পাটকল শ্রমিকদের অবসরে পাঠানোর সিদ্ধান্ত গণবিরোধী: রিজভী

প্রকাশ | ২৯ জুন ২০২০, ১৪:৫৭

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

রাষ্ট্রায়াত্ব পাটকলসমূহে ২৫ হাজার শ্রমিককে ‘গোন্ডেল হ্যান্ডসেকে’ বিদায়ের সরকারি সিদ্ধান্তকে গণবিরোধী বলে আখ্যা দিয়েছেন বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী। আর এমন সিদ্ধান্ত জনগণ মেনে নেবে না বলে জানান তিনি।

সোমবার দুপুরে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এসব কথা বলেন।

নয়াপল্টনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন, ‘রাষ্ট্রায়াত্ব পাটকল বন্ধ করে শ্রমিকদের গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের মাধ্যমে বিদায় দেয়ার সরকারের সিদ্ধান্ত গণবিরোধী। গণদুশমন ছাড়া এমন সিদ্ধান্ত কেউ নিতে পারে না। পাটকল শ্রমিকদের ছাঁটাইয়ের এই সিদ্ধান্ত ‘মরার ওপর খাঁড়ার ঘা’র মতো অবস্থা।’

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘আমরা দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে চাই, কর্তৃত্ববাদী আওয়ামী সরকারের গণবিরোধী এই সিদ্ধান্ত জনগণ মেনে নেবে না। পাটকল শ্রমিকদের ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে আমরা এই গণবিরোধী সিদ্ধান্ত থেকে সরে সরকারকে সরে আসার আহবান জানাচ্ছি।’

রাষ্ট্রায়াত্ব পাটকলসমূহের দুরাবস্থার জন্য সরকারকে দায়ী করে রিজভী বলেন, ‘তাদের (সরকার) ভ্রান্তনীতি ও অব্যবস্থাপনাপয় দেশের ঐহিত্যবাহী পাটশিল্প আজ ধবংসের দ্বারাপ্রান্তে। রাষ্ট্রায়াত্ব পাটকলে দুর্নীতি, লুটপাট, ভুলনীতি এবং মাথাভারী ও অদক্ষ প্রশাসন লোকসানের জন্য দায়ী, শ্রমিকরা নয়।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, মৌসুমের জুলাই-আগস্ট মাসে পাটের দাম যখন ১ হাজার টাকা থেকে ১২‘শ টাকা থাকে তখন পাট না কিনে সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে যখন পাটের দাম ২ হাজার থেকে ২২‘শ টাকা টাকা হয় তখন পাট কেনা হয়। শুধু তাই নয়, চাহিদার চেয়ে কম পাট কেনা হয়।’

রিজভী আরও বলেন, ‘করোনা সংক্রমণের এই দুযোর্গকালে এমনিতেই যেখানে প্রাতিষ্ঠানিক-অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে বিপুল শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়েছেন, বিদেশ থেকেও অনেক শ্রমিক কাজ হারিয়ে দেশে ফিরছেন, সেই সংকটকালে ক্ষমতাসীন কথিত মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকার মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী পদক্ষেপ নিয়ে ২৫টি রাষ্ট্রীয় পাটকল বন্ধের এই গণবিরোধী সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’

রিজভী বলেন, বিদেশে পাটের বাজার খোঁজা, পণ্যের বহুমুখীকরণ ইত্যাদি পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয় এবং বিজেএমসির কাজ। লোকসানের দায় কে্ানোভাবে শ্রমিকরা নেবে না।”

বিভিন্ন গণমাধ্যমে আসা করোনাভাইরাস সংক্রমণ টেস্টের ভুয়া ফলাফলের খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘পত্রিকায় খবর বেরিয়েছে ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা নিয়ে বাসা থেকে করোনার স্যাম্পল নিয়ে পিসিআর ল্যাবে টেস্ট না করেই রিপোর্ট দেয়া হচ্ছে। লটারির মতো পজেটিভ বা নেগেটিভ লিখে রিপোর্ট সনদ তৈরি করে পাঠিয়ে দেয়া হয় রোগীর মেইল এডড্রেসে। আবার বুথে করোনা স্যাম্পল দিলে সেখানেও একই অবস্থা। টেস্ট না করিয়ে পাঠিয়ে দেয়া হয় রিপোর্ট।’

রিজভী বলেন, কি ভয়ঙ্কর অবস্থা। মানুষের জীবন নিয়ে চরম তামাশা করছে সরকারের লোকজন। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, করোনা নিয়ে ছলচাতুরি বন্ধ করুন, মানুষের জীবন নিয়ে আর ছিনিমিনি খেলবেন না।’

(ঢাকাটাইমস/২৯জুন/বিইউ/এমআর)