না দেখা এক অনুজীবে মৃত্যুপুরী

প্রকাশ | ২৯ জুন ২০২০, ১০:২৩

এস.এম. আজিজুল হক

করোনা ! বাইরে আতন্ক, ভেতরে ভয় আর ক্ষুধা । মৃত্যুর হাতছানি নক করছে প্রতিনিয়ত দরজায় । মৃত্যুকে দু'হাতে ঠেঁলে, থমকে আছে পৃথিবী । থমকে থাকার সুবাদে বোধহয় অর্থনীতির চাকাও এখন কিছুটা মৃতপ্রায় । স্বাস্থ্যবিধি না মেনে চলা মানুষটিও আজ মৃত্যুর মিছিল দেখে শৃঙ্খল আবদ্ধ হয়েছে নিতান্তই বেঁচে থাকার তাগিদে ।

লকডাউন উঠুট আর না উঠুক, শব যাত্রার লাইন থেকে কেউ ফিরে আসুক আর না আসুক, করোনা ভাইরাস এখন যৌথ জীবনের অংশীদার, করোনাকে সহাবস্থানে মেনে নিয়েই আমাদের ভরসা রাখতে হবে ওপর ওয়ালার উপর।

হয়তো করোনাকাল এক সময়ে অস্তাচলে যাবে, কিন্তু লক-ডাউনের তালা খুলবেনা সহসা। বিক্ষুব্ধ ঈশান কোণ শান্ত বলেই ঘুড়ি-লাটাই নিয়ে বেরুতে হবে এমনটিও নয়। সরকার সার্বিক জীবনমানের জন্য যথেষ্ট সহায়ক এবং সহানুভূতিশীল কিন্তু কারো জীবনের নিশ্চিত ঠিকাদারী কারো হাতেও নয়। প্রতিটি মানুষের পথচলা, প্রতিদিন পুলিশ প্রহরায় নিরাপত্তা নিশ্চিতও সম্ভব নয়।

জীবন-জীবিকা, দৈহিক-শারিরীক চাহিদা মেটানোর তাগিদ রয়েছে বটে, তবে শৃঙ্খলারর নিয়মে খিড়কীর দরজা খুলে সাবধানে এগুতে হবে আপনাকে। আপনার দরজা, আপনি কখন খুলবেন আর কখন লক-ডাউনে যাবেন ভাবতে হবে তো আপনাকেই।

মানুষের জীবনযাত্রা করোনার কাছে অসহায়, বেদনার দংশনে শয্যাশায়ী ধরা, এখানে ঈদের আনন্দ নিছক কল্পনা। তবুও মানুষ আশাবাদী, কিন্তু ভরসা কোথায় ? ঈদের ধর্মীয় ও সামাজিক শিক্ষা-সংস্কৃতি এখন উল্টো স্রোতে বহমান। আত্মিক সংযম এবং আর্থিক ত্যাগের অনুশীলন সমাজের প্রান্তিক শ্রেণীর মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য। রীতিপ্রথা এখন পুঁজিতন্ত্রের লোকারণ্য ফটোসেশনে বন্দি আর আর্থিক শোষণে, ক্ষমতার তোষণে দুর্বল সহায়-সম্বলহীন মানুষেরা।

করোনার দাপটে শারিরীক এবং মানসিকভাবে অসুস্থ মানুষের বরাত দিয়ে পালের গোদার সতীর্থরা তোলাতন্রে আশ্রিত। সে তোলার কতটুকু তাদের ভাগ্যে জুটেছে, যাদের নাম ছিল বিজ্ঞাপনপত্রে ? উবু হয়ে বসে থাকা মানুষগুলোর কাছে ঈদ আনন্দ, বেদনার বিষপাত্র অথবা বিষাদের ভাঁড়। অথচ পর্দা কাহিনী-বালিশ বাহিনী, কর্তৃত্ববাদীরা রসনা বাসনার বরযাত্রী সাজে ঈদ আগমনে অন্যদিকে নিরবে নিঃশব্দে নিঃশ্ব মানুষগুলো বেদনা চাপা দেয় পাজরের গহিনে।

ভোজন-ভোগবাদীরা চায় আজকের সূর্য দুই প্রহর জেগে থাক আর কষ্টের আধারে থাকা মানুষগুলো অপেক্ষা করে নিকট সময়ে সূর্যাস্তের।

ঢাকাটাইমস/২৯জুন/এসকেএস