করোনা পরীক্ষার বুথ বাড়াতে চায় ডিএনসিসি

প্রকাশ | ০৪ জুন ২০২০, ২২:৩৮

কাজী রফিক, ঢাকাটাইমস

দিন যত যাচ্ছে বাড়ছে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ। বাড়ছে মৃতের সংখ্যাও। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার যত কম সময়ের মধ্যে পরীক্ষা করা যাবে,ততই কমবে সংক্রমণ। কারণ শনাক্ত হলে রোগীকে অন্যদের থেকে বিচ্ছিন্ন করা যায় সহজে। এজন পরীক্ষার কেন্দ্র বা বুথ বাড়িয়েছে সরকার।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনও (ডিএনসিসি) সাতটি বুথ স্থাপন করেছে বিভিন্ন এলাকায়। যেগুলোর তত্ত্বাবধায়ন করছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, সহযোগিতায় করছে ব্র্যাক। কিন্তু এই বুথগুলো পর্যাপ্ত নয়। যে পরিমাণ মানুষ পরীক্ষার জন্য আসছেন তুলনায় বুথের সংখ্যা কম। তাই ডিএনসিসি বুথ বাড়ানোর কথা ভাবছে। এজন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও ব্র্যাংককে তাগাদা দিয়েছে তারা। আশা করছে শিগগির এ ব্যাপারে ইতিবাচক সাড়া মিলবে।   

ডিএনসিসি সূত্রে জানা যায়, কোনো কোনো এলাকায় কোভিড-১৯ পরীক্ষার জন্য তিনদিন আগে নাম লেখাতে হচ্ছে। কোথাও বা ভোর বেলা এসে দাঁড়াতে হচ্ছে লাইনে। সিটি করপোরেশন চাইলেও বেশি সংখ্যক নাগরিকদের নমুনা সংগ্রহ করতে পারছে না। এই অবস্থায় বুথ বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগ।

সারাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়িয়েছে। প্রতিদিন গড়ে ১০ হাজারের বেশি মানুষের কোভিড পরীক্ষা করা হচ্ছে। আর এর মধ্যে আক্রান্ত পাওয়া যাচ্ছে প্রায় ২০ শতাংশ। আক্রান্তদের প্রায় পঞ্চাশ শতাংশ ঢাকা সিটির বাসিন্দা। আর সংক্রমণের পরিমাণ দিন দিন বেড়ে চলেছে। সবকিছু মাথায় রেখে নাগরিকদের সুবিধার্থে সরকার নির্দেশিত হাসপাতালের পাশাপাশি স্থানীয় পর্যায়ে সাতটি বুথ চালু করে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন।

গত ১৪ মে থেকে বুথগুলোতে কোভিড-১৯ পরিক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ শুরু হয়। বাড়তে থাকে পরীক্ষা করতে আসা নাগরিকদের সংখ্যা।

ডিএনসিসির স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে, ডিএনসিসির নিয়ন্ত্রণে থাকা সাতটি বুথে প্রতিটিতে প্রতিদিন ২৫ থেকে ৩০ জন মানুষের নমুনা সংগ্রহ করার সক্ষমতা রয়েছে। চাইলেও এর বেশি নমুনা সংগ্রহ করার সুযোগ নেই।

ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মমিনুর রহমান মামুন ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘বুথগুলো যে পরিমাণ লোক আসে সেখান থেকে অল্প কিছু মানুষকে সেবা দিতে পারছি। আমাদের নমুনা সংগ্রহের সংখ্যাটা লিমিটেড। ফলে অনেকে ফিরে যাচ্ছেন। একটি স্কেল দেওয়া হয়েছে, সে স্কেলে বাইরে অনেক লোকজন আসছে। আমরা এখন কথা বলছি বুথ আরো বাড়ানো যায় কিনা। এখন বুথের সংখ্যা বাড়ানোর প্রয়োজন হয়ে দাঁড়িয়েছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘একেকটি বুথে প্রতিদিন ৩০টির বেশি নমুনা নেয়ার সক্ষমতা নেই। একইভাবে ল্যাবরেটরিরও একটি নির্দিষ্ট সক্ষমতা আছে, তারাও এর বাইরে যেতে পারবে না। বুধবার মেয়র মহোদয়ের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। উনিও চাচ্ছেন এবং আমিও বললাম আমাদের বুথের সংখ্যাটা বাড়ানো দরকার।’

কী পরিমাণ বুথ বাড়ানোর চেষ্টা চলছে জানতে চাইলে সিটি করপরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বলেন, ‘এটা আসলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ওপর নির্ভর করে এবং ব্র্যাকের সক্ষমতার উপর নির্ভর করে। ব্র্যাকে আমরা আরো ডিমান্ড দিয়েছিলাম। কিন্তু এই মুহূর্তে বুথ সংখ্যা বাড়ানোর মতো সক্ষমতা হয়তোবা ব্রাকের নাই। তারা আমাকে বলেছিল যদি তারা বুথ সংখ্যা বাড়াতে পারে তাহলে আমাকে তারা জানাবেন। যেহেতু আমাদের নিজস্ব নেই, ব্র্যাক এর উপর নির্ভর করতে হচ্ছে। সেজন্য আমি মনে করি আমাদের আরও উদ্যোগ নেয়া উচিত। আমাদের সিটি করপোরেশনের থেকে উদ্যোগ আছে। এখন ব্র্যাক এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের যদি সক্ষমতা থাকে, সুযোগ থাকে তাহলে আমার মনে হয় যে বুথ আরো বাড়ানো উচিত।’

এর আগে গত ১৪ মে ডিএনসিসির সাতটি এলাকায় কোভিড-১৯ পরিক্ষার জন্য সাতটি বুথ স্থাপন করা হয়। বুথগুলো হলো- উত্তরা ৬ নম্বর সেক্টরের উত্তরা কমিউনিটি সেন্টার, মিরপুর ১৩ নম্বরের ৪ নম্বর ওয়ার্ড কমিউনিটি সেন্টার, মগবাজারের মধুবাগের আসাদুজ্জামান খান কামাল কমিউনিটি সেন্টার, মিরপুর মাজার রোডে মিরপুর বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসোধ সংলগ্ন ১০ নম্বর ওয়ার্ড কমিউনিটি সেন্টার, মোহাম্মদপুরের সূচনা কমিউনিটি সেন্টার, দক্ষিণখানের আজিমপুরে ৩২৫ হাজী ইসমাইল দেওয়ান রোড এবং উত্তরখান জেনারেল হাসপাতাল। প্রতিদিন সকালে ৯ টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত এসব বুথে কোভিড-১৯ পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে।

(ঢাকাটাইমস/৪মে/কারই/এইচএফ)