বিক্ষোভকারীদের দমনে হাজার হাজার সেনা পাঠানোর হুমকি ট্রাম্পের

প্রকাশ | ০২ জুন ২০২০, ১৮:০০

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকা টাইমস

যুক্তরাষ্ট্রে টানা এক সপ্তাহজুড়ে যে ধরনের সহিংস প্রতিবাদ, বিক্ষোভ চলছে তেমনটা গত কয়েক দশকে দেখা যায়নি। দেশটির ৭৫টি শহরে এখনো পর্যন্ত বিক্ষোভ হয়েছে। এর কেন্দ্রে রয়েছে পুলিশের হেফাজতে জর্জ ফ্লয়েড নামে নিরস্ত্র একজন কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তির মৃত্যু।

একজন শ্বেতাঙ্গ পুলিশ ৪৬ বছর বয়স্ক জর্জ ফ্লয়েডকে গ্রেফতারের সময় তার গলায় হাঁটু দিয়ে জোরে চেপে বসে আছেন আর ফ্লয়েডকে হাসফাস করে বলতে শোনা যাচ্ছে, 'আমি নিশ্বাস নিতে পারছি না', এমন একটি ভিডিও প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে সহিংস বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। যা সপ্তম দিনে গড়িয়েছে।

সোমবার ৪০ টি শহরে বিক্ষোভকারীদের দমাতে কারফিউ জারি ছিল। নিউইয়র্ক শহরে মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল পাঁচটা পর্যন্ত লকডাউন জারি রয়েছে। ওয়াশিংটনে আরও দুই রাতের জন্য কারফিউ বাড়ানো হয়েছে।

বড় বড় শহরগুলোতে কারফিউ জারি থাকা সত্ত্বেও দমানো যাচ্ছে না বিক্ষোভ। বিক্ষোভ দমাতে চাপের মুখে রয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এমন পটভূমিতে বিক্ষোভকারীদের হঠাতে সেনা পাঠানোর হুমকি দিয়েছেন ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, শহরের কর্তৃপক্ষ যদি বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয় অথবা ব্যবস্থা নিতে অস্বীকার করে তাহলে তিনি নিজেই তাদের হয়ে সমস্যার দ্রুত সমাধান করে দেবেন।

তিনি বলেছেন, 'আমি ভারি অস্ত্র সজ্জিত হাজার হাজার সৈন্য পাঠাচ্ছি। তারা দাঙ্গা, লুটপাট, ভাঙচুর, হামলা ও সম্পদের যথেচ্ছ ধ্বংসযজ্ঞ বন্ধ করবে।'

হোয়াইট হাউজে এক সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে ট্রাম্প বলেছেন, 'জর্জ ফ্লয়েডের নৃশংস মৃত্যুতে সকল মার্কিন নাগরিকেরা বিতৃষ্ণ হয়ে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। কিন্তু ক্ষুব্ধ জনতা তার স্মৃতিকে যেন নষ্ট না করে দেয়।'

তিনি যখন এই বক্তব্য দিচ্ছিলেন তখন ভেসে আসছিলো বিক্ষোভের শব্দ। পুলিশ সেসময় হোয়াইট হাউজের কাছেই একটি পার্কে অবস্থান নেয়া বিক্ষোভকারীদের টিয়ারগ্যাস ও রাবার বুলেট ছুড়ে সরিয়ে দেয়।

গতকাল কাছেই একটি গির্জা পুড়িয়ে দিয়েছিলো বিক্ষোভকারীরা। কারফিউ ও অন্যান্য কড়াকড়ি সত্ত্বেও বিক্ষোভ অব্যাহত থাকবে বলে ধারনা করা হচ্ছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন বিক্ষোভে মদদ দিচ্ছে 'পেশাদার নৈরাজ্যবাদী' ও ফ্যাসিবাদ বিরোধী গোষ্ঠী অ্যান্টিফা।

অ্যান্টিফা গোষ্ঠীকে তিনি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। বিক্ষোভে মদতদানকারীদের 'গুরুতর অপরাধের জন্য দণ্ডভোগ করতে হবে।'

ওদিকে জর্জ ফ্লয়েডের দেহের ময়নাতদন্তের পর তার মৃত্যুকে আনুষ্ঠানিকভাবে হত্যাকাণ্ড বলে ঘোষণা দেয়া হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের দ্বারা লুটপাট ও ভাঙচুরের ঘটনাকে কলঙ্কজনক বলে বর্ণনা করেছেন ট্রাম্প। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে গ্রেফতারের সময় গলায় অতিরিক্ত বল প্রয়োগের কারণে তার হৃদযন্ত্রে রক্তচলাচল ব্যাহত হয়ে 'হার্ট অ্যাটাক' হয়েছিল।

ঘটনার সাথে জড়িত চাকরিচ্যুত পুলিশ সদস্য ডেরেক শভিনকে নরহত্যার জন্য অভিযুক্ত করা হয়েছে। আগামী সপ্তাহে তার আদালতে যাওয়ার কথা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে গত কয়েক বছরে শ্বেতাঙ্গ পুলিশের হাতে বেশ কয়েকজন কৃষ্ণাঙ্গ নাগরিকের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এর আগেও এমন ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রে বিক্ষোভ হয়েছে। সূত্র: বিবিসি

ঢাকা টাইমস/০২জুন/একে