করোনা বিদায়ে কিছু পদক্ষেপ

আবু সাইয়ীদ
 | প্রকাশিত : ০২ জুলাই ২০২০, ১৫:৪৮

মার্চ থেকে মাঝে মাঝে করোনা নিয়ে আমি লিখছি এবং ফেসবুক লাইভ করেছি। প্রথম দিকে আমরা অনেকেই করোনাকে গুরুত্বের সাথে দেখিনি বা এর ভয়াবহতা বেশি দূর ভাবতে পারিনি বা ভাবার সাহস দেখাইনি। সে সময় আমার মনে হয়েছিল জুনের মধ্যেই করোনা নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে এবং মৃত্যুর সংখ্যা হবে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার। এর কারণ হচ্ছে চিকিৎসা বিজ্ঞানের প্রতি আস্থা এবং অসুখবিসুখ আমার দৈনন্দিন চর্চার মধ্যে ছিল না। সে সময় আমার প্রধান চর্চার বিষয় ছিল প্রকৃতি, বিজ্ঞান-প্রযুক্তি এবং রাজনীতি। এখন আমার দৈনন্দিন চর্চার অনেকটা সময় নিয়ে নেয় মহামারি, ভাইরাস ইত্যাদি।

করোনা নিয়ে প্রথম থেকেই ৩টির মতো ছিল। গজব, জীবাণু-অস্ত্র এবং প্রাকৃতিক বিপর্যয়। অনেকেই করোনাকে গজব, জীবাণু-অস্ত্র বললেও আমি এখনো প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের অবস্থানেই আছি। অর্থাৎ আমি মনে করি, করোনার কারণে সারা বিশ্বে যে দুর্যোগ নেমে এসেছে তার মূলে রয়েছে আমাদের প্রকৃতি বিরুদ্ধ কর্মকান্ড। যারা গজব মনে করেছিলেন তারা হাওয়ায় মিলে গেছে। তাদের শেষ কর্মকাণ্ড ছিল গজব থেকে মুক্তির জন্য সংসদে মোনাজাত করা। যারা মনে করেছিলেন, জীবাণু-অস্ত্র, তাদের কী অবস্থা? এখনো কি সেই অবস্থানেই আছেন? তারা কী এখনো মনে করেন, করোনার প্রদুর্ভাবের পেছনে ছিল রাজনীতি? মতামত দিতে পারেন।

কখনো কোন ভুলভাল কথা বললে পরবর্তিতে ভিষন অস্বস্তি লাগে। ট্রাম তো আমার চেয়ে বা আমাদের অনেকের চেয়ে বেশি ভুলভাল বলেন তাঁর কেমন লাগে? করোনা নিয়ে সবার একটি অভিন্ন প্রশ্ন করোনা কবে যাবে? সাথে, করোনা কবে পীকে উঠবে। অনেকেই আশার বাণী শোনাতে গিয়ে লেখেন, বাংলাদেশ যুদ্ধ করে দেশকে স্বাধীন করেছে, করোনাকে জয় করতে পারবে না? অনেকেই পৃথিবীর বিভিন্ন বিপর্যয়ে মানুষের বিজয়ের গুণগান গেয়ে করোনার বিরুদ্ধে জয়ের আশাবাদ ব্যক্ত করেন। কিন্তু পরিতাপের বিষয় যে করোনা মানবজাতির অতীত জানে না, এমন কি নিজের অতীতও জানে না। করোনার পথ চলা খুবই সহজসরল। তার জীবনচক্র ৩/৪টি পদক্ষেপের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। তবে করোনা গণিত মানে।

করোনা কবে যাবে এবং করোনা কবে পীকে উঠবে এই দুই-ই নির্ভর করে প্রতিটি দেশের ক্ষেত্রে, সরকার কীরূপ পদক্ষেপ গ্রহণ করল তার উপরে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও তাই। বিষয়টা এমন ১) কোনো দেশ যদি, দেশ্যব্যাপি, যে সকল স্থানে প্রয়োজন, একই সময় নিশ্ছিদ্র লকডাউন বাস্তবায়ন করে তাহলে বাস্তবায়ন শুরুর প্রথম ১৫ দিনের মধ্যে পীক-এ উঠবে এবং ৬০ দিনের মধ্যে করোনা নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। ২) বাংলাদেশ বর্তমানে যেভাবে চলছে, আধা লকডাউন, আধা খোলা, সেইভাবে চললে আগামী বছরে পীক-এ উঠবে এবং তার পরের বছর নিয়ন্ত্রণে আসবে (এ কারণেই বোধহয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজি একবার বলেছিলেন, ২/৩ বছর করোনাকে নিয়ে থাকতে হবে। অবশ্য পরে চাপে পড়ে তিনি তার কথা প্রত্যাহার করে নেন। সঠিক স্ক্রিপ্টকে ভুল স্ক্রিপ্ট বলেন।)।

৩) যদি সবার নাকেমুখে করোনা ঢুকিয়ে দেওয়ার কর্মসূচি নেওয়া হয়, তাহলে ৬০ দিনের মধ্যে পীকে উঠবে এবং পরবর্তি ৯০ দিনের মধ্যে করোনা নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। ৪) আর যদি কোনো প্রাকৃতিক কারণে করোনা মানবজাতিকে ক্ষমা করে দেয়, আগামী তাহলে ৬০ দিনের মধ্যেই করোনা বিদায় নিতে পারে।

এসব এমন কোনো জটিল হিসেব নয়। একটু মাথা কাটালে আপনিই বুঝতে পারবেন। “SIR মডেল” অথবা সাধারণ কিছু গণিত চর্চা করলেই চলবে। বিষয় একটিই-- করোনা কবে যাবে এবং কবে পিকে আসবে তা নির্ভর করে সরকারের পদক্ষেপের উপর। এর বাইরে আর কিছু নেই। আর বিশ্ব থেকে করোনা ৯০ দিনের মধ্যেই যাবে, যদি জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে একই সময়ে অভিন্ন বৈশ্বিক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। তা না হলে চলবে বছর কয়েক। ভুলভাল খবরে কান না দিয়ে করোনা থেকে মুক্ত হতে চাইলে সরকার এবং জাতিসংঘের কাছে দাবি জানান।

লেখক: চলচ্চিত্র নির্মাতা ও উদ্ভাবক

ঢাকাটাইমস/২জুলাই/এসকেএস

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফেসবুক কর্নার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :