নমুনা পরীক্ষার অব্যবস্থাপনায় গাজীপুরে সংক্রমণ বাড়ছে

আবুল হাসান, গাজীপুর
| আপডেট : ১৮ জুন ২০২০, ১৫:২৮ | প্রকাশিত : ১৮ জুন ২০২০, ১৫:১৮

গাজীপুরে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। নমুনা পরীক্ষায় নানা ভোগান্তি আর বিলম্বে রিপোর্ট প্রাপ্তির কারণে এই সংখ্যা বাড়ছে বলে মনে করেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ সাধারণ মানুষ। তবে স্বাস্থ্যবিধি না মানা আর পোশাককর্মীদের অসচেতনায় এই পরিস্থিতি হয়েছে বলে মনে করেন সিভিল সার্জনসহ স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের এপ্রিলের শুরুতে জেলায় একজনের শরীরে প্রথম করোনা শনাক্ত হয়। আর চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে এর সংখ্যা আড়াই হাজার ছাড়িয়েছে। পরবর্তীতে কাপাসিয়ায় করোনা আক্রান্ত এক কারখানা শ্রমিকের তথ্য গোপনে সেখানে অর্ধশতাধিক আক্রান্ত হয়ে পড়ে। করোনা আতঙ্কে সেখানকার শ্রমিকরা বিভিন্নস্থানে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে জেলার ৩২২ জনের শরীরে ছড়িয়ে পড়ে ভাইরাসটি। মে মাসের শেষ সপ্তাহে হাজার আর চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে এর সংখ্যা আড়াই হাজার ছাড়িয়েছে। ইতোমধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২৮ জনের।

এদিকে সরেজমিনে দেখা গেছে, শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পিসিআর ল্যাবে পাঠানোর জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয় নগরীর চান্দনা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ মাঠে। সেখানে দেখা গেছে রোগীদের লম্বা লাইন। মুখে মাস্ক থাকলেও লাইনে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা যায়নি এসেব লাইনে। এছাড়া আরও ছয়টি বুথের মাধ্যমে নমুনা সংগ্রহ করা হয়।

কয়েকজন জানান, করোনা উপসর্গ দেখা দিলে নমুনা জমা দিতে বুথে এলেও কীট সঙ্কট, নমুনা সংগ্রহের সীমাবদ্ধতাসহ নানা কারণে তাদের পড়তে হচ্ছে নানা বিরম্বনায়। এছাড়া অনেকেই ভোগান্তির ভয়ে নমুনা পরীক্ষাই করান না। ফলে সংক্রমণের ঝুঁকি আরও বেড়ে যাচ্ছে।

গাজীপুর সিভিল সার্জন খায়রুজ্জামান জানান, স্বাস্থ্যবিধি না মানা ও জেলার পোশাক শ্রমিকদের অসচেতনভাবে বাইরে ঘোরাফেরার কারণে সংক্রমণ বেড়েছে।

নমুনা পরীক্ষার ফলাফল দেরিতে আসায় আগের তুলনায় উদ্বেগজনক হারে সংক্রমণ বাড়ছে উল্লেখ করে গাজীপুর সিটি মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম জানান, স্বাস্থ্যবিধি মানা হলে আক্রান্তের এই হার কমে যাবে। ইতোমধ্যে করোনা পরীক্ষার দুটি ল্যাব চালু রয়েছে, বিজিএমইএ আরও একটি ল্যাব স্থাপন করবে। এগুলো সম্পূর্ণরূপে চালু হলে ভোগান্তি কমবে। এছাড়া গাজীপুরকেও রেড, ইয়েলো ও গ্রীন এই তিনটি জোনে ভাগ করা হয়েছে। এরপরও সরকারের সঙ্গে আরও আলোচনা ও পরামর্শ করে লকডাউনের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে যেতে চান মেয়র।

তিনি আরও জানান, নগরের ৫৭টি ওয়ার্ডকে লাল, হলুদ ও সবুজ জোনে ভাগ করা হয়েছে। তবে সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে করোনা আক্রান্তের সংখ্যার ওয়ার্ড ভিত্তিক কোনো তথ্য এখনও জানানো হয়নি। সংক্রমণ রোধে গার্মেন্টস মালিক, শ্রমিক প্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতা, পুলিশ বিভাগ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে পরিকল্পিতভাবে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।

প্রসঙ্গত, এ পর্যন্ত গাজীপুরে ১৮৪৮১ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২৫১১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৩৯৯ জন।

ঢাকাটাইমস/১৮জুন/পিএল

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :