কুষ্টিয়ায় চিকিৎসাসেবার সমন্বয় করবে জেলা প্রশাসন

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৪ জুন ২০২০, ১১:৩৯

সারাদেশের মতোই করোনা বিপর্যস্ত কুষ্টিয়ার স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা।জেলার সরকারি হাসপাতলগুলোর জরুরি ও বর্হিবিভাগে স্বাভাবিক সময়ে যত মানুষ সেবা নিতেন সেই সংখ্যা নেমে এসেছে অর্ধেকের নিচে।রোগীদের অভিযোগ চিকিৎসকরা নানা অযুহাতে সেবা না দিয়ে ফিরিয়ে দিচ্ছেন তাদের। তবে চিকিৎসকদের দাবি, রোগীদের সেবা দেওয়ার বিষয়ে তারা শতভাগ আন্তরিক আছেন। কখনো কখনো সুরক্ষা-সরঞ্জামাদির অভাবে ফিরিয়ে দিতে হয় কাউকে কাউকে। এই অবস্থায় জেলা প্রশাসক আসলাম হোসেন সামগ্রিক বিষয়টি সমন্বয় করার আশ্বাস দিয়েছেন।

সরকারি হাসপাতালের তথ্যমতে, ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল ছাড়াও জেলার পাঁচ উপজেলায় প্রতিটিতে ৫০ শয্যাবিশিষ্ট একটি করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স রয়েছে। নানা অনিয়ম-অবহেলা সত্ত্বেও স্বাভাবিক সময়ে প্রতিদিন শয্যা সংখ্যার দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ বেশি ভর্তি রোগী ছাড়াও এসব হাসপাতালের বর্হিবিভাগ থেকে কমপক্ষে ৩৫০০ রোগী স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে থাকেন। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে এসব হাসপাতালে স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা আরও ভেঙ্গে পড়েছে বলে জানান স্থানীয়রা।

কুমারখালী উপজেলার স্থানীয় গনমাধ্যমকর্মী দীপু খন্দকার জানান, স্বাভাবিক সময়েই রোগীরা চিকিৎসকদের নানা অবহেলা নিত্যদিনের ঘটনা হিসেবে মেনে নিয়েই চিকিৎসা পাওয়ার আসায় ছুটে আসেন হাসপাতালে। এখন সেটাও বন্ধ। হাসপাতালের চিকিৎসকরা রোগীদের কাছে গিয়ে দেখছেন না, ওষুধ দিচ্ছেন না এবং হাসতাপালে আসতে চাওয়া রোগীদের মাথায় ভয় ঢুকিয়ে নিরুৎসাহিত করছেন। স্বাভাবিক সময়েই যেখানে চিকিৎসকরা সন্তোষজনক স্বাস্থ্য সেবা দেন না, এখন আবার করোনার ভয়। এ যেন ‘নাচনী বুড়ির সামনে ঢাকের বাড়ি’র মতো অবস্থা।

খোকসা উপজেলার একতারপুর গ্রাম থেকে আলসারের চিকিৎসা নিতে আসা রোগী আফসার আলীর ছেলে ফরহাদের অভিযোগ, ‘আমরা সংবাদমাধ্যমে দেখছি সরকার চিকিৎসকদের জন্য সকল প্রকার নিরাপত্তা সামগ্রীর যোগান দিয়েছেন। অথচ রোগীদের কাছে ভয়েই ভিড়ছেন না তারা। কখনো কখনো দূর থেকেই দেখে প্রেসক্রিপশন করে দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী ওধুষ বাইরের দোকান থেকে কিনতে হচ্ছে।

অভিযোগ অস্বীকার করে কুমারখালী উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আকুল উদ্দিন বলেন, ‘আমরা আমাদের সর্বোচ্চ সক্ষমতা দিয়ে রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছি।’

সব রোগীকে ওষুধ দেয়া হচ্ছে দাবি করে তিনি নিজেদের সীমাবদ্ধতা হিসেবে চিকিৎসক ও সহকারী কর্মীদের সংকটসহ নানাবিধ সমস্যার কথাও উল্লেখ করেন।

খোকসা উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তা কামরুজ্জামন সোহেল জানান, করোনার কারণে যানবাহন বন্ধ থাকায় অধিক সংখ্যক রোগীরা হাসপাতালে আসতে পারছেন না। এরপরও যারা আসছেন তাদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিচ্ছেন দাবি করে তিনি চিকিৎসক সংকটসহ চিকিৎসকদের সুরক্ষা সামগ্রীর গুণগতমান নিম্ন হওয়ায় শঙ্কার কথা জানান তিনি।

সকলকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সমন্বিত চেষ্টায় জনগনের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, ‘জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে রোগীদের হাসপতালে এসে চিকিৎসা সেবা নিতে উৎসাহ যোগানো হচ্ছে। এছাড়া চিকিৎসকরা যেন রোগীদের প্রতি আরও বেশি যত্নবান ও আন্তরিক হয় সেজন্য কাজ করে যাচ্ছি। স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা সমন্বয়ের বিষয়টি এখন নিশ্চিত না করলে যারা স্বাস্থ্যস্বেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তাদের স্বাস্থ্য রক্ষা আয়ত্বের বাইরে চলে যেতে পারে।’

ঢাকাটাইমস/৪জুন/পিএল

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :