কলাপাড়া ভূমি অফিসে বহু নথি নষ্ট, দখলবাজির শঙ্কা

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০২ জুলাই ২০২০, ১১:৩৯

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ভূমি অফিসের অনেক গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র উইপোকায় আর পানিতে নষ্ট নষ্ট হয়ে গেছে। সরকারি খাসজমিসহ ভূমিহীনদের মাঝে সরকারের বন্দোবস্ত দেওয়া জমি নিয়ে দেখা দিয়েছে শঙ্কা।

অনেক দরিদ্র ভূমিহীন পরিবার সরকারের দেয়া জমি ভোগদখলে থাকলেও তাদের নামে কবুলিয়ত রেজিস্ট্রিসহ নতুন খতিয়ান সৃজন না হওয়ায় বন্দোবস্ত পাওয়া ওই জমির মালিকানা নিয়ে আতঙ্কিত তারা।

দেশের দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নের রোল মডেল এলাকা হিসেবে কলাপাড়াকে ইতোমধ্যে চিহ্নিত করা হয়েছে। পায়রা সমুদ্রবন্দর, একাধিক কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, কুয়াকাটা পর্যটন এলাকা, বানৌজা শের-ই-বাংলা নৌঘাঁটি স্থাপন, সাবমেরিন ল্যান্ডিং স্টেশন, বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্মাণের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলায় এখানকার জমির দাম হু হু করে বেড়ে গেছে বহু গুণ।

প্রভাবশালীদের মধ্যে সরকারি খাসজমি দখলের প্রবণতা বেড়েছে। একশ্রেণির অসৎ ভূমি কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজশে কুয়াকাটা পর্যটন, পায়রা সমুদ্রবন্দরসহ উন্নয়ন কাজ চলমান এলাকার মৌজাগুলোর জমির আরএস, এসএ খতিয়ানের বেশ কিছু তথ্য মূল বালাম বই থেকে উধাও হয়ে গেছে। পৃষ্ঠা ছেড়া ও কাটাকাটি করে লেখা দৃশ্যমান হয়।

১৯৬৫ ও ১৯৭০-এর প্রলয়ংকারী বন্যায় ভূমি অফিসের গুরুত্বপূর্ণ কাগজ, বালাম, রেজিস্ট্রার, নথিপত্র খোয়া যাওয়ার সুযোগে স্থানীয় ভূমি অফিসের যোগসাজশে সৃষ্টি করা হয়েছে জমির জাল কাগজপত্র। এ নিয়ে মামলা-মোকদ্দমা উচ্চ আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে।

সরকারের কাছ থেকে বন্দোবস্ত পাওয়া অনেক দরিদ্র পরিবারের জমিতে প্রভাবশালী ভূমিদস্যুদের লোলুপ দৃষ্টি পড়ায় উপজেলার অনেক মৌজার সরকারি জমি নিয়ে ঝগড়া, ফ্যাসাদ, মামলা চলছে। এ সময় সরকারি বন্দোবস্ত পাওয়া জমির বেশ কিছু নথি উইপোকা কেটে নষ্ট করে ফেলায় হতদরিদ্র ভূমিহীন পরিবারগুলোর মধ্যে আতংক বিরাজ করছে।

দরিদ্র মানুষের বন্দোবস্ত পাওয়া কেসগুলোর নথি উইপোকায় নষ্ট হওয়ার ঘটনা অনেকের মধ্যে প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। নিয়মমতো সংরক্ষণ না করে পরিকল্পিতভাবে অযত্ন, অবহেলায় ওই সব কাগজ, দলিল দস্তাবেজ নষ্ট করা হয়েছে- এমন সন্দেহ স্থানীয় মানুষের।

এ বিষয়গুলো খতিয়ে দেখার দাবি জানিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, ওই সব বন্দোবস্তের বিপরীতে নতুন কাগজ সৃষ্টি করে দরিদ্রদের পাওয়া শেষ আশ্রয়টুকুও হাতছাড়া না হয়, সেদিকে কর্তৃপক্ষকে নজর দিতে হবে।

নথিপত্র নষ্ট হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে কলাপাড়া ভূমি অফিস সার্ভেয়ার মো. হুমায়ুন কবির জানান, এসব ঘটেছে তার যোগদানের আগে। তিনি বলেন, ব্যবহার অনুপযোগী টিনশেড কক্ষের সারভেয়ার শাখায় নথি নষ্ট হয়েছে। আমি যোগদানের পর এসি ল্যান্ড স্যারকে সার্ভেয়ার শাখাটি স্থানান্তরের জন্য একাধিকবার বলেছি।’

কলাপাড়া সহকারী কমিশনার (এসি ল্যান্ড) জগৎবন্ধু মন্ডল বলেন, নথি নষ্ট হওয়ার বিষয়টি ঊর্ধ্বতনদের জানানো হয়েছে। তাদের পরামর্শ অনুযায়ী পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। ব্যবহার অনুপযোগী টিনশেড কক্ষ থেকে সার্ভেয়ার শাখা অন্যত্র স্থানান্তরের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান তিনি।

(ঢাকাটাইমস/২জুলাই/মোআ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :