কুড়িগ্রামে বন্যার পানিতে ডুবে শিশুসহ চারজনের মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক, কুড়িগ্রাম
 | প্রকাশিত : ০১ জুলাই ২০২০, ২১:০৭

কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমার ৬৩ সেন্টিমিটার, নুনখাওয়া পয়েন্টে ৫২ সেন্টিমিটার ও ধরলার সেতু পয়েন্টে ৪০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে দুর্ভোগে আছে প্রায় দেড় লক্ষাধিক বানভাসী মানুষ। গত এক সপ্তাহে বানভাসী অনেক পরিবারের ঘরে খাবারও শেষ হয়ে গেছে। অনেকের ভাগ্যে জুটছে না ত্রাণ।

এদিকে বন্যার পানিতে ডুবে বুধবার সকালে উলিপুর উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের জানজায়গীর গ্রামের মুক্তাসিন নামে ১৪ মাসের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় গত তিন দিনে পানিতে ডুবে শিশুসহ মোট চারজনের মৃত্যু হয়েছে।

তারা হলেন- চিলমারী উপজেলার বড়াইবাড়ী গ্রামের শান্ত মিয়া (৫) ও নয়ারহাট ইউনিয়নের জামাল ব্যাপারী (৫৫) এবং নাগেশ্বরী উপজেলার নারায়নপুর ইউনিয়নের মোল্লাপাড়া গ্রামের বেলাল হোসেন (৫) নামে এক শিশু। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

অন্যদিকে, জেলার নয় উপজেলার ৫০ ইউনিয়নের বিভিন্ন রাস্তা-ঘাট তলিয়ে যাওয়ায় বিচ্ছিন্ন রয়েছে এসব এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা। পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে ৬০০ হেক্টর জমির বিভিন্ন ফসলসহ সবজি ক্ষেত।

সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের ব্রহ্মপুত্রের অববাহিকার পারবতীপুর চরের মজির আলী জানান, গত ১ সপ্তাহ ধরে পারবতীপুর চরের সব ঘর-বাড়ি পানিতে তলিয়ে আছে। বাড়িতে শুকনো জায়গা না থাকায় চুলা জ্বালানো সম্ভব হচ্ছে না। শুকনো খাবার খেতে হচ্ছে তাদের।

একই চরের সবিরন ও রব্বানী জানান, প্রতিবছর বন্যার আগে কিছু খাবার ঘরে মজুদ রাখতেন তারা। কিন্তু এ বছর করোনার কারণে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন তারা। তাই ঘরের সামান্য খাবার শেষ হয়ে গেছে। এখন ধার-দেনা করে একবেলা খেয়ে না খেয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে দিন পার করছে।

এছাড়া বন্যা কবলিত এলাকাগুলোতে গো খাদ্যের সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে।

পার্শ্ববতী গারুহারা বলদিয়াপাড়া গ্রামের সুরুজ্জামান ও শাহাজাহান জানান, ঘর-বাড়িতে পানি উঠায় ঘরের চৌকি উঁচু করে সেখানেই বসবাস করছেন তারা। খাদ্য সংকটে ভুগলেও এখন পর্যন্ত কোনো সহায়তা পৌঁছায়নি তাদের কাছে।

এ ব্যাপারে যাত্রাপুর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মাইনুদ্দিন ভোলা জানান, ইউনিয়নের ১৫০০০ পানিবন্দি মানুষের জন্য বুধবার চার মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবারের মধ্যে এসব বিতরণ করা হবে।

জেলা প্রশাসক রেজাউল করিম জানান, জেলার বন্যা কবলিত মানুষের জন্য ৩০২ মেট্রিক টন চাল ও শুকনো খাবারের জন্য ৩৬ লাখ ৬৮ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। নতুন করে আরও ১০ মেট্রিক টন চাল ও ১ কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে তা দ্রুত বিতরণ করা হবে।

ঢাকাটাইমস/১জুলাই/পিএল

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :