খানসামায় আতঙ্ক ছড়াচ্ছে এলএসডি ভাইরাস

নুরনবী ইসলাম, খানসামা (দিনাজপুর) ,ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১০ জুন ২০২০, ১২:১৩

করোনার ভয়াবহতার মধ্যেই আতঙ্ক ছড়াছে এলএসডি বা লাম্পি স্কিন রোগের ভাইরাস। চামড়ার রোগ সৃষ্টিকারী এই ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের গবাধিপশু।মৃত্যুর হার খুবই কম হলেও পশুর স্বাস্থ্যহানীর কারণে অর্থনৈতিক ধসের শঙ্কায় কাটছে কৃষক ও খামারিদের। দেশের অনেক এলাকার মতো দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার কৃষক ও খামারিদের অবস্থাো প্রায় একই। উপজেলায় গবাদিপশুকে বাঁচাতে দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছেন উপজেলা প্রাণী সম্পদ কার্যালয়ের চিকিৎসকরাও।

উপজেলা প্রাণীসম্পদ অফিস সূত্রে জানা যায়, লাম্পি স্কিন রোগটি গবাদিপশুর নুতন একটি রোগ যার প্রতিষেধক এখনো আবিষ্কৃত হয়নি। এ রোগে আক্রান্ত পশুর প্রথমে সামনের পা ফুলে যায়। তাপমাত্রা বেড়ে গিয়ে শরীরে বড় বড় গুটি দেখা দেয়। এক সপ্তাহ পরে গুটিগুলো গলে গিয়ে স্থানে স্থানে ঘা হয়। ঘা থেকে অনবরত তরল পদার্থ নিঃসৃত হতে থাকে। কখনো সিনার নিচে বড় থলির মতো হয়ে পানি জমে থাকে। তখন কিছুই খেতে চায় না বলে গবাদিপশু শুকিয়ে যায়। সংক্রমণ বেশি হলে পশু মারাও যেতে পারে। তবে এতে মৃত্যুহার খুবই কম।

মঙ্গলবার উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় বাড়িতেই লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত একাধিক পশু রয়েছে। খামারপাড়া ইউনিয়নের ভান্ডারদহ গ্রামে সহিদুল ইসলাম ও আইনুল ইসলামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় তাদের একটি করে বিদেশি জাতের গাভি ও বাছুর এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে। তারা সর্বদাই প্রাণীসম্পদ অফিসের চিকিৎসকদের সাথে যোগাযোগ করে গাভী দুটির যত্ন নিচ্ছেন। গাভি থাকার ঘরগুলো পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করছেন। এছাড়াও উপজেলার ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের মিলন চৌধুরীর ২টি, হাসিমপুর গ্রামের সহিদের ২টি, চকসাকোয়া গ্রামের একরামুল ইসলামের ১টি ও সাইদুলের ৩টি, গোয়ালডিহি গ্রামের আব্দুল গফুরের ২ টি গরু এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে।

পল্লী চিকিৎসক আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, তার বাড়িসহ আশেপাশে বাড়ির শতাধিক গরু এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে। প্রতিদিন সকাল হতে রাত পর্যন্ত মানুষের বাড়ি বাড়ি যেয়ে আক্তান্ত গরুর চিকিৎসা প্রদান করে যাচ্ছে।

পশু চিকিৎসক সালমা বেগম জানান, তারা গবাদিপশুর চিকিৎসা করতে হিমসিম খাচ্ছেন। উপজেলায় এমন কোনো গ্রাম নেই যেখানে লাম্পি স্কিন রোগ দেখা দেয়নি। উপজেলা প্রাণীসম্পদ অফিসের ভেটেররিনারি সার্জনের পরামর্শক্রমে তারা আক্তান্ত পশুর চিকিৎসা প্রদান করছে।

উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ও ভেটেরিনারি সার্জন ডা. বিপুল চক্রবর্তী বলেন, ল্যাম্পি স্কিন রোগটি বিশেষ করে মশার কাপড়ে ও আক্রান্ত প্রাণীর লালা হতে ছড়ায়। এর এখনো কোন ভ্যাকসিন আবিষ্কৃত হয় নি। তাই গরুর মালিকদের গোয়াল ঘর পরিষ্কার করা ও মশা মাছি নিয়ন্ত্রণ করতে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। এছাড়াও অফিসের পাশাপাশি গরু মালিকদের বাড়ি বাড়ি যেয়ে আক্রান্ত গরুর অ্যান্টিবায়োটিক ইঞ্জেকশান, ব্যাথানাশক ট্যাবলেট ও অ্যান্টিহিস্টামিন দিয়ে চিকিৎসা চলছে। তবে এ রোগে গরুর মৃত্যুর হার একেবারেই কম।

ঢাকাটইমস/১০ জুন/পিএল

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :