পাবনায় মৃতদেহ দাফনে স্বেচ্ছাসেবকদের এমপি প্রিন্সের সংবর্ধনা

প্রকাশ | ২৫ জুন ২০২০, ১৮:৫৩

নিজস্ব প্রতিবেদক, পাবনা

‘ব্রাহ্মণ, চন্ডাল, চামার, মুচি, এক জলেতে সবাই শুচি, দেখে শুনে হয়না রুচি, যম তো কাউকে ছাড়বে না’। ফকির লালনের এই দর্শন করোনাকালে যেন মূর্ত হয়ে ফিরছে পাবনায়। করোনা আক্রান্ত কিংবা উপসর্গে মৃতদের শেষকৃত্য সম্পাদনে ভুক্তভোগী পরিবার ও প্রশাসনের আস্থা নির্ভরতায় পরিণত হয়েছেন একদল স্বেচ্ছাসেবক। ধর্মীয় রীতি মেনে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী তারা সৎকার করছেন সব ধর্মের মানুষেরই মরদেহ।

করোনা মহামারীর দূর্যোগময় মূহুর্তে সাহসিকতার অনন্য নজির স্থাপন করা এমন মানবিক কাজে প্রশংসিত হচ্ছেন তারা। আবার, করোনার মরদেহ নিয়ে স্থানীয় জনসাধারণের অজ্ঞতা ও আতঙ্কের কারণে বিড়ম্বনার শিকারও হচ্ছেন তারা।

এক খ্রিষ্টান, তিন হিন্দুসহ করোনায় আক্রান্ত ও করোনা উপসর্গে মৃত ব্যক্তিদের দাফন বা সৎকার করে আলোচনায় এসেছে  পাবনার কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন। করোনাকালের সেসব বীরযোদ্ধা ও স্বেচ্ছাসেবকদের সংবর্ধনা ও দাফন তহবিলে এক লাখ টাকা আর্থিক অনুদান দিয়েছেন সদর আসনের সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক প্রিন্স।

বৃহস্পতিবার দুপুরে শহরের রাধানগরে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে সংগঠনটির সৎকার দলের সদস্যদের সঙ্গে  পরিচিতি সভা শেষে তাদের তহবিলে এ অর্থ সহায়তা দেন তিনি।

গোলাম ফারুক প্রিন্স বলেন, ধর্মীয় রীতি মেনে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী স্বেচ্ছাসেবকরা ধর্মের মানুষেরই মরদেহ সৎকার করছেন। করোনা মহামারীর দূর্যোগময় মুহূর্তে সাহসিকতার অনন্য নজির স্থাপন করলেও অনেক ক্ষেত্রেই তাদের সঙ্গে স্থানীয়রা অমানবিক আচরণ করছেন। স্বেচ্ছাসেবীরা মরদেহ দাফনে যেভাবে রাত দিন করছে, আমরা তাদের প্রতি আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞ। এ সময় এমপি প্রিন্স তাদের যেকোন প্রয়োজনে পাশে থাকার ঘোষণা দেন।

অনুষ্ঠানে পাবনা প্রেস ক্লাব সভাপতি এবিএম ফজলুর রহমান, সম্পাদক সৈকত আফরোজ আসাদ, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সোহল হাসান শাহিন, সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ রাসেল আলী মাসুদ, অর্থ সম্পাদক হিরোক হোসেন, পৌর আওয়ামী লীগ নেতা কামরুজ্জামান রকি, কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা গোলজার হোসেন, দাফন স্বেচ্ছাসেবক হাসানুর রহমান রনিসহ পাবনা কর্মরত বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্টনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, গত এক মাসে পাবনায় করোনা আক্রান্ত কিংবা উপসর্গে মারা যাওয়া একজন খ্রিস্টান ও তিনজন হিন্দুসহ অন্তত ২০ জনের মরদেহ সৎকার করেছেন কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের ও তহুরা আজিজ ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবীরা। আক্রান্ত হবার ভয়ে যখন তাদের স্বজন ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের কর্মীরাও মরদেহের শেষকৃত্য সম্পাদনে অপারগতা প্রকাশ করছে, তখনই পাশে দাঁড়াচ্ছেন পাবনার এই অকুতোভয় স্বেচ্ছাসেবীরা।

(ঢাকাটাইমস/২৫জুন/কেএম)