৭৪.৫ শতাংশ হাসপাতালে দক্ষ জনবলের ঘাটতি: টিআইবি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৫ জুন ২০২০, ১৮:১৯

জেলা পর্যায়ের হাসপাতালগুলোয় করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে নানা ধরনের চ্যালেঞ্জ উঠে এসেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) প্রতিবেদনে। সেখানে বলা হয়েছে তাদের গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত হাসপাতালগুলোর ৭৪.৫ শতাংশেই দক্ষ জনবলের ঘাটতি পেয়েছে তারা।

সোমবার ‘করোনাভাইরাস সংকট মোকাবিলায় সুশাসনের চ্যালেঞ্জ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ’ উপলক্ষে আয়োজিত এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।

টিআইবি জানায়, সারাদেশের সকল বিভাগের মোট ৩৮টি জেলার ৪৭টি জেলা পর্যায়ের হাসপাতাল (৯ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ৩৩টি জেলা পর্যায়ের হাসপাতাল ও ৫টি অন্যান্য হাসপাতাল) হতে স্বাস্থ্যসেবা সম্পর্কিত তথ্য এবং ৪৩টি জেলর স্থানীয় নাগরিক (সাংবাদিক, শিক্ষক, পেশাজীবী) হতে ত্রাণ বিতরণের প্রত্যক্ষ তথ্য অনলাইন চেক লিস্টের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়েছে। এছাড়া টেলিফোনে তথ্যদাতার (চিকিৎসক ও সাংবাদিক) সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। এই গবেষণায় ১৫ এপ্রিল হতে ১৪ জুন ২০২০ পর্যন্ত তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। তবে মাঠ পর্যায়ের জরিপের তথ্যসমূহ ২০ মে পর্যন্ত সংগ্রহ করা হয়েছে।

টিআইবি বলছে, তথ্য সংগ্রহের পর দেখা গেছে, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক (৫১.১%), প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি (৫৯.৬%) নিম্নমানের সুরক্ষা সামগ্রী (৫১.১%) ইত্যাদি বিষয়ে সক্ষমতার ব্যাপক ঘাটতি উল্লেখযোগ্য-সংখ্যক হাসপাতালে লক্ষ করা গেছে, যা করোনা আক্রান্তের চিকিৎসাসহ অন্যান্য সাধারণ সেবা কার্যক্রমকে ব্যাহত করছে। বিশেষজ্ঞদের মতে সরকারি হাসপাতালগুলোর শয্যা সংখ্যার অনুপাতে বাংলাদেশে ৩৫০০ আইসিইউ ও ভেন্টিলেটর থাকার কথা থাকলেও থাকলেও ২৫ মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশে সরকারি হাসপাতালগুলোতে আইসিইউ ছিল মাত্র ৪৩২টি; ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত দেশের ৪৭টি জেলায় কোনো আইসিইউ সুবিধা ছিল না। করোনা আক্রান্ত রোগীদের জন্য ২৫ মার্চ পর্যন্ত সারাদেশে মোট আইসিইউ ছিল মাত্র ২৯টি, ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ছিল মাত্র ১৪২টি এবং ১ জুন পর্যন্ত ছিল মাত্র ৩৯৯টি।

২৬ মার্চ পর্যন্ত শুধু রাজধানীর নির্ধারিত ৫টি হাসপাতালে ২৯টি ভেন্টিলেটর ছিল, যদিও সরকারের দাবি অনুযায়ী এর সংখ্যা ৫০০টি। বর্তমানে সারা দেশে মোট ভেন্টিলেটরের সংখ্যা ১,২৬৭টি - এর মধ্যে মাত্র ১৯০টি করোনার চিকিৎসার জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে, যার মধ্যে ঢাকায় ৭৯টি এবং অন্যান্য জেলা শহরে ১১১টি।

ইমপেরিয়াল কলেজ লন্ডনের একটি গবেষণা প্রতিবেদন অনুসারে, ৩০ জুনের মধ্যে উচ্চ চাপযুক্ত অক্সিজেন সমৃদ্ধ শয্যার প্রয়োজন হবে প্রায় ২০ হাজার, এবং ভেন্টিলেটরসহ আইসিইউ শয্যার প্রয়োজন হবে ৫,২৫৪টি। ভেন্টিলেশন সাপোর্ট দেওয়ার ক্ষেত্রে সেন্ট্রাল অক্সিজেন ব্যবস্থা থাকা অত্যন্ত জরুরি হলেও বাংলাদেশে মাত্র ২১টি হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সরবরাহের ব্যবস্থা আছে। কোভিড নির্ধারিত হাসপাতালসমূহে ভেন্টিলেটর মেশিন, পেশেন্ট মনিটর, পালস অক্সিমিটার, এবিজি মেশিন উইথ গ্লুকোজ অ্যান্ড ল্যাকটেট, ডিফেব্রিলেটর, ইসিজি মেশিন, পোর্টেবল ভেন্টিলেটর, এসি, ডিহিউমিডিফায়ার, অক্সিজেন সরবরাহ নিশ্চিতে অক্সিজেন সিলিন্ডার ইত্যাদির ব্যাপক ঘাটতি রয়েছে।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের শুরু থেকেই কার্যক্রম শুরুর পর আর্থিক সহায়তায় অনিয়ম দুর্নীতি শুরু হয়। মাঠ পর্যায়ে ত্রাণ চুরি, অনিয়ম, প্রতারণা হয়েছে ব্যাপকভাবে। সেখানে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অস্থায়ী বরখাস্ত করা হয়েছে, যা নামমাত্র শাস্তি। আমরা বলেছি অনিয়ম দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।

(ঢাকাটাইমস/১৫জুন/জেআর/এনআই/ইএস)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :