জনি হত্যা: এসআই জাহিদের জামিন নামঞ্জুর
রাজধানীতে পুলিশ হেফাজতে জনি নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা মামলায় পল্লবী থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এসআই) জাহিদুর রহমান জাহিদের জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেছে মহানগর দায়রা জজের ভার্চুয়াল আদালত।
বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজের ভার্চুয়াল আদালতের বিচারক কে এম ইমরুল কায়েশ জামিন নামঞ্জুরের এ আদেশ দেন।
আসামি পক্ষে আইনজীবী ফারুক আহমেদ জামিনের আবেদনের উপর শুনানি করেন।
মামলাটি বর্তমানে যুক্তি উপস্থাপনের পর্যায়ে রয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষে যুক্তি উপস্থপন শেষে আসামি পক্ষের যুক্তিতর্ক চলমান অবস্থায় করোনা ভাইরাসের জন্য আদালত বন্ধ হওয়ায় বিচার থেমে যায়। তাই নিয়মিত আদালত চালু হওয়ার মাসখানের মধ্যেই মামলাটিতে রায় হতে পারে বলে জানা গেছে।
মামলার অপর আসামিরা হলেন, পল্লবী থানার এসআই রাশেদুল ইসলাম ও এসআই কামরুজ্জামান মিন্টু এবং পুলিশের সোর্স রাশেদ ও সুমন। আসামিদের মধ্যে এসআই জাহিদ ও সুমন কারাগারে এবং অপর আসামিরা জামিনে আছেন।
মামলাটিতে ২০১৬ সালের ১৭ এপ্রিল আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করেছে আদালত। পরে হাইকোর্টে আসামিদের আবেদনে দীর্ঘদিন মামলাটি বিচার বন্ধ ছিল।
পুলিশ হেফাজতে নির্যাতন করে মারার অভিযোগে ২০১৪ সালের ৭ আগস্ট নিহতের ভাই ইমতিয়াজ হোসেন রকি এ মামলা দায়ের করেন।
মামলার অভিযোগে বলা, ২০১৪ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাতে পল্লবী থানার ইরানি ক্যাম্পে জনৈক বিল্লালের গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান ছিল। নিহত জনি, তার ভাই মামলার বাদী রকিসহ অন্যান্য সাক্ষীরা সে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। রাত ২টার দিকে পুলিশের সোর্স এ মামলার ৭ নম্বর আসামি সুমন মদ খেয়ে স্টেজে উঠে মেয়েদের উত্যক্ত করছিলেন। জনি তাকে প্রথমে স্টেজ থেকে নামিয়ে দেন।
কিন্তু দ্বিতীয়বার সুমন একই কাজ করলে সুমনের সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে জনি সুমনকে থাপ্পর দিলে সে আধা ঘণ্টা পর এসআই জাহিদসহ ২৫/২৬ জন পুলিশ নিয়ে বিয়ে বাড়িতে এসে ভাংচুর করে নিহত জনি, রকিসহ বেশ কয়েকজনকে ধরে নিয়ে যায়। এরপর এসআই জাহিদসহ অপর আসামিরা তাদের পল্লবী থানা হাজতে হকিস্টিক ও ক্রিকেটের স্ট্যাম্প দিয়ে বেদম প্রহার করেন। জাহিদ জনির বুকের ওপর চড়ে লাফালাফি করেন। জনি এ সময় একটু পানি খেতে চাইলে জাহিদ তার মুখে থুথু ছুরে মারে। নির্যাতনে মামলার বাদী রকি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। তার বড় ভাই জনিকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ঢাকা ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরহ ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পরে পুলিশি নির্যাতনে মৃত্যুর ঘটনা ধামাচাপা দিতে ইরানি ক্যাম্প ও রহমত ক্যাম্পের মধ্যে মারামারির মিথ্যা কাহিনী দেখিয়ে জনি নিহত হয় বলে দেখানো হয়।
এর আগে ঝুট ব্যবসায়ী সুজনকে পুলিশ হেফাজতে একইভাবে মৃত্যুর ঘটনার আরেক মামলাতেও আসামি এসআই জাহিদুর রহমান জাহিদ।
ঢাকাটাইমস/১১জুন/জেআর/ইএস)