ভুতুড়ে বিল তদন্তে টাস্কফোর্স শাক দিয়ে মাছ ঢাকার মতো

প্রকাশ | ০২ জুলাই ২০২০, ১৬:১৮

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

বিদ্যুৎ বিভাগের লোকজনকে দিয়ে ভুতুড়ে বিদ্যুৎ বিল নিয়ে তদন্তে টাস্ক ফোর্স গঠন করাকে অনেকটাই শাক দিয়ে মাছ ঢাকার মতো বলে মনে করে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম। সংগঠনটি বলছে, যারা গড় বিল করার জন্য নির্দেশ দেয়, তারাই আবার টাস্ক ফোর্সের সদস্য। তাই টাস্ক ফোর্সকে পুনঃগঠন করে সেখানে ভোক্তাদের প্রতিনিধি হিসাবে ক্যাব প্রতিনিধি ও গণমাধ্যম প্রতিনিধি অর্ন্তভুক্ত করার দাবি ও জুন পর্যন্ত বকেয়া বিলের জরিমানা আগামী আগষ্ট পর্যন্ত স্থগিত রাখার দাবি জানিয়েছে ক্যাব।

বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারন সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, ক্যাব মহানগরের সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু, সাধারণ সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, যুগ্ন সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম, ক্যাব চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা সভাপতি  আবদুল মান্নান, ক্যাব যুব গ্রুপের সভাপতি চৌধুরী কে এনএম রিয়াদ ও সম্পাদক নিপা দাস উপরোক্ত দাবি জানান।

তারা বলেন, করোনা মহামারীকালে টার্গেট পূরণের নামে ভুতুড়ে বিল নিয়ে দেশব্যাপী বিদ্যুৎ গ্রাহকদের ভোগান্তি ও ৩০ জুনের মধ্যে মার্চ-জুনের বিল পরিশোধে বারবার মাইকিং, পত্রপত্রিকায় বিজ্ঞাপন, টেলিভিশনে সতর্ক বার্তা প্রদান করে প্রবল আপত্তির মুখে এই টাস্কফোর্স গঠন করা হয়। ভুতড়ে বিল ও গ্রাহক ভোগান্তি নিরসনে বিদ্যুৎ বিভাগের লোকজনকে দিয়ে টাস্কফোর্স গঠন অনেকটাই “আমরা- আমরাই-মিলে মিশে করি, এটাকেও হার মানায়। তৃতীয় কোন পক্ষকে দিয়ে এই টাস্কফোর্স করা যেতো। প্রয়োজনে স্থানীয় জেলা, উপজেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, ক্যাব ও গণমাধ্যম প্রতিনিধি দিয়ে গ্রাহক পর্যায়ে তথ্য অনুসন্ধান করা হলে প্রকৃত ঘটনা বের হয়ে আসতো। এখন এই টাস্কফোর্স কোন অনিয়ম পাবে না এবং গ্রাহকের ভুতুড়ে বিলের কোনো সুরাহা হবে না। আর গ্রাহকের বাড়ি পরিদর্শন ও মিটার যাচাই ছাড়া এই সমস্যা সমাধানে গণশুনানির মতো অফিসে বসে কোন সমাধান কাঙ্খিত ফল আসবে না। 

তারা বলেন, সংকট কালে গড় বিল, ভুতড়ে বিল, জুনের টার্গেট প্রদান করে রাজস্ব আহরণের ঘটনাগুলি তারই অংশ কিনা তা ঘতিয়ে দেখা দরকার। কারণ করোনার মহামারীকালে সরকার প্রদান হিসাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দিনে ২০ ঘণ্টা পরিশ্রম করে সাধারণ জনগণের দুর্ভোগ লাঘবে কাজ করছেন। আর সেখানে সরকারের একশ্রেণির কর্মকর্তারা নানা ফর্মুলা দিয়ে মানুষের ভোগান্তি বাড়াতে নানা ফন্দি ফিকির করছেন, যা কোনো ভাবেই কাম্য নয়। বিষয়গুলি তৃতীয় কোনো পক্ষকে দিয়ে তদন্তের দাবি করেন তারা।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন করোনার মহামারীতে অধিকাংশ সাধারণ গ্রাহক আয় রোজগার কমে যাওয়া, অনেকে চাকরি হারিয়ে বা বেতন কর্তনের মতো দুর্দশায় জীবন-জীবিকা নির্বাহ করতে কঠিন সময় পার করছেন, সে সময়ে বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের উদ্ভট সিদ্ধান্ত গড় বিল ও ৩ থেকে ৪ গুন অতিরিক্ত বিলের বোঝা চাপিয়ে সাধারণ ভোক্তাদের জন্য বিদ্যুৎ বিল আর একটি “মরার উপর খাঁড়ার ঘা” হিসাবে আর্বিভুত হয়েছে। আবার ৩০ জুনের মধ্যে পরিশোধ না করলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার মতো ঘোষনা শুধু অমানবিক নয়, মহামারী কালে সাধারণ মানুষের উপর  রাস্ট্রীয় অর্থে পরিচালিত সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের অগ্রহনযোগ্য।

(ঢাকাটাইমস/২জুলাই/জেআর/এইস)