বাগেরহাটে পর্যটনের উন্নয়নে ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ

প্রকাশ | ১৬ জুন ২০২০, ১৭:২২

বাগেরহাট প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

অপার সম্ভাবনাময় পুরাকীর্তি স্থাপত্য নিদর্শন আর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি সুন্দরবন ঘেঁষা বাগেরহাটের পর্যটন শিল্পকে এগিয়ে নিতে মহাপরিকল্পনা নিয়েছে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড (বিটিবি)।

মঙ্গলবার বাগেরহাটের পর্যটন শিল্পের সমস্যা, সম্ভবনা ও চ্যালেঞ্জ চিহ্নিতকরণ এক ভার্চুয়াল অবহিতকরণ কর্মশালার উদ্বোধন করেন বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মহিবুল হক। এই মহাপরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জাবেদ আহমেদ।

বাগেরহাটের পর্যটন শিল্পকে এগিয়ে নিতে ট্যুরিজম বোর্ড ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। ভার্চুয়াল কর্মশালায় বাগেরহাটের স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, উদ্যোক্তা, প্রশাসনের কর্মকর্তা ও সাংবাদিকরা অংশ নেন। তারা পর্যটনখাতকে এগিয়ে নিতে তাদের মতামত ও পরামর্শ তুলে ধরেন।

ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী জাবেদ আহমেদ বলেন, বাংলাদেশের পর্যটনের অপার সম্ভাবনাময় জেলা বাগেরহাট। বাগেরহাটে হযরত খান জাহানের (রহ.) শাসনামলের সাড়ে ছয়শ বছরের পুরানো অসংখ্য স্থাপত্য নিদর্শন রয়েছে। অন্যদিকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি সুন্দরবন। ভ্রমণ পিপাসুদের আকৃষ্ট করার জন্য এগুলো যথেষ্ট।

তিনি বলেন, এই জেলাতে পর্যটকদের আসতে আগ্রহী করতে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। এই জেলায় অবকাঠামোগত সমস্যা রয়েছে। পর্যটন শিল্পকে সমৃদ্ধ করতে একটা মাস্টার প্লান তৈরি করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে একে একে পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়ন করা হবে। ট্যুরিজম বোর্ড পর্যটনখাতকে এগিয়ে নিতে কাজ করে যাচ্ছে। বাগেরহাটে পর্যটন শিল্পকে এগিয়ে নিতে ইতিমধ্যে ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। পর্যটনখাতকে এগিয়ে নিতে স্থানীয় প্রশাসন তাদের সুবিধা অনুযায়ী অবকাঠামোসহ অন্যান্য উন্নয়ন কাজ করবে।

ট্যুরিজম বোর্ড আয়োজিত কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মামুনুর রশিদ। কর্মশালায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বাগেরহাটের স্থানীয় সরকার শাখার উপপরিচালক দেবপ্রসাদ পাল, বাগেরহাটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) কামরুল ইসলাম সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন, জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. লুৎফর রহমান এবং ফকিরহাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান স্বপন কুমার দাশ।

কর্মশালা সঞ্চলনা করেন বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) আবু তাহির মো. জাবেদ।

কচুয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম মাহফুজুর রহমান বলেন, সুন্দরবনের সৌন্দর্য বৃক্ষরাজি এবং বন্যপ্রাণী। সুন্দরবন আমাদের নানা দুর্যোগ থেকে রক্ষা করে থাকে। তাই যারা এই সুন্দরবন দেখতে আসবেন তাদের দ্বারা যেন বনের কোন ক্ষতি না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। বনের ভেতরে পর্যটকরা যেন অধিক শব্দ দূষণ করে এমন যন্ত্রচালিত যান ব্যবহার করতে না পারে সেজন্য প্রশাসনের নজরদারি বাড়াতে হবে। কেননা বনের বন্যপ্রাণী ওই শব্দের কারনে ভীত হয়ে পড়ে।

বাগেরহাট মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক পারভীন আহমেদ বলেন, এখানে যারা আসেন তাদের জন্য ভালো আবাসন ব্যবস্থা আজও গড়ে ওঠেনি। পর্যটন শিল্পকে এগিয়ে নিতে বাগেরহাটে নানা অবকাঠামো গড়ে তোলার আহ্বান জানান এই নেত্রী।

নারী উদ্যোক্তা জেলা মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান শরীফা খানমও অবকাঠামোগত উন্নয়নের দিকে নজর দিতে বলেন।  

বাগেরহাটের প্রবীন সাংবাদিক আহাদ হায়দার বলেন, এই শিল্পকে এগিয়ে নিতে সরকারের নীতি নির্ধারকদের একটি বাস্তবসম্মত পরিকল্পনা নিতে হবে। তাহলে বাগেরহাট জেলা পর্যটন শিল্পের অন্যতম নগরী হিসেবে গড়ে উঠবে এবং এলাকার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।

(ঢাকাটাইমস/১৬জুন/কেএম)