হাসপাতালে চালকবিহীন গাড়ির পরীক্ষামূলক ব্যবহার শুরু

তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০২ জুলাই ২০২০, ১৮:৪৩

চালকবিহীন গাড়ি ব্যবহারের জন্য হুয়াওয়ে, থাইল্যান্ড ন্যাশনাল ব্রডকাস্টিং ও টেলিকমিউনিকেশন কমিউনিকেশন (এনবিটিসি) এবং সিরিরাজ হাসপাতাল যৌথভাবে সম্প্রতি প্রথমবারের মতো থাইল্যান্ডের স্মার্ট হাসপাতালে ‘আনম্যানড ভেহিকেল পাইলট প্রজেক্ট ড্রাইভিং থাই হেলথকেয়ার টু ফাইভজি এরা’ চালু করেছে।

হুয়াওয়ের ফাইভজি প্রযুক্তির সুবিধা নিয়ে এ চালকবিহীন গাড়িগুলো কোনো সংস্পর্শ ছাড়াই চিকিৎসাসেবা সংক্রান্ত উপকরণ সরবরাহ করতে পারবে; এ বিশ্বসেরা প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনের ব্যবহার চিকিৎসা পদ্ধতিকে ফাইভজি যুগে উন্নীত করবে এবং চিকিৎসা সেবা ও স্বাস্থ্য খাতেও নতুন মাত্রা যোগ করবে।

এ ধরনের প্রযুক্তি জটিল পরিবেশে কার্যক্রম চালাতে সক্ষম বলে লিজিস্টিক সেবায় মানুষের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। চালকবিহীন এ গাড়ি নিরাপদ, সহজে ব্যবহারযোগ্য, সাশ্রয়ী সমাধান এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের কাজের চাপ কমিয়ে রোগীদের সুরক্ষা নিশ্চিতেও বেশ কার্যকর। এর ফলে, সামনের দিনগুলোতে জাতীয় স্বাস্থ্য খাতকে স্মার্ট হাসপাতালের রূপ দেওয়ার জন্য ক্রমান্বয়ে ফাইভজি প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে।

জাতীয় সম্প্রচার ও টেলিযোগাযোগ কমিশন কার্যালয়ের মহাসচিব টাকর্ন তানতাসিথ বলেন, ‘ফাইভজি প্রযুক্তি ব্যবহার করে এনবিটিসি দূরবর্তী চিকিৎসাসেবা প্রদানের লক্ষ্যে কমিউনিটি হেলথ প্রমোশন হাসপাতাল ও স্থানীয় বড় হাসপাতালগুলোর সাথে যুক্ত হয়ে পরীক্ষামূলকভাবে চার ধরনের রোগের চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে। এগুলো হলো: চোখের সমস্যা, চর্মরোগ, রক্তচাপে অস্বাভাবিকতা এবং ডায়াবেটিস। প্রত্যন্ত এলাকার মানুষ ও কারাবন্দীদের চিকিৎসা প্রদানের জন্য রাচাবুরি প্রদেশের রাচাবুরি কেন্দ্রীয় কারাগার এবং খাও বিন কেন্দ্রীয় কারাগারে এভাবে চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষের কাছে ফাইভজি উদ্ভাবনগুলোর সর্বোচ্চ সুবিধা পৌঁছে দেয়াই এনবিটিসির চলমান প্রকল্পগুলোর লক্ষ্য।’

এনবিটিসির মহাসচিব আরো বলেন, 'থাইল্যান্ডের সফল ফাইভ জি নিলামের সুবিধা রয়েছে এবং আসিয়ানভুক্ত দেশসমূহের মধ্যে ফাইজি প্রযুক্তিতে অন্যতম শীর্ষস্থানে আছে দেশটি। এনবিটিসি এ প্রতিযোগিতামূলক সুবিধাগুলোকে স্বীকৃতি দেয় এবং বিভিন্ন খাতে ফাইভজি প্রযুক্তির সংযোজনের মাধ্যমে দেশে ডিজিটাল অসাম্য ঘোচাতে উৎসাহ প্রদান করে, যা একই সাথে আমাদের দৈনন্দিন জীবন, কাজ এবং উৎপাদনকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে এবং ডিজিটাল রূপান্তরের জন্য থাইল্যান্ডকেও প্রস্তুত করছে।’

কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে চিকিৎসা সেবা প্রদানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা থাইল্যান্ডের সবচেয়ে পুরনো এবং বৃহত্তম সিরিরাজ হাসপাতালে প্রথম পরীক্ষামূলক কার্যক্রম চালানোর পরে এনবিটিসি ফাইভজি সক্ষম বিভিন্ন চালকবিহীন গাড়ির সুবিধা এবং সক্ষমতা মূল্যায়ন করবে। এখান থেকে প্রাপ্ত ফলাফল পরবর্তীতে অন্যান্য হাসপাতালসহ নানাবিধ ব্যবহারের জন্য সহায়ক হবে।

মাহিদল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিরিরাজ হাসপাতালের মেডিসিন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. প্রসিত ওয়াতানাপা বলেন, ‘সম্পদের কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত করে কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে রোগী ও চিকিৎসা কর্মীদের নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। সিরিরাজ হাসপাতাল সামগ্রিকভাবে এর কার্যক্রম ও চিকিৎসা সেবাদানের দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ডিজিটাল প্রযুক্তির ওপর গুরুত্বারোপ করেছে। ফাইভজি প্রযুক্তির চালকবিহীন গাড়ির পরীক্ষামূলক প্রকল্প হাসপাতালের মধ্যে কেন্দ্রীয় লজিস্টিক সিস্টেমকে আরো উন্নত করবে। প্রাথমিক পর্যায়ে এ প্রযুক্তি মানুষের সংস্পর্শ ছাড়া ওষুধ পরিবহন এবং বিতরণ করতে ব্যবহার করা হবে যা স্বাস্থ্যকর্মীদের কাজের চাপ ও সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করবে। দীর্ঘমেয়াদী এবং টেকসই উন্নয়নের জন্য স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়নে এটি গুরুত্বপূর্ণ এক পদক্ষেপ।’

এ নিয়ে হুয়াওয়ে থাইল্যান্ডের প্রধান নির্বাহী আবেল ডেং বলেন, ‘বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান হিসেবে হুয়াওয়ে ধারাবাহিকভাবে থাইল্যান্ডের চিকিৎসা কর্মীদের সহযোগিতায় অংশ নিতে পেরে সম্মানিত ও আনন্দিত। সিরিরাজ হাসপাতালে হুয়াওয়ের ফাইভজি প্রযুক্তির সহায়তায় চালকবিহীন গাড়ির পরীক্ষামূলক প্রকল্পটি হাসপাতালের ভেতরে চিকিৎসা উপকরণ পরিবহনে সহায়তা করবে। এ পরীক্ষামূলক প্রকল্পটি থাইল্যান্ডের চিকিৎসা সেবার দ্রুত ডিজিটালাইজেশনের একটি অন্যতম নজির, কেননা ফাইভজি প্রযুক্তিই পরবর্তী প্রজন্মের স্বাস্থ্যসেবা খাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। জনস্বাস্থ্য খাতে ফাইভজির নানাবিধ ব্যবহার অন্যান্য খাতের ব্যবসায়ীদের এ প্রযুক্তির ব্যবহার এবং নতুন নতুন অ্যাপ্লিকেশন খুঁজতে অনুপ্রাণিত করবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, থাইল্যান্ডের অর্থনীতিকে পুনরুদ্ধার এবং দেশটির অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রবৃদ্ধিসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে ফাইভজি প্রযুক্তি বিশেষ ভূমিকা রাখবে।’

(ঢাকাটাইমস/২জুলাই/এজেড)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :