সাংসদ পাপুলের ঘুষ গ্রহণ, কুয়েতে স্বরাষ্ট্রের আন্ডার সেক্রেটারি বরখাস্ত

প্রকাশ | ৩০ জুন ২০২০, ২১:০১ | আপডেট: ৩০ জুন ২০২০, ২১:০৫

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

মানবপাচার ও অর্থপাচারের অভিযোগে কুয়েতে গ্রেপ্তার বাংলাদেশি সংসদ সদস্য শহিদ ইসলামকে (কাজী পাপুল) আর্থিক লেনদেনে সহায়তা ও ঘুষ নেওয়ায় জড়িত থাকার অভিযোগে কুয়েতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অ্যাসিসেন্ট আন্ডার সেক্রেটারি মেজর জেনারেল মাজেন আল-জারাহকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
মঙ্গলবার কুয়েতের উপ-প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আনাস আল সালেহ এই সংক্রান্ত আদেশ জারি করেন বলে একটি প্রতিবেদনে জানায় দেশটির সংবাদমাধ্যম আরব টাইমস।
আরব টাইমসের খবরে বলা হয়, বাংলাদেশি সংসদ সদস্যের ঘটনা তদন্তের পর আর্থিক লেনদেনে সহায়তা ও ঘুষ গ্রহণের জড়িত থাকার অভিযোগে মেজর জেনারেল মাজেন আল-জারাহকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
এর আগে সোমবার আরব টাইসমের খবরে বলা হয়, বাংলাদেশি সাংসদ পাপুলের ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে কুয়েতের কুয়েতের স্বরাষ্ট্র ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারাসহ বেশ কয়েকজন সাংসদের বিষয়ে তথ্য পেয়েছে তদন্ত কর্মকর্তারা।
বাংলাদেশি সাংসদের মোবাইল ফোনে পাওয়া ছবি ও তার অফিসের সিসিটিভি ক্যামেরার ভিডিওতে কুয়েতের যেসব কর্মকর্তাদের দেখা গেছে প্রত্যেককে তদন্তের স্বার্থে জিজ্ঞাসাবাদের আওতায় আনা হবে।
অর্থ ও মানবপাচার, ভিসা বাণিজ্য ও ঘুষ লেনদেনের অভিযোগে বর্তমানে কুয়েতের কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছে সাংসদ পাপুল। গত ২৪ জুন বাংলাদেশি এই সাংসদকে কুয়েতের  অ্যাটর্নি জেনারেলের নির্দেশে ২১ দিনের জন্য জেলে পাঠানো হয়। এর আগে টানা ১৭ রিমান্ডে নিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
সাংসদ পাপুলকে গত ৬ জুন কুয়েতে গ্রেপ্তার করে কুয়েত পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এরপর থেকে তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। কুয়েতের দুই সরকারি কর্মকর্তা ও এক স্থানীয়কে ভিসা বাণিজ্যের জন্য বিপুল পরিমাণ ঘুষ দেওয়ার বিষয়টি পাপুল জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন। ৫০ লাখ কুয়েতি দিনারসহ (বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৩৭ কোটি ৮৮ লাখ ৮৩ টাকা) পাপুলের পাঁচটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দের নির্দেশ দিয়েছে কুয়েতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
সাধারণ শ্রমিক হিসাবে কুয়েত গিয়ে বিশাল সাম্রাজ্য গড়া পাপুল ২০১৮ সালে লক্ষ্মীপুর-২ (রায়পুর) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পাপুলের মালিকানাধীন মারাফি কুয়েতিয়া গ্রুপে প্রায় ১৫ থেকে ২০ হাজার প্রবাসী বাংলাদেশি কাজ করেন বলে কুয়েতে বাংলাদেশ কমিউনিটির ধারণা।
কোম্পানির ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, সেবাখাত, নিরাপত্তা, নির্মাণ, আবাসন, পরিবহন, তেল শোধন প্রভৃতি খাতে কার্যক্রম রয়েছে মারাফি কুয়েতিয়া গ্রুপের। কুয়েতের বাইরে মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশে ব্যবসায় রয়েছে তাদের।
পাপুলের বিরুদ্ধে ওঠা মানবপাচারের অভিযোগ তদন্ত হওয়ার বিষয়ে গত ফেব্রুয়ারিতে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছিল। সে সময় কুয়েত সিআইডির বরাত দিয়ে বাংলাদেশ থেকে মানবপাচার নিয়ে বেশ কয়েকটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে কুয়েতি পত্রিকা আল কাবাস ও আরব টাইমস।
(ঢাকাটাইমস/৩০জুন/এনআই/এইচএফ)