মিডিয়া শুধু দুঃসংবাদ দেয়:স্বাস্থ্যমন্ত্রী

প্রকাশ | ৩০ জুন ২০২০, ১৫:৩৫

নিজস্ব প্রতিবেদক,ঢাকাটাইমস

মিডিয়াকে করোনা নিয়ে ইতিবাচক সংবাদ উপস্থাপনের আহবান জানিয়েছেন  স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী  জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, ‘মিডিয়া শুধু দুঃসংবাদ দিয়ে থাকে। এতে আমাদের তরুণ প্রজন্ম কিন্তু মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে। আমাদের বয়স্করাও অসুস্থ হয়ে যাবে। আমরাও যারা আছি তারাও অসুস্থ হয়ে যাব। তাই আমাদের পজিটিভ কথা বলতে হবে। পাঁচ মাস কিন্তু আমরাই মাঠে আছি।আমাদের কোন সমন্বয়হীনতা নেই।’

মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

জাহিদ মালেক বলেন, ‘পাঁচ মাস কিন্তু আমরাই মাঠে আছি। হাসপাতালে আমরা যাইনি এ কথা সঠিক নয়।২৫ দিনে বসুন্ধরা আইসোলেশন সেন্টার বানানো  হয়েছে।  দুই হাজার বেড আছে এখানে। আমাদের এখানে যতগুলো কোভিট সেন্টার হয়েছে সবগুলো উদ্বোধন করেছি। এ কাজগুলো আমরা করেছি। আমাদের কোনো সমন্বয়হীনতা নেই।  কাজেই আমরা মনে করি আমাদের ডাক্তার, নার্স, যারা কাজ করছে তাদেরকে অনুপ্রাণিত  করলে তারা আরও ভালো কাজ করবে। সব সময় যদি সমালোচনাই করি তাহলে এটা সঠিক হবে না।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা বিশ্বের দিকে তাকিয়ে দেখুন করোনাভাইরাস কীভাবে হবে এটা জানা ছিল না। আজও  কেউ জানে না। এর কোনো ভ্যাকসিন এখনও আবিষ্কার হয়নি। চিকিৎসাও সারা বিশ্বে নেই। আমেরিকার দিকে তাকান তাদের প্রায় এক লাখ মানুষ মরে গেছে। পৃথিবীতে এক কোটি লোক আক্রান্ত হয়েছে। আমাদের এখানে হয়তো সোয়া লাখ লোক আক্রান্ত হয়েছে। কারণ আমাদের জীবন জীবিকার বিষয় আছে । আমাদের এখানে এখন ইন্ডাস্ট্রি চালু হয়েছে। দোকান পাট চালু হয়েছে। ঈদে আমরা বাড়ি যাই। সেই কারণে সংক্রামণের হার একটু বেড়েছে। কিন্তু মৃত্যুর সংখ্যা কম। আমরা আশা করি এই সংক্রামণের হারও কমবে যখন মানুষ বেশি করে মাস্ক পরবে। সামাজিক দূরত্ব রক্ষা করবে এবং মানুষ জানাবে কীভাবে নিজেকে সুরক্ষা দিতে পারে। এই বিষয়গুলো আগে মানুষ জানত না। এখন  ইনশাআল্লাহ এগুলো জানে।’

বিএনপির সংসদ সদস্যদের স্বাস্থ্যখাত নিয়ে সমালোচনার  বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির সংসদ সদস্যরা স্বাস্থ্যের কথা বলেছে। আমরা তো ভুলে যাইনি বিএনপির  সময়ের কথা।  কমিউনিটি সেবা যেটা দিত সেটা বন্ধ করেছে কারা? বিএনপির লোক  বন্ধ করেছে। বিএনপির সময় হেলথের জন্য ১০ ডলার ছিল পার ক্যাপিটাল। আর এখন ৯০ ডলার। এই বিষয়গুলো দেখতে হবে। একটা ইনস্টিটিউট ছিল না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ক্যানসার  ইনস্টিটিউট, আই  ইনস্টিটিউট , গ্যাস্ট্রোলিভার  ইনস্টিটিউট, বার্ন  ইনিস্টিটিউট করে দিয়েছেন। চারটি বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে। ১৮টি নতুন কলেজ হয়েছে। নার্সিং  ইনিস্টিটিউট হয়েছে। ২৫ হাজার বেড বেড়েছে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর এক আমলে। উনি ভ্যাকসিন হিরো হয়েছেন। মাদার অব হিউমেনিটি  হয়েছেন। সাউথ সাউথ অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন। এগুলো সব স্বাস্থ্যের কারণে। স্বাস্থ্যখাতে কিছু হয়নি এ কথা সঠিক  নয়। আমাদের দেশে এখন গড় আয়ু ৭৩ বছর। আর অল্পহলেই  আমেরিকাকে ধরে  ফেলবো। আমেরিকাতে এখন গড় আয়ু ৭৮ বছর।  এটা স্বাস্থ্যের   একটা বড় অবদান। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমরা আপনাদের  সহযোগিতা চাচ্ছি। আপনার সহযোগিতা করলে আমরা অল্প দিনের মধ্যেই সবার সহায়তা নিয়ে এই কোভিট ভাইরাস থেকে আমরা মুক্ত হব। আমাদের দেশ আবার স্বাভাবিক গতিতে এগিয়ে যাবে।’

জাহিদ মালেক বলেন, ‘আমাদের ৮ দশমিক ২ জিডিপির যে গ্রোথ ধরা আছে সেটা আমরা অর্জন করতে পারবো। কিন্তু ভাইরাস যদি না যায়, নিত্যে ঝুঁকিতে থাকি তাহলে আমাদের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ভাল হবে না। আমরা সঠিকভাবে কাজ করে যাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন,এখানে দুর্নীতি  করার সুযোগ নেই।’

সফটওয়ার কেনা ও ঢাকা মেডিকেলের খাবার খরচের বিষয়ে সমালোচনার জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন,‘সফটওয়ারের কিন্তু ক্রয় করা হয়নি। এটা বিশ্ব ব্যাংকের। তারা ক্রয় করবেন। এটা আনুমানিক বাজেট করা হয়েছে। এখনো কেনা হয়নি। ঢাকা মেডিকেল কলেজে আমি খবর নিয়েছে। সেখানে ৫০টি হোটেল ভাড়া হয়েছে। তিন হাজার ৭০০ লোক ওখানে থেকেছে এক মাস। আমি হিসেব করে গতকাল বের করেছি। এক হাজার ১০০ টাকা প্রতি রুম ভাড়া হয়েছে। এটুকু আমরা দেখেছি। খাবার খরচ ৫০০ টাকা তিন মিলের জন্য। সকালের নাস্তা, দুপুরের খাবার এবং রাতের  খাবারের জন্য ৫০০ টাকা।’

(ঢাকাটাইমস/৩০জুন/জেআর/এইচএফ)