আমাদের সতর্কতার শিক্ষা

আব্দুন নূর তুষার
 | প্রকাশিত : ০২ জুলাই ২০২০, ১৩:১৬

যে কোনো বৃহৎ দুর্যোগে কিছু অবশ্য পালনীয় রীতি আছে। দুর্যোগের সাথে খেলা, এই বইতে মার্ক গার্সটেন ও মাইকেল এলসবার্গ বলেছেন

১. প্রথমে ঝুঁকিকানা না হয়ে, ঝুঁকি কতটুকু, কবে আক্রান্ত হতে পারেন এসব বুঝতে হবে।

২. অস্বীকার বা ডিনায়ালের মানসিকতা পরিহার করতে হবে। সবার হবে আমার হবে না। বাংলাদেশে করোনা আসবে না বলে মেডিসিন সোসাইটির পন্ডিত মহাসচিবের মতো কথাবার্তা ক্ষতিকর।

৩. সতর্ককারী সে যে বয়সের হোক, আস্তে বলুক আর জোরে বলুক, ক্ষমতাবান হোক বা নাহোক, তার কথা বিবেচনা করতে হবে, খতিয়ে দেখতে হবে, শুনতে হবে।

৪. যদি বিপদটাকে আগেই ঠেকানোর উপায় থাকে তবে তখনি কাজ শুরু করতে হবে। কারণ বিপদ ছোট বা বড়, যতো আগে কাজ শুরু করবেন ততোই খরচও কমবে, ক্ষতিও কমবে।

করনীয় কি?

১. বড় ঝুঁকি ঠেকাতে ছোটছোট ঝুঁকি কমাতে হয়। যেমন শর্ট সার্কিট ঠেকাতে ভালো বৈদ্যুতিক সামগ্রী ব্যবহার, ছোট শিশুদের বিষ খেয়ে ফেলা ঠেকাতে বাসায় এধরনের ঔষধ তালা মেরে রাখা বা উঁচু জায়গায় রাখা যাতে তারা নাগাল না পায়।

২. বিপদ আসার আগেই কাজ শুরু করতে হয়। তাতে বিপদ ঠেকাতে না পারলেও সেটার কারণে ক্ষতি কমে যায়।

৩. বিপদ যখন হচ্ছে তখনো সাথে সাথে সিদ্ধান্ত নিতে হয়। না হলে একটা কাজ শেষ করার আগেই আরেকটা ক্ষতি শুরু হয়।

৪. আমার মন বলে হবে না। এধরনের বিষয় না ভেবে, যারা তথ্য দিয়ে যুক্তি দিয়ে কথা বলছেন তাদের কথা শুনতে হয়।

সবচেয়ে বড় কথা হলো বিপদ টের পেলে চুপচাপ দাড়িয়ে থাকতে হয় না। অন্য কেউ বলবে ভেবে অপেক্ষা করতে হয় না। আপনি চিৎকার করে অন্যকে সতর্ক করবেন ও নিজে দ্রুত বিপদ থেকে নিজেকে বাঁচাবেন। তারপর অন্যদের বাঁচানোর চেষ্টা করবেন।

এবার চিন্তা করে দেখেন এর একটা কাজও কি আমরা করোনা মোকাবেলায় করেছি? করেছি আমরা টিলি স্মিথের মতো করনীয় সবগুলো কাজ করেছি। বলেছি, চেচিয়েছি , তথ্য দিয়েছি, নিজেরাই পকেটের পয়সা দিয়ে প্রতিরক্ষা সামগ্রী কিনেছি।

আর যাদের শোনার কথা, ব্যবস্থা নেওয়ার কথা সেই স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপকেরা কি করেছেন। ঝুঁকি কানা হয়েছেন, অস্বীকার করেছেন, উপেক্ষা করেছেন, দেরি করেছেন। ইয়াবাখোর প্রতারক দিয়ে আমাদের স্যাম্পল কালেকশন করিয়েছেন।

মার্ক ও মাইকেল এর বইয়ের উপসংহারে ড্যানিয়েল এলসবার্গ খুব করুন একটা কথা বলেছেন। ক্ষমতাবানেরা নিজেদের স্বার্থে সাধারন মানুষের জান মালের বিশাল ক্ষয়ক্ষতিও হতে দেন। তাদের কাছে তাদের স্বল্পমেয়াদী ক্ষমতাভোগের লক্ষ্য, অর্থলোভ দীর্ঘমেয়াদে মানুষ রক্ষা করার চাইতে বেশি দরকারি। আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার কর্তাব্যক্তিদের “বাবা”খুরী কাজ কর্ম দেখলে এরকমই মনে হয়।

লেখক: চিকিৎসক ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব

ঢাকাটাইমস/২জুলাই/এসকেএস

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফেসবুক কর্নার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :