তাকে ভুলতে পারিনা কোনো মতে…

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৪ জুন ২০২০, ১২:৪৫

প্রিয়জনের সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে গেছে। কিন্তু তার স্মৃতি সব সময় আপনাকে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে। মুক্তি পাচ্ছেন না কোনো ভাবেই। অথচ মুক্তি আপনার পেতেই হবে। আপনার মনের কথাগুলো আমি কিছুটা হলেও অনুভব করতে পারি। এ সময়ে আপনার মানসিক অবস্থাটা।

আপনি একজনকে প্রচণ্ড ভালোবাসতেন, কিন্তু তার কিছু আচরণের কারনে আমাদের মধ্যে ব্রেকআপ ঘটে। আমি বুঝতে পারছি ঘটনাটি মেনে নিতে আপনার খুবই কষ্ট হচ্ছে, ভালোবাসার মানুষের কাছ থেকে এমন আচরণ আসলে কেউই প্রত্যাশা করে না। আপনার জায়গায় আমি বা অন্য কেউ থাকলে সেও আপনার মতই অনভব করতো।

এ মুহূর্তে আপনার মনে অনেক বেশি আবেগ যেমন খুব বেশি রাগ, খুব বেশি কষ্ট ইত্যাদি নানারকম আবেগ হয়তো কাজ করছে। মনের এই কথাগুলো কি আপনার খুব বিশ্বস্ত, কাছের কেউ যে গোপনীয়তা রক্ষা করে আপনাকে সাহায্য করতে পারবে তার সাথে শেয়ার করা যায়? এতে আপনার মন কিছুটা হালকা হবে। কার সাথে শেয়ার করতে ইচ্ছে না করলে মনের জমানো অভিমানগুলো কোনো ডাইরীতে লিখে ফেলতে পারেন, তারপর সেগুলো আর না পড়ে ছিড়ে ফেলতে পারেন, এতেও কিছুটা হালকা অনুভব করবেন।

এছাড়া কিছু টিপস মেনে চলতে পারেন, যেমন; ১. প্রতারণা কিংবা ভালোবাসার মানুষটির কাছ থেকে দূরে চলে আসবার কষ্টটা আপনার একার বলে মনে হলেও বাস্তবে পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষই জীবনের কোনো না কোনো সময়ে এই কষ্টের পথটা ধরে হেঁটেছেন, হাঁটছেন এবং হাঁটবেনও। বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা মতে নিজের পছন্দের মানুষের কাছ থেকে আমরা ইচ্ছাশক্তি নিজের ভেতরে নিয়ে নিতে পারি।

আর তাই এমন কোনো আদর্শ ব্যাক্তিকে খুঁজুন যে প্রতারণা কিংবা এমন হাজারো কষ্টের ভেতর দিয়ে গিয়েও উঠে দাঁড়িয়েছে। থেমে তো যায়ইনি, বরং এতটা শক্তি নিয়ে এগিয়ে গিয়েছে যে তাকে ছেড়ে যাওয়া মানুষগুলোকেই পস্তাতে হয়েছে পরবর্তীতে। চারপাশে না পেলে দেখুন বিখ্যাত ব্যক্তিদের জীবন আর নিজেকে তাদের জায়গায় দাঁড় করিয়ে এগিয়ে যান সামনে।

২. নেশা শব্দটা নেতিবাচক শুনতে হলেও আপনার ভালোবাসার মানুষটির প্রতি আপনার দূর্বলতার কারণ কিন্তু এটাই। আর তার প্রতি এই নেশাকে কাটিয়ে উঠতে নতুন কোনো নেশাকে আপন করে নিন। তবে সেটা মাদক কিংবা হঠাৎ করে বেছে নেওয়া কোনো মানুষ নয়। বরং নতুন কোনো শখ, লোখালেখি, সমাজকল্যাণ, ফেলে আসা নানারকম কাজ যেমন- রান্না, সাঁতার কাটা, সাইকেল চালানো, ছবি আঁকা- এসব কিছুকে আপন করে নিন।

নতুন কোনো লক্ষ্যকে খুঁজে নিন। কোনো কিছু নেই এমন ভাবটা ফেরত এলে সেই নতুন লক্ষ্যকে নিয়ে মেতে উঠতে পারেন।

৩.মানসিক চাপ মানুষের ভেতরে হতাশা, অস্থিরা, উদ্বিগ্নতা তৈরি করে। ফলে মানুষ একটা খুঁটির আশ্রয় চায়। অনেকটা ভেসে যাওয়া মানুষের একটা খড়কুটো আঁকড়ে ধরবার মতন। আর এটাকেই মনোবিজ্ঞানীরা বলে- কনট্যাক্ট কমফোর্ট। এসময় সম্পর্কের বাজে দিকগুলো মাথায় না এসে প্রাধান্য পায় ভালো সময়গুলো। ফিরে যেতে ইচ্ছে করে আগের সময়টাতে। পেতে ইচ্ছে করে আগের যত্ন কিংবা ভালোবাসাটা।

আর এই সমস্যা থেকে দূরে যেতে চেষ্টা করুন মানুষের সাথে মিশতে। বন্ধুদের আড্ডায় যেতে। বান্ধবীর সাথে ঘুরে বেড়াতে। নিজেকে বোঝাতে চেষ্টা করুন যে আপনার যত্ন নেওয়ার আরো অনেকে আছে।

৪. মানুষ সিগারেট ছাড়তে চাইলে সেটা তাকে আরো বেশি ধরে বসে, চকলেটে আসক্ত কেউ কম খেতে চাইলে আরো বেশি চকলেটের প্রতি মোহ বাড়ে তার। ভুলতে চাইছেন এমন কাউকেও অতিরিক্ত সময় ভোলার চেষ্টা করলে তাকে আরো বেশি মনে পড়ে। তাই হঠাৎ করে কাউকে জোর করে ভুলতে চেষ্টা করবেন না।

যদি ভুলতে চাওয়া মানুষটির কথা মনে পড়েই যায় তাহলে একদমই চিন্তায় পড়বেন না। কারণ এটা খুবই স্বাভাবিক। চিন্তা না করে নিজের আর সব কাজ ঠিকঠাকভাবে করার চেষ্টা করতে পারেন।

৫. আমাদের জীবন থেকে ভালোবাসার মানুষগুলোর প্রত্যাখ্যান আমাদের হৃদপিন্ডের গতিকে কমিয়ে দেয়। সায়েন্টিফিক অ্যামেরিকান মতে এই কষ্টটা কেবল আমাদের মনের নয়। শরীরেরও। কেবল খুব ভালোবাসার মানুষই নয়, অচেনা কারো কাছ থেকে পাওয়া বাজে ব্যবহারও আমাদের মস্তিষ্কের কিছু স্থানে আঘাত করে আর শরীরের বিভিন্ন স্থানে তৈরি করে ব্যথা।

তাই খুব বেশি তাড়াহুড়ো না করে নিজেকে সময় দিন। শরীর আর মনকে সুস্থ হতে দিন। বাকি সব এমনিতেই ঠিক হয়ে যাবে।

ঢাকাটাইমস/১৪জুন/এসকেএস

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফিচার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :