মাথায় কম চুল করোনা ঝুঁকি বাড়ায়: মার্কিন গবেষণা

প্রকাশ | ০৬ জুন ২০২০, ১৪:১৫ | আপডেট: ০৬ জুন ২০২০, ১৪:৩৯

ঢাকা টাইমস ডেস্ক

মাথায় চুল না থাকলে বা কম থাকলে কোভিড ১৯-এ আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি বলেই দাবি করেছে একটি নতুন গবেষণা। এই নতুন রিস্ক ফ্যাক্টরের নাম দেওয়া হয়েছে ‘গ্যাব্রিন সাইন’। করোনা আক্রান্ত হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ডাক্তার ডক্টর ফ্র্যাঙ্ক গ্যাব্রিনের মৃত্যুর পরে এই নাম দেওয়া হয়েছে। গ্যাব্রিনের মাথাতেও চুল ছিল না।

এই গবেষনার প্রধান ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর কার্লোস ওয়াম্বিয়ার দ্য টেলিগ্রাফকে একথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, মাথায় চুল কম থাকলে সংক্রমণের সম্ভাবনা ও তার প্রভাব অনেক বেশি বেড়ে যায়। খবর টেলিগ্রাফ ও ইন্ডিপেন্ডেন্টের।

জানুয়ারি মাসে চীনের উহানে করোনা সংক্রমণ ছড়ানোর পর থেকে তথ্য নিয়ে গবেষণা করে দেখা গিয়েছে, মেয়েদের থেকে ছেলেদের মধ্যে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে অনেক বেশি। তার অন্যতম কারণ হল জীবনযাত্রার ধরনে পার্থক্য, ধূমপানের প্রবণতা, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা প্রভৃতি।

সম্প্রতি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, পুরুষদের শরীরে নিঃসৃত হওয়া হরমোন এন্ড্রোজেন শুধুমাত্র চুল পড়াতে প্রধান ভূমিকা পালন করে না, করোনাভাইরাসের ক্ষমতাও বাড়িয়ে দেয়।

চুল পড়া কমানোর জন্য ডাক্তাররা সাধারণত এই হরমোনের প্রভাব কমানোর চেষ্টা করেন। এই একই পদ্ধতিতে ভাইরাসের প্রভাব কিছুটা হলেও কমানো যায় বলে মনে করছেন গবেষকরা। প্রফেসর ওয়াম্বিয়ার জানিয়েছেন, 'আমাদের ধারণা, পুরুষদের এন্ড্রোজেন হরমোনের ফলেই অনেক বেশি সংক্রমণ পুরুষদের শরীরে ছড়ায়'। তাই ইতিমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রে চুল পড়া কমানোর জন্য যে ওষুধ ব্যবহার করা হয়, সেই ওষুধ নিয়ে করোনা সংক্রমণ কমানো যায় কিনা তার গবেষণা শুরু হয়েছে।

একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, স্পেনের মাদ্রিদের তিনটি হাসপাতালে কোভিড আক্রান্ত হয়ে যারা ভর্তি রয়েছেন, তাদের মধ্যে ৭৯ শতাংশ পুরুষের মাথায় চুল নেই বা কম আছে।

আমেরিকান অ্যাকাডেমি অফ ডারামাটোলজিতে প্রকাশিত একটি জার্নালে বলা হয়েছে, ১২২ জন রোগীর মধ্যে গবেষণা করে দেখা গিয়েছে, তাদের মধ্যে ৭১ শতাংশ রোগীর মাথায় চুল নেই। যাদের চুল কম, তাদের শরীরে এই ভাইরাসের প্রভাব অনেক বেশি দেখা যাচ্ছে বলেও দাবি করেছে এই গবেষণা।

গবেষণায় বলা হয়েছে, পুরুষদের শরীরে প্রস্টেট ক্যানসারের সম্ভাবনা বাড়াতে প্রধান ভূমিকা নেয় এই এন্ড্রোজেন। কারণ ক্যানসারের বৃদ্ধির জন্য যে এনজাইমের দরকার হয়, তা এই হরমোন থেকে বেরয়। এই এনজাইমের নাম টিএমপিআরএসএস২। এই এনজাইমই শরীরের মধ্যে করোনাভাইরাসের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে বলে দাবি গবেষকদের। আর সেই কারণেই কোভিড আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যার মধ্যে সিংহভাগই পুরুষরা বলে দাবি করা হয়েছে।

এই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত অনেকেই অবশ্য স্বীকার করেছেন, এখন প্রাথমিক স্তরেই এই গবেষণা রয়েছে। ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষার মধ্যেই তা সীমাবদ্ধ রয়েছে। তবে প্রাথমিকভাবে যে ফল তারা পাচ্ছেন, তাতে করোনা সংক্রমণের একটা নতুন দিক খুলে যেতে পারে। ফলে সংক্রমণ প্রতিরোধের ক্ষেত্রেও অনেকটা সুবিধা হতে পারে বলে দাবি তাদের।

ঢাকা টাইমস/০৬জুন/একে