‘বাজেটে ধনীর সেবা, শ্রমজীবী মানুষ উপেক্ষিত’

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৩ জুন ২০২০, ২৩:৩৩

২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটে দেশের শ্রমজীবী মানুষের দাবির কোনো প্রতিফলন হয়নি বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতন ও সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব বুলবুল। তারা প্রস্তাবিত বাজেট সংসদে পাশের আগেই শ্রমিকদের দাবির আলোকে সংশোধনের দাবি জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন।

ধনীর জন্য প্রণিত এই বাজেটে শ্রমজীবী মানুষকে উপেক্ষা করা হয়েছে এমন মন্তব্য করে শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানে এক সংবাদ বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, ২০২০-২১ সালের বাজেটের ১ লাখ ২৮ হাজার ৮৭৩ কোটি টাকা ভ্যাট থেকে আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে অর্থাৎ রাজস্ব অয়ের প্রধান অংশের যোগান দেবে দেশের সাধারণ শ্রমজীবী মানুষ। অথচ বাজেটে তারাই দ্ইু দিক থেকে চরম অবহেলা আর উপেক্ষার শিকার হয়েছে।

একদিকে ৬ কোটি ৩৫ লক্ষ শ্রমজীবী মানুষের কর্মসংস্থান, কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্য নিরাপত্তার নিশ্চয়তাসহ স্বীকৃত ন্যূনতম অধিকার সমূহ কার্যকর করার সাথে সংশ্লিষ্ট দুটি মন্ত্রণালয় শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং প্রবাসী কল্যান ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের জন্য বরাদ্দের পরিমাণ যথাক্রমে ৩৫০ কোটি এবং ৬৪১ কোটি টাকা যা ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার বিশাল বাজেটে অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের তুলনায় খুবই নগন্য। অপরদিকে করোনা সংক্রমনের এই চরম দুঃসময়ে শ্রমজীবী মানুষের বিশেষ করে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কর্মরত ৫ কোটির অধিক শ্রমিকদের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রেশনিঙের ব্যবস্থা করা, হেলথ কার্ড সরবরাহ এবং শ্রমজীবী হাসপাতাল নির্মাণের মাধ্যমে বিনামূল্যে চিকিৎসা নিশ্চিত করা এবং শ্রমজীবী মানুষের জন্য স্বাস্থ্য সম্মত আবাসন নির্মাণের দাবি শ্রমিকদের পক্ষ থেকে বহুদিন ধরে উচ্চারিত হচ্ছে। কিন্তু বরাবরের মতই শ্রমজীবী মানুষের আবেদন উপেক্ষিত হয়েছে।

নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে যখন কর্মসংস্থান সংকুচিত হচ্ছে, মালিকরা নিজেদের মুনাফা নিশ্চিত করতে অবাধে শ্রমিক ছাঁটাই করছে, প্রবাস থেকে কর্মচ্যূত হয়ে শ্রমজীবী মানুষ অসহায় হয়ে দেশে ফিরে আসছে, সেই সময় রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে কর্মসংস্থানের জন্য সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার পরিবর্তে ব্যাক্তিখাতে করহার, করপোরেট কর, উৎস কর কমানো এবং প্রণোদণার নামে ধনীদের পকেটে অর্থের যোগান দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। অথচ রাষ্ট্রের সহয়তায় পুষ্ট হওয়া এই ধনীরা যে দুঃসময়ে মানুষের পাশে দাঁড়ায় না, তাদের পকেটে সঞ্চিত টাকা দেশে ব্যয় হওয়ার পরিবর্তে বিদেশে পাচার হয় তা ইতিমধ্যে প্রমাণ হয়েছে।

‘তারপরও বাজেট প্রণয়নে একই নীতি অনুসরণ এটা প্রমান করে যে, এই সরকারের কাছে শ্রমিক-কৃষক-মেহনতী মানুষ তথা শ্রমজীবী মানুষ মূল্যহীন। তাই শ্রমজীবীদের জীবনমান উন্নয়ন নয় বরং শ্রমজীবীদের পকেটের টাকায় পুণ: পুণ: শ্রম শোষণের আয়োজন করে ধনীদের আরও ধনবান করার উদ্দেশ্যেই এই বাজেট প্রণিত হয়েছে। ‘

নেতৃবৃন্দ সংসদে পাশের পূর্বে সংশোধন করে শ্রমিকের জন্য রেশনিং, বিনামূল্যে চিকিৎসা এবং স্বাস্থ্যকর আবাসন নিশ্চিত করতে এবং রাষ্ট্রিয় উদ্যোগে কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও পাট শিল্পের আধুনিকায়নের জন্য বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ দেওয়ার দাবি জানান।

নেতৃবৃন্দ, প্রস্তাবিত বাজেটকে শ্রমিক বিরোধী আক্ষ্যা দিয়ে এই বাজেট সংশোধনের দাবিতে আগামী ১৫ জুন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এবং সকল জেলা- উপজেলা- শিল্পাঞ্চলে করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রতীকী অবস্থান ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেন।

(ঢাকাটাইমস/১৩জুন/জেআর/ইএস)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজনীতি এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :