যৌতুক না পেয়ে সন্তানকে হত্যার পর বালুচাপা দেন বাবা
রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর মাতুয়াইলে বালুর নিচ থেকে মাহিম (৩) নামে অপহৃত এক শিশুর মরদেহ উদ্ধারের পর এ হত্যার কারণ উদ্ঘাটন করেছে র্যাব-১০। র্যাব বলছে, পারিবারিক কলহ ও যৌতুকের টাকা না পেয়ে ক্ষোভের বশীভূত হয়ে মাহিমকে হত্যা করেন তার বাবা জুলহাস। আর সন্তানকে হত্যার পর নিজেই যাত্রাবাড়ী থানায় গিয়ে অপহরণের অভিযোগে একটি জিডি করেন জুলহাস। তদন্তে নেমে মাহিম হত্যায় বাবা জুলহাসের জড়িত থাকার প্রমাণ পায় র্যাব।
বুধবার বিকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাব-১০ এর অধিনায়ক ও অতিরিক্ত ডিআইজি মো. কাইমুজ্জামান খান।
গত ২৭ জুন শনিবার দুপুরে মাহিমকে মাতুয়াইল বাসার সামনে থেকে অপহরণ করে প্রতিবেশী জুয়েল। এরপরে তারা মাহিমকে ডেমরার দেইল্লা নির্জন এলাকায় নিয়ে জুসের সাথে আটটি ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে পান করিয়ে তার মৃত্যু নিশ্চিত করে। শনিবার (২৭ জুন) সন্ধ্যায় মৃধাবাড়ির সামনে গ্রীন মডেল টাউন এলাকার কাশবনের ভেতর বালি চাপা দিয়ে রেখে আসে জুলহাস ও জুয়েল। এ ঘটনায় গত সোমবার মাহিমের বাবা জুলহাস র্যাব-১০ এ অপহরণের অভিযোগ করেন ও যাত্রাবাড়ী থানায় একটি জিডিও করেন।
অভিযোগের ভিত্তিতে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় যাত্রাবাড়ী থানার মাতুয়াইল মিধৃাবাড়ি এলাকায় র্যাব-১০ এর একটি অভিযানে অপহরণকারীকে আটক করা হয়। অপহরণকারীর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মাহিমের বাবা জুলহাসকে মাতুয়াইল দরবার শরীফ মোড় এলাকা থেকে আটক করা হয়।
আটকৃতরা হলেন, জুলহাস ওরফে ফারুক ওরফে গুড্ডা ও জুয়েল ব্যাপারী।
র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, মাহিমের বাবা জুলহাস আগর থেকেই যৌতুকের টাকা দাবিসহ বিদেশে যাওয়ার জন্য চার লাখ টাকা দাবি করে শ্বশুর বাড়িতে। যৌতুকের টাকা না পেয়ে বিভিন্ন সময় স্ত্রীকে নির্যাতন করে আসছিলেন। পারিবারিক কলহ এবং শ্বশুরবাড়ি হতে টাকা না পেয়ে ক্ষোভের বশীভূত হয়ে নিজের সন্তানকে হত্যার জন্য প্রতিবেশী জুয়েলকে নিয়ে পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত শনিবার জুসের সাথে আটটি ঘুমের ওষুধ খাইয়ে শিশু মাহিমকে হত্যা করেন। পরে মাতুয়াইল মৃধাবাড়ী গ্রীন মডেল টাউন এলাকার কাশবনের ভিতর বালি চাপা দিয়ে রাখেন।
এ ঘটনায় মাহিমের মা স্মৃতি আক্তার বাদী হয়ে যাত্রাবাড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন।
ঢাকাটাইমস/০১ জুলাই/এএ/ইএস