করোনাকালে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে 'ভয়ংকর' প্রতারণা, সর্বস্বান্ত শিক্ষিতরাও

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ০৭ জুন ২০২০, ১৬:৩৯ | প্রকাশিত : ০৭ জুন ২০২০, ১৫:৫৪

করোনাকালে মোবাইল ব্যাংকিং সেবার নামে এজেন্ট বা ব্যাংক ম্যানেজারের মোবাইল নম্বর ক্লোন করে ঘরবন্দি সাধারণ মানুষের সঙ্গে ভয়ংকর প্রতারণা করছিল একটি চক্র। চক্রটি প্রায় এককোটি টাকা হাতিয়েও নিয়েছে। এ চক্রের খপ্পরে পড়ে যারা সর্বস্বান্ত হয়েছেন তাদের মধ্যে শুধু লেখাপড়া কম জানা মানুষই যে আছে তা নয়, শিক্ষিত অনেক গ্রাহকও ফাঁদে পা দিয়েছেন।

একটি ব্যাংকের পক্ষ থেকে মামলার পর ঘটনার তদন্তে নামে র‌্যাব। শনিবার দিবাগত রাতে রাজধানী এবং ফরিদপুরের ভাঙ্গায় অভিযান চালিয়ে এই চক্রের ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

র‌্যাব-২ ও র‌্যাব-৮ যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করে। গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে প্রতারণার ১৪ লাখ টাকা ও মোবাইলসহ বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিকস ডিভাইস উদ্ধার করা হয়েছে।

র‌্যাব জানায়, চক্রটি পাঁচটি দলে বিভক্ত হয়ে অপরাধ কার্যক্রম চালাতো। এর মধ্যে রয়েছে হান্টার টিম, স্পুফিং বা নম্বর ক্লোন টিম, ফেক কাস্টমার কেয়ার, টাকা উত্তোলন ও ওয়াচম্যান টিম।

রবিবার দুপুরে র‌্যাবের পক্ষ থেকে অনলাইন ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানানো হয়। র‌্যাব জানায়, অনলাইন মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রতারণার শিকার হচ্ছে অনেকে। বিশেষ করে করোনাকালে ঘরবন্দি মানুষ বেশি প্রতারিত হচ্ছে। রাজধানী ছাড়াও দেশের বিভিন্ন জেলায় এ ধরনের উপদ্রব বেড়েছে। যারা ব্যাংকের ঊর্ধ্বতনদের নম্বর ক্লোন করে গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা করছিল। একজন মাস্টার মাইন্ড পুরো টিমটি নিয়ন্ত্রণ করত বলেও প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।

এই এলিট ফোর্সটি আরও জানায়, হান্টার টিম প্রথমে গ্রাহকের মোবাইল নম্বর, ডেবিট-ক্রেডিট কার্ডের তথ্য জোগাড় করে। এরপর দ্বিতীয় ধাপে বিকাশ বা নগদ বা যেকোনো মোবাইল ব্যাংকিংয়ের হেল্পলাইন নম্বর ক্লোনিং করে। এমনকি ব্যাংকের ঊর্ধ্বতনদের নম্বর ক্লোন করে তারা। এজন্য নম্বর প্রতি একহাজার টাকা করে দেওয়া হয়। পরে কাস্টমার কেয়ার খুলে (১০ জনের টিম) বসে গ্রাহকদের ফোন দেয়। এর আগে গ্রাহকের মোবাইলে পিন বা কোড নম্বর পাঠিয়ে বলা হয় দ্রুত কোড দেন, না হলে আপনার মোবাইল অ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়ে যাবে। যে কোডটি পাঠাবে সেই ‘ফাঁদে’পড়ল। প্রতারকরা ব্যাংক ম্যানেজার বা এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের নম্বর ক্লোন করে ফোন দেয় বলে অনেক গ্রাহক তাদের খপ্পড়ে পড়ে যান।

গ্রাহকের টাকা পাওয়ার পর দ্রুত সময়ের মধ্যে সেই টাকা উত্তোলন করে ফেলা হয়। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে এসব টাকা তোলে। যেমন- ঢাকার টাকা সিলেটে বা চট্টগ্রামে পাঠায়। আবার অনেক সময় টাকা তোলা না গেলে- টিভি, ফ্রিজ, এসি বা জামা কাপড় কিনে ফেলা হয়।

এতো সতকর্তার পরও এগুলো বন্ধ হচ্ছে না জানিয়ে র‌্যাব জানায়, বিভিন্ন ছোট ছোট দোকান- যেমন পনের দোকান, সাইকেলের দোকান থেকে তাদের তথ্য ফাঁস দেওয়া হয়। এছাড়া তারা ফরিদপুরের বিভিন্ন নদীর পাড়ে ছোট ছোট ঘর তৈরি করে রাত জেগে এসব কাজ করে। আবার লটারির ফাঁদে ফেলে অনেক সময় সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে থাকে।

গ্রেপ্তার ১৩ জন এর আগে কখনও ধরা পড়েনি জানিয়ে র‍্যাব জানান, তারা এর আগে গ্রেপ্তার হয়নি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছে ২ মাসে এক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তাদের সঙ্গে ব্যাংকের কেউ জড়িত আছে কি-না তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

ফরিদপুরের ভাঙ্গা এলাকায় আরও কয়েকটি গ্রুপ এই ধরনের কাজ করছে বলেও ব্রিফিংয়ে জানানো হয়। তাদের ধরতে র‍্যাব কাজ করছে।

ঢাকাটাইমস/০৭/এসএস/ইএস

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করে রেলকে গড়ে তুলতে হবে: রেলমন্ত্রী

ইভ্যালির রাসেল-শামিমার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

স্বাস্থ্যমন্ত্রীর আশ্বাসে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার

জিম্মি নাবিকদের মুক্তির আলোচনা অনেকদূর এগিয়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ডিএনসিসি কার্যালয় সরানোর মধ্য দিয়ে কারওয়ান বাজার স্থানান্তরের প্রক্রিয়া শুরু 

বিএসএমএমইউ উপাচার্যের দায়িত্ব নিলেন দীন মোহাম্মদ, বললেন ‘কোনো অন্যায় আবদার শুনব না’

সাত বিভাগে ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি হতে পারে

বাংলাদেশে মুক্ত গণতন্ত্র বাস্তবায়নে সমর্থন অব্যাহত থাকবে: যুক্তরাষ্ট্র

সীমান্তে নিহত দুই বাংলাদেশির লাশ ফেরত দিলো বিএসএফ

ট্রেনে ঈদযাত্রা: পঞ্চম দিনের মতো অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :