দুই বন্ধু যেভাবে শত্রু হলেন
প্রকাশ | ০৬ জুন ২০২০, ১০:২২
বলিউড ভাইজান সালমান খানের সঙ্গে একটি কথা ব্যাপকভাবে প্রচলিত আছে। তিনি নাকি ‘বড্ড বেশি ইমোশনাল’। বন্ধুত্ব করতে হলে মন দিয়ে করেন, আবার কারও সঙ্গে যদি একবার ঝামেলা বেধে যায়, তবে তার রেশ থাকে আজীবন। এমনই এক ঘটনা ঘটেছিল সালমান খান ও জন আব্রাহামের মধ্যে। একটা সময় তাদের গভীর বন্ধুত্ব ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে তাতে যে চিড় ধরে, সেই রেশ এখনও রয়েছে।
২০০৬ সালে ‘বাবুল’ ছবির সেট থেকে সালমান ও জন আব্রাহামের বন্ধুত্ব শুরু হয়েছিল। দুজনেই ফিটনেস ফ্রিক। দুজনের শার্টলেস লুক দেখতে ভক্তরা পাগল। ওই ছবির শুটিং চলাকালীন হঠাৎ করেই সালমানের বেশ মনে ধরে জনকে। দুজনের চিন্তাভাবনাতেও ছিল বিস্তর মিল। কাজেই জনও বাড়িয়ে দেন বন্ধুত্বের হাত।
সে সময় সালমান খান ‘রকস্টার’ নামক এক আন্তর্জাতিক ট্যুরে যাচ্ছিলেন। তিনি জনকে অনুরোধ করেন সেই ট্যুরে তার সঙ্গী হতে। তারকাখচিত ট্যুর। তাই রাজি হয়ে যান জন। একসঙ্গে দুজনে পারফর্মও করলেন। সব ঠিকঠাকই চলছিল। ঠিক এমন সময়েই পয়সাকড়ি নিয়ে জনের সঙ্গে বিবাদ বাধে ভাইজানের। ওই শোয়ের জন্য জন আকাশছোঁয়া পারিশ্রমিক দাবি করলে সালমান নিষেধ করেন। কিন্তু জন তাতে কর্ণপাত করেননি।
এখানেই শেষ নয়য়। এতদিন যে রকস্টার শোয়ের প্রধান আকর্ষণ ছিলেন সালমান, সেখানে রাতারাতি জনপ্রিয়তা পেতে থাকেন জন। কানাঘুষা শোনা যায়, সালমানের থেকেও নাকি সেবার দর্শক পছন্দ করেন জনকে। কথাটা কানে যায় সালমানের। খারাপ লাগে তার। তিনি ভেবেছিলেন, যেহেতু জনকে তিনি নিয়ে গেছেন তাই সারা ট্যুরে জন তার সঙ্গেই থাকবেন। কিন্তু হয়েছিল উল্টোটা।ভালো করেই স্টারডম উপভোগ করছিলেন জন। থাকছিলেন নিজের মতো। তাতেই খারাপ লাগা দ্বিগুণ হয় সালমানের।
সেখান থেকেই সম্পর্কে চিড় শুরু। কথা ছিল, ফিরে এসে ‘বাবুল’ ছবির দ্বিতীয় অংশের শুটিং করবেন তারা। কিন্তু তাদের দুজনের সম্পর্ক এমন খারাপ জায়গায় পৌঁছায় যে, কথা বলাই বন্ধ হয়ে যায়। যদিও মেগাস্টার অমিতাভ বচ্চনের মধ্যস্থতায় দুজনে বাকি শুটিং শেষ করেন। কিন্তু বরফ গলে না। এদিকে ‘বাবুল’ বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়ে। ভাইজান জনসমক্ষে বলেছিলেন, ছবির দ্বিতীয় অংশ খুব একটা মনোগ্রাহী নয়। তাই হিট হয়নি। আর দ্বিতীয় অংশে জনের রোল বেশি ছিল। তাই ভাইজানের ইঙ্গিত যে কার প্রতি ছিল, তা বোঝাই যায়।
ঠিক এই সময়েই সালমানের জীবনে আসেন ক্যাটরিনা কাইফ। জনের উপর তিনিও রুষ্ট ছিলেন। কারণ, ক্যাটরিনার হিন্দি উচ্চারণ খারাপ থাকার কারণে তার সঙ্গে একটি ছবিতে কাজ করতে চাননি জন। দুদিন শুটিং শুরু হয়ে গেলেও সেই ছবিতে থেকে বাদ পড়েন ক্যাটরিনা। তাতে আরও রেগে যান সালমান। ঠিক সময়ে এর বদলা নিতে বলেন ক্যাটকে। এর কয়েক বছর পর ক্যাটরিনার যখন বেশ নাম হয়েছে, তার কাছে একটি ছবির অফার যায়। নাম ‘নিউইয়র্ক’। সহ অভিনেতা জন।
সিনেমাটি করবেন কী না, সে বিষয়ে যখন ক্যাটরিনা দোটানায়। ঠিক সেই সময়েই সালমান তাকে ছবিটি করতে বলেন। যে জন তার সঙ্গে একদিন ছবি করতে অস্বীকার করেছিলেন, তার সঙ্গেই আবার কাজ করা যে পরোক্ষভাবে ক্যাটরিনার জয়, সে কথা প্রেমিকাকে বুঝিয়েছিলেন সালমান। সিনেমাটি বক্স অফিসে চূড়ান্ত হিট হয়। কিন্তু সালমানের বিশ্বাস ভাঙে আরও একবার। কারণ, জন-ক্যাটরিনার প্রেম নিয়ে তখন সরগরম মিডিয়া। প্রকাশ্যে আসে তাদের এসএমএস আদানপ্রদান এবং কললিস্টের লম্বা ফিরিস্তি।
ওই ঘটনার পর ক্ষোভে পাগল হয়ে যান সালমান। সে সময় ভাইজানের সঙ্গেই লিভইন করতেন ক্যাটরিনা। তার সমস্ত জিনিসপত্র নিজের বাড়ি থেকে বের করে দেন সালমান। ব্রেক আপ হয়ে যায় তাদের। তারপর কেটে গেছে অনেক বছর। সম্পর্কে থাকার কথা জন বা ক্যাটরিনা কেউই স্বীকার করেননি। তবে সালমান এবং জনের সম্পর্কের তিক্ততা আজও অটুট।
ঢাকাটাইমস/০৬জুন/এএইচ