পানি বাড়ায় দুর্ভোগে জামালপুরের ব্রহ্মপুত্র পাড়ের বাসিন্দারা

প্রকাশ | ০৩ জুলাই ২০২০, ২১:৫৩

জামালপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

জামালপুরে যমুনা নদীর পানি কমলেও বেড়েই চলেছে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি। এতে বন্যা কবলিত হয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছে ব্রহ্মপুত্র পাড়ের বাসিন্দারা। আশ্রয় নিচ্ছে বিভিন্ন বাঁধ ও উঁচু সড়কে। এদিকে দুর্বোগ কমাতে ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত রেখেছে জেলা প্রশাসন।

জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবু সাঈদ জানান, শুক্রবার দুপুর ৩টায় যমুনা নদীর পানি বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার ৭৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। তবে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলেও বিপদসীমা অতিক্রম করেনি। এছাড়া শাখা নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। তবে কয়েকদিনের ভেতর ভারি কোনো বর্ষণ না হলে পানি আর বৃদ্ধি পাবে না বলে জানান তিনি।

জামালপুর পৌরসভার দেওয়ানপাড়া এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, ব্রহ্মপুত্র নদের পাশে অবস্থিত নাওভাঙ্গা চর এলাকার অধিকাংশ বন্যার পানিতে প্লাবিত হওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছে সেখানকার বাসিন্দারা। অনেকে শহরের আত্মীয়-স্বজনের বাড়ি ও নতুন বাইপাস সড়কের ধারে আশ্রয় নিয়েছে।

নতুন বাইপাস সড়কে আশ্রয় নেওয়া হাশেম জানান, প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে সড়কের পাশে আশ্রয় নিয়েছে তারা। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো সরকারি সহায়তা পায় নি তারা।

এ বিষয়ে জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা নায়েব আলী জানান, বন্যার্তদের জন্য নতুন করে ৪৩৪ মেট্রিক টন চাল এবং নগদ ১১ লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়ার পর তা পর্যায়ক্রমে সুষ্ঠুভাবে বিতরণ করা হচ্ছে। সবার কাছে ত্রাণ পৌঁছাতে একটু সময় লাগবে বলেও জানান তিনি।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এ যাবৎ জেলার আটটি পৌরসভাসহ সাত উপজেলার ৪৩টি ইউনিয়নের ৩১৯টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এর মধ্যে ৮৫১৯৭টি পরিবারের ৩ লাখ ৫৯৪২ জন মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। ২২০টি ঘর-বাড়ি সম্পূর্ণ এবং ৫৯৮৭টি ঘর-বাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ১০১৯১ হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে গেছে। এছাড়া ৪৮.৫ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা ও ৬.৭৫ পাকা রাস্তা আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ৫০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ২৫টি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও চারটি ব্রিজ কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। বন্যার্তদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য ৪৩টি মেডিকেল টিম কাজ করছে। এছাড়া এ পর্যন্ত পুরো জেলায় বন্যার পানিতে ডুবে ১০ জন এবং সাপের কামড়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে।

ঢাকাটাইমস/৩জুলাই/পিএল