করোনাকালে জিয়ার সমাধিতে কয়েকশ নেতাকর্মীর ভিড়!

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৬ জুন ২০২০, ২১:৩৮ | প্রকাশিত : ২৬ জুন ২০২০, ২১:২৭

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে এখন সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতকে। সবাইকে বলা হচ্ছে দূরে দূরে থাকতে। এজন্য ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় রেড চিহ্নিত এলাকাকে লকডাউন করেছে সরকার। এটি দূরত্ব নিশ্চিতের অংশ হিসেবেই। কিন্তু এই পরিস্থিতিতেও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমাধিতে কয়েকশ নেতাকর্মী নিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন দলটির একজন মহানগরের নেতা। যে কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

অন্যান্য সময়ের মতো শুক্রবারের এই কর্মসূচিতেও যথারীতি সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে মোনাজাত করা হয়। কিন্তু সামাজিক দূরত্বের কোনো বালাই ছিল না সেখানে। করোনাকালে এমন কাণ্ডে বিব্রত বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরাও। তারা সমালোচনা করছেন এমন কর্মসূচির।

যদিও আয়োজকদের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, বেশি লোক আসতে নিষেধ করা হয়েছিল। এরপরও অতিউৎসাহী হয়ে নেতাকর্মীরা চলে এসেছেন। সামনের দিনগুলোতে বিষয়গুলো নিয়ে তারা আরো সতর্ক থাকবেন।

মহানগর উত্তর বিএনপির সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘আমরা রিজভী ভাইসহ সর্বোচ্চ দশজনকে আসার জন্য বলছিলাম। কিন্তু থানা পর্যায়ের নেতাকর্মীরা না বলে চলে আসছে। চেষ্টা করেছি সামাজিক দূরত্ব যাতে নিশ্চিত হয় তারপরও সবাই সামনে চলে এসেছে। সামনের দিকে বিষয়টি নজরে থাকবে।’

শুক্রবারের এই আয়োজনটি ছিল ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির নতুন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হিসেবে আব্দুল আলীম নকিকে ঘিরে। আহসান উল্লাহ হাসান করোনায় মারা যাওয়ার পর নকিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

সাধারণত কেউ নতুন দায়িত্ব পেলে নেতাকর্মীদের নিয়ে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতার সমাধিতে শ্রদ্ধা জানানোর রীতি আছে। এর বাইরেও নানা উপলক্ষে শেরেবাংলা নগরে অবস্থিত এই সমাধিতে যান নেতাকর্মীরা।

তবে করোনাকালে সকল সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থগিত আছে বিএনপির। এরমধ্যে যদিও গত ৩০মে দলের প্রতিষ্ঠাতার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ভিন্ন আয়োজনে কর্মসূচি পালন করেছে দলটি। তার অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠাতার সমাধিতে শুধুমাত্র স্থায়ী কমিটির সদস্যরা শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।সেখানে মহানগরের একজন নেতার পদ প্রাপ্তি ঘিরে এই পরিস্থিতির তৈরি হওয়ায় বিব্রত খোদ মহানগরের নেতারাও।

জানা গেছে, শ্রদ্ধা জানানোর সময় ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি বজলুল বাসিত আঞ্জু, সহ-সভাপতি মাসুদ খান, যুগ্মসাধারণ সম্পাদক শামসুল হক, দপ্তর সম্পাদক এবিএম রাজ্জাক, ঢাকা মহানগর যুবদল উত্তরের সভাপতি এসএম জাহাঙ্গীর হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টনসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের প্রায় দুই শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন সহসভাপতি ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘ফেসবুকে দেখেছি এটা নিয়ে কেউ কেউ কথা বলছেন। এইসময়ে এতো নেতাকর্মী নিয়ে যাওয়াটা সুন্দর হয়নি। এই কর্মসূচি না করলেও সমস্যা ছিল না। কারণ এসব ক্ষেত্রে কোনো কিছু নিয়ন্ত্রণ করা যায় না এটা সবাই জানি।’

বিষয়টি নিয়ে কথা বলার জন্য একাধিকবার চেষ্টা করেও রুহুল কবির রিজভীর মুঠোফোনে সংযোগ মিলানো যায়নি।

আর আব্দুল আলীম নকি দাবি করেছেন তারা চেষ্টা করেছেন সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতে। পুরোপুরি পারেননি।

শুক্রবার রাতে ঢাকা টাইমসকে তিনি বলেন, ‘আমরা কিন্তু কঠোরভাবে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতের চেষ্টা করেছি। দেখবেন আমরা সবাই মাস্ক, গ্লাভস পরে গিয়েছি। কিন্তু যে লোকজন বেশি চলে আসছে তারা খবর পেয়ে ছুটে আসছে। বড় দলে নেতাকর্মীদের নিয়ন্ত্রণ করাও কষ্টের। তারপরও সামনের দিনগুলোতে আমরা অবশ্যই এটা খেয়াল করবো। কারণ এটা সবার জন্য ঝুঁকি।’

(ঢাকাটাইমস/২৬জুন/বিইউ/এইচএফ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজনীতি এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :