‘গ্রেপ্তার জঙ্গিরা ঈদ জুমা ও হজ পালন করে না'
রাজধানীর দক্ষিণখান থেকে জঙ্গি সংগঠন আল্লাহর দল বা আল্লাহর সরকারের নিয়ন্ত্রক এর বিভাগীয় নায়কসহ সাত সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। শনিবার গভীর রাতে আশকোনা এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় উদ্ধার করা হয়েছে জঙ্গি কার্যক্রমে উদ্বুদ্ধকরণের বই, লিফলেট, আয়-ব্যয় ও বিভিন্ন হিসাবের ফরম এবং পাঁচটি মোবাইল ফোন ও ৩৫ হাজার ৮০ টাকা।
গ্রেপ্তার এসব জঙ্গি মনে করে- বর্তমানে দেশে যুদ্ধাবস্থা চলছে। বিধায় তারা ঈদ, কোরবানি, হজ পালন করে না। সেই সঙ্গে জুমার নামাজও আদায় করে না তারা। এছাড়া প্রতি ওয়াক্তে নামাজ পড়ে দুই রাকাত।
গ্রেপ্তার জঙ্গি সদস্যরা হলেন- মো. আব্দুল হান্নান, মেহেদী মোর্শেদ পলাশ, মো. সোহেল হোসেন, হাসান মাহমুদ, মো. নাজমুল হাসান রাজু, মো. রেজাউল ইসলাম ও মো. রবিউল ইসলাম।
রবিবার ঢাকা টাইমসকে এসব তথ্য জানিয়েছেন র্যাব-১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল শাফী উল্লাহ বুলবুল। তিনি জানান, গত বছরের ১৮ আগস্ট রাজধানীর হাতিরঝিল থেকে ‘আল্লাহর দলের’ ভারপ্রাপ্ত আমিরসহ চারজনকে এবং ২৮ আগস্ট দক্ষিণখান থেকে আরও চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এছাড়া গ্রেপ্তার জঙ্গিদের এবং পূর্বে গ্রেপ্তার জঙ্গিদের জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যায়। সেই ধারাবাহিকতায় বর্তমানে ‘আল্লাহর দলের’ নিয়ন্ত্রক ও বিভাগীয় নায়কসহ সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হলো। তারা সবাই জঙ্গি সংগঠনটির সক্রিয় সদস্য।
র্যাব কর্মকর্তা বুলবুল আরও জানান, গ্রেপ্তার জঙ্গিরা ইসলামের অপব্যাখ্যা ও বিভ্রান্তিমূলক তথ্য পরিবেশন এবং ভ্রান্ত ইসলামি সংগীতের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ করে। জঙ্গি কার্যক্রমকে জোরদার করার জন্য তারা আর্থিক কাঠামো তৈরি করেছে। সংগঠনটির যাবতীয় আর্থিক মূলধনের একটি বড় অংশ নামে বেনামে দেশের বেশ কয়েকটি ব্যাংকে গচ্ছিত রয়েছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা র্যাবকে জানিয়েছে, সর্বোচ্চ পদকে ‘তারকা’ হিসেবে চিহ্নিত করে। এছাড়া কেন্দ্রীয় পর্যায়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে পর্যায়ক্রমে রয়েছে অধিনায়ক, অতিরিক্ত অধিনায়ক, উপ-অধিনায়ক, যুগ অধিনায়ক, সহ-অধিনায়ক, নিয়ন্ত্রক এবং নির্বাহী। আঞ্চলিক কাঠামোতে রয়েছে- পর্যায়ক্রমে বিভাগীয় নায়ক, জেলা নায়ক, থানা নায়ক, গ্রাম নায়ক এবং সদস্য।
তাদের মতে, বর্তমানে দেশে যুদ্ধাবস্থা চলছে বিধায় তারা ঈদ, কোরবানি, হজ পালন করে না। একই কারণে জুমার নামাজ আদায় করে না তারা। প্রতি ওয়াক্তের শুধু দুই রাকাত নামাজ আদায় করে। এমনকি ইসলামের কালেমার সঙ্গে শেষ নবীর নাম যুক্ত করার ক্ষেত্রেও তাদের ভিন্নমত রয়েছে। তাদের বিশ্বাস বর্তমান সময়ের জন্য তাদের কারাবন্দি জঙ্গি নেতা মতিন মেহেদি আল্লাহর বিশেষ দূত হতে পারেন।
(ঢাকাটাইমস/২১জুন/এসএস/জেবি)