইচএসের এম্বুলেন্সটা অভিমুখে! সময়ের প্রয়োজনেই এম্বুলেন্সটা যদিও স্থির দাঁড়িয়ে বরাবরের মতো, অথচ বহনকারী সদস্য-সদস্যার ব্যস্ততা অন্য সময়ের চাইতে সম্পূর্ণই আলাদা! পোশাকেও কিছুটা ভিন্নতা! যদিও তাদের পোশাক এই সময়ের জন্য পর্যাপ্ত নয়, তবুও মানবতার সেবায় ব্রত ব্রিটিশ সেবাকর্মী এতটুকু পিছপা হয়নি। স্ট্রেচার বেরিয়ে এল জ্যাকব সাহেবের বাড়ির সদর দরজা দিয়ে। সেবাকর্মী আর স্ট্রেচার নিয়ে এম্বুলেন্স ছুটে চলল! রাতের নিস্তব্ধতাকে পিছনে ফেলে সরল গলির পথ পেরিয়ে যাচ্ছে এম্বুলেন্সটা। আরও কয় জোড়া চোখ তাকে মিলিয়ে যেতে দেখল সেই মুহূর্তে রুপা, রবি, কঙ্কনা, কামাল কেউ জানতে পারল না! ভোরের অপেক্ষায় আবার রাতের নির্জনতায় প্রকৃতি ঘুমিয়ে পড়ল!

লেখক: সঙ্গীতশিল্পী, ইলফোর্ড, লন্ডন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

মতামত বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :