চেয়ারম্যানের স্বেচ্ছাচারিতায় কোটি টাকার প্রকল্পে জটিলতা

মানিকগঞ্জের দৌলতপুরে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম রাজার স্বেচ্ছাচারিতায় ভেস্তে যেতে বসেছে প্রায় দেড় কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ। ২০১৯-২০ অর্থবছরে এই উপজেলায় চার কিস্তিতে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) এক কোটি ১৯ লাখ ২৭ হাজার টাকা বরাদ্দ পাওয়া যায়। যথাসময়ে প্রকল্প গ্রহণ ও চুড়ান্ত না করায় সরকারের উন্নয়নমূলক কাজ বাস্তবায়নে বিলম্বসহ নানাবিধ জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে।

গত ৩১ মে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব উপজেলা প্রকৌশলী ফজুলর রহমান তালুকদার মানিকগঞ্জ স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালককে চিঠির মাধ্যমে বিষয়টি জানান।

উপজেলা পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নে ১৩ সদস্যর একটি যাচাই বাছাই কমিটি গঠিত হয়। ওই কমিটিতে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সভাপতি ও উপজেলা প্রকৌশলী সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। কমিটিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তা ও প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা সদস্য হিসেবে রয়েছেন। কমিটি যাচাই বাছাই শেষে মাসিক সমন্বয়সভায় তা উত্থাপন করে প্রকল্পগুলো অনুমোদন করবে।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী ফজলুর রহমান তালুকদার জানান, কমিটির সভা না করেই উপজেলা চেয়ারম্যান উপজেলা থেকে প্রকল্পগুলো সংগ্রহ করে গত ১৬ মার্চ কাগজ কলমে একটি সভা দেখান। কোনো ধরনের রেজুলেশন ছাড়াই তিনি একটি স্কিম তালিকা প্রস্তুত করেন। কিন্তু সেই স্কিম তিনি চূড়ান্ত করেননি। তিনি বারবার স্কিম কর্তন এবং সংযুক্ত করতে থাকেন। গত ১৩ মে স্থানীয় সংসদ সদস্য উপজেলায় এসে চেয়ারম্যানকে দ্রুত স্কিম বাস্তবায়ন করতে নির্দেশ দেন। এরপরই ১৪ মে প্রকল্প যাচাই বাছাই কমিটির সভা হয়। এর আগে কাগজে-কলমে দেখানো ১৬ মার্চের সভাকে কার্যকর করতে পুরনো তারিখের কাগজপত্রে চেয়ারম্যানদের স্বাক্ষর করতে বাধ্য করেন।

তিনি বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যানকে স্কিম বাছাই ও অনুমোদনে বারবার অনুরোধ সত্ত্বেও তিনি কোনো গুরুত্ব দেননি। গত ১৯ মার্চ মাসিক সমন্বয় সভায় তিনি এডিপি প্রকল্প যাচাই-বাছাই বা অনুমোদন সংশ্লিষ্ট কোনো বিষয় সভায় উত্থাপন করতে নিষেধ করেন। সেই সঙ্গে ওই সভায় তিনি এডিপি বিষয়ে কোনো কথাই বলেননি। তার এমন স্বেচ্ছাচারিতার কারণেই এই অর্থবছরের এডিপির প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়নি।

উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম রাজার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয় নিয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি। তিনি বলেন, এ বিষয়ে পরে বক্তব্য দেয়া হবে।

দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাসলিমা মোস্তারী জানান, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) সভাপতি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। এ ব্যাপারে অফিসিয়ালি আমাকে কিছুই জানানো হয়নি।

মানিকগঞ্জ স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক ফৌজিয়া খান বলেন, উপজেলা প্রকৌশলীর এক চিঠির মাধ্যমে বিষয়টি জেনেছেন। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

(ঢাকাটাইমস/৫জুন/কেএম)