সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে কাপাসিয়ায় ঋণের কিস্তি আদায়
গাজীপুরের কাপাসিয়ায় ক্ষুদ্র ঋণ আদায় বন্ধ রাখার সরকারি নির্দেশ অমান্য করে রবিবার থেকে গ্রাহকদের কাছ থেকে কিস্তি আদায় শুরু হয়েছে।চলতি জুন মাসের ২ তারিখ কাপাসিয়ার ইউএনও এ সংক্রান্ত এক আদেশে ক্ষুদ্র ঋণ কার্যক্রম পরিচালনাকারী সব এনজিও কর্তৃপক্ষকে তাদের বিতরণকৃত ঋণের কিস্তি আদায় পরবর্তী আদেশ না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন।
সম্প্রতি করোনা ভাইরাসের ব্যাপক সংক্রমণ রোধ করতে এবং অসহায় দরিদ্র প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর উপার্জনের পথ সীমিত হয়ে যাওয়ায় বিভিন্ন মহলের দাবির প্রেক্ষিতে কাপাসিয়া ইউএনও এক আদেশে ক্ষুদ্র ঋণের কিস্তি আদায় বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গ্রামীণ ব্যাংকের সহজ ঋণের এক নারী গ্রাহক জানান, তিনি গ্রামীণ ব্যাংক থেকে ৮০ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। প্রতি সপ্তাহে দুই হাজার টাকা কিস্তি ও ৫০ টাকা সঞ্চয় জমা দিতে হয়। করোনাজনিত সংকটকালে দীর্ঘদিন ধরে তার উপার্জনের সব পথ প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, বর্তমান সময়ে পরিবারের লোকজনের ন্যূনতম চাহিদা মিটানো যেখানে সম্ভব হচ্ছেনা, সেখানে ঋণের কিস্তি দেয়াটা খুবই কষ্টসাধ্য ব্যাপার। তারপরেও যখন ব্যাংকের লোকজন এসে খবর পাঠিয়েছে তখন আশপাশের লোকজনের কাছ থেকে ধার করে কিস্তির টাকা নিয়ে হাজির হয়েছি। পরবতর্তী সপ্তাহের কিস্তি কিভাবে দিবেন তা এখনো তার জানা নেই।
এই ঋণগ্রহীতা জানান, এ অবস্থা শুধু তার একার নয়, প্রায় সবারই এখন করুণ অবস্থা। কাপাসিয়ায় গ্রামীণ ব্যাংকের মতো ‘টিএমএসএস’, ‘সামাজিক সেবা’ সহ আরো বেশ কিছু এনজিও তাদের গ্রাহকদের কাছ থেকে বিতরণকৃত ঋণের কিস্তি আদায় করছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে গ্রামীণ ব্যাংক কাপাসিয়া শাখার ব্যবস্থাপক আকরাম হোসেন জানান, তাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ রবিবার থেকে ঋণের কিস্তি আদায়ের নির্দেশ দিয়েছেন। কাপাসিয়ায় ৭৫টি কেন্দ্রের অধীনে প্রায় চার হাজার গ্রাহক রয়েছেন। রবিবার উপজেলার ১৩টি কেন্দ্রের গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রায় শতভাগ কিস্তি আদায় সম্ভব হয়েছে।
সরকারি নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, এখনো তার কাছে এ ধরণের কোনো চিঠি আসেনি।
এ বিষয়ে ইউএনও ইসমত আরা বলেন, এই মুহূর্তে জোর জুলুম করে কারো কাছ থেকে ক্ষুদ্র ঋণের কিস্তি আদায় করা যাবে না। যদি স্বেচ্ছায় কেউ দিতে চায় তবে তা আদায় করা যাবে। অনেকেই চাপ সৃষ্টি করে কিস্তি আদায়ের অভিযোগ করেছিল। মোবাইল ফোনে তিনি সেসব এনজিও কর্তৃপক্ষকে নিষেধ করলে তারা কথামতো চলে গেছেন বলেও তিনি জানান।
(ঢাকাটাইমস/৮জুন/কেএম)