কিশোরীদের প্রজনন স্বাস্থ্য তথ্যের জন্য আলাদা হটলাইনের পরামর্শ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০২ জুলাই ২০২০, ২২:০৪

কিশোর-কিশোরীরা তাদের যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য সম্পর্কে যেন সহজেই হটলাইনে ফোন দিয়ে জানতে পারে তার জন্য একটি আলাদা হটলাইন চালুর পরামর্শ দিয়েছেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্সেস বিভাগের প্রভাষক মো. নুরুজ্জামান খান।

তিনি বলেন, এখন যে হটলাইন চালু রয়েছে সেটা দেশের সবার জন্য। আমি মনে করি বাংলাদেশের বিপুর পরিমাণ কিশোর–কিশোরীর জন্য আলাদা হটলাইন চালু করা প্রয়োজন।

বুধবার রাতে ‘সিরাক-বাংলাদেশ’আয়োজিত কিশোর–কিশোরী ও তরুণদের প্রজনন স্বাস্থ্যে কোভিড-১৯ এর প্রভাব বিষয়ক এক অনলাইন আলোচনায় এ কথা বলেন মো. নুরুজ্জামান খান।

তিনি বলেন, ‘কিশোর-কিশোরীরা পরিবারে সদস্যদের সঙ্গে প্রজনন স্বাস্থ্য সম্পর্কে আলোচনা করতে এখনও ভয় ও লজ্জা পায়। তাই এ করোনার সংকটে আভিবাবকরা তার সন্তানদের যেন এ বিষয়ে সঠিক তথ্য দেন।

করোনার সময়ে হেলথ কেয়ার আগের মতো খোলা না থাকায় তরুণ–তরুণীরা সেখানে থেকে তাদের প্রয়োজনীয় সেবা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে মন্তব্য করে মো. নুরুজ্জামান খান বলেন, আমাদের ১৮ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক আছে। কিন্তু এ কমিউনিটি ক্লিনিক খোলা রাখার বিষয়ে সরকার কোন পদক্ষেপ নেয়নি। গ্যাপটা আসলে ওই হেলথ কেয়ার সার্ভিসটা আগের মত খোলা না থাকায়। আমরা ওই খানে যারা কাজ করেন ডাক্তারদের পিপিই দেয়ার বিষগুলো নিশ্চিত করতে পারিনি। এখানে সরকারের পলিসির অভাব ছিল। এ কারণে এখানে সেবা থেকে আমাদের এই গ্রুপ বঞ্চিত হচ্ছে।

বাংলাদেশে রয়েছে তিন কোটি ৬০ লাখ কিশোর-কিশোরী। বয়ঃসন্ধি এমন একটা পর্যায় যখন একটি শিশু একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ হয়ে ওঠে। এ সময়ই মানুষের মধ্যে প্রজনন ক্ষমতা তৈরি হয়। আর এ সময় তার অনেক কিছুর জানায়র আগ্রহ তৈরি হয়।এই সময়ে ছেলে-মেয়ের মধ্যে বড় ধরনের শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন আসে, যে কারণে তাদের প্রতি বিশেষ মনোযোগ দিতে হয়।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বর্তমানে পরিবার পরিকল্পনা, গর্ভকালীন ও প্রসব পরবর্তী, নবজাতক, শিশু ,পুষ্টি এবং কৈশোরকালীন প্রজনন স্বাস্থ্য বিষয়ক তথ্য দেয়ার জন্য পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের কল সেন্টার ১৬৭৬৭ রয়েছে।

মো. নুরুজ্জামান খান বলেন, আমাদের এডোলেশেনদের জন্য আলাদা হটলাইন আদালা সার্ভিস প্রয়োজন। যে হট লাইন আছে এটা সবার জন্য। আমরা যদি এডোলেশেনের জন্য আলাদা নাম্বার আলাদা সার্ভিস সেন্টার ব্যবস্থা করতে পরি তা হলে আমরা আরও ভালভাবে তাদের সেবা দিতে পারবো। তাদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবো।

সিরাক বাংলাদেশের এসেসিয়েট প্রোগ্রাম অফিসার নুসরাত শারমিন রেশমার সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন ইন্টারন্যশনাল ইয়থ এলাইন্স ফর ফ্যামেলি প্লানিংয়ের (আইওয়াইএফপি) কান্ট্রি কোঅর্ডিনেটর তামজীদ হায়দার তাওরাত সিকদার।

‘বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ‘রিপোর্ট অন বাংলাদেশ স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিস্টিকস-২০১৯’ প্রতিবেদনে তথ্য উঠে এসেছে গত পাঁচবছরে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহারের হার বাড়েনি। প্রায় একই রকম রয়েছে। শহর এলাকায় নারীরা ৬৪ দশমিক চার শতাংশ জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির ব্যবহার করে। অন্যদিকে গ্রামে ৬২ দশমিক সাত শতাংশ নারীরা এই পদ্ধতি ব্যবহার করে। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে পপুলেশন সায়েন্সেস বিভাগের প্রভাষক মো. নুরুজ্জামান খান বলেন, ২০০৪ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধিতি খুব ভালো ভাবে কাজ করেছে। বর্তমানে এখানে সরকারের ফোকাস কমে গেছে। যার ফলে গত পাঁচ বছর এখানে তেমন উন্নতি হয়নি।

মো. নুরুজ্জামান খান বলেন, আমাদের ১৮ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রীর খুব বড় একটি আগ্রহের জায়গায়।তিনি এখানে গুরুত্ব দিতে বলেছেন। এখানে এটলিস্ট ম্যাটারনাল হেলথ সার্ভিসগুলো নিশ্চিত করা, ডেলিভারি কেয়ার বিষয়ে সেবা দেয়া বিষয়ে প্রথমত দেয়ার কথা। কিন্তু আমি ডেলিভারি সার্ভিস বিষয়ে যে তথ্য পেয়েছি বাংলাদেশে ৪৩ শতাংশ নারী টোটাল ডেলিভারি কেয়ার নেয় তার মধ্যে থেকে কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে সার্ভিস নেয় মাত্র এক শতাংশরও কম।

ইন্টারন্যশনাল ইয়থ এলাইন্স ফর ফ্যামেলি প্লানিংয়ের (আইওয়াইএফপি) কান্ট্রি কোঅর্ডিনেটর তামজীদ হায়দার তাওরাত সিকদার বলেন, সরকারকে প্রজন সেবার দেয়ার জন্য প্রযুক্তিকে আরও কাজে লাগাতে হবে। টেলিভিশনে এ বিষয় সম্পর্কে ব্যাপক প্রচার করতে হবে। আর এই করোনার সময় পরিবারকে তার সন্তানদের একটু বাড়তি নজর দিতে হবে। সন্তানদের সঙ্গে খোলামেলা কথা বলতে হবে। তিনি সবাইকে ঘরে থাকার এ সময়টুকু ক্রিয়েটিভ কিছু কাজ করার ব্যপারে পরামর্শ দেন।

(ঢাকাটাইমস/০২জুলাই/জেআর/ইএস)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :