গ্লোবের টিকার আলোর মুখ দেখতে বেশ লম্বা পথ

তানিয়া আক্তার, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ০৪ জুলাই ২০২০, ২১:৫২ | প্রকাশিত : ০৪ জুলাই ২০২০, ২১:১১

কোভিড-১৯ তথা করোনাভাইরাসের যে টিকা গ্লোব বায়োটেক তৈরির কথা বলছে প্রি-ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে সফল হলেই সেটি আলোর মুখ দেখতে পারে। পশুর শরীরে প্রয়োগে সফলতার কথা বললেও প্রি-ক্লিনিক্যাল ও ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের বেশ কয়েকটি ধাপের সাফল্যের ওপর নির্ভর করছে টিকাটির ভবিষ্যৎ। কিন্তু এসব প্রক্রিয়া শেষ করতে লেগে যাবে বেশ লম্বা সময়।

মহামারী করোনাভাইরাস ঠেকাতে পুরো বিশ্বই এখন টিকার আশায় রয়েছে। বিভিন্ন দেশের শতাধিক প্রতিষ্ঠান অত্যন্ত জরুরি এই টিকার আবিষ্কারে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

করোনার টিকা তৈরির সেই দৌড়ে শামিল হওয়ার কথা জানিয়েছে বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান গ্লোব বায়োটেক। ১৯৮৬ সাল থেকে দেশে ওষুধ প্রস্তত করে আসা গ্লোব ফার্মার সহযোগী প্রতিষ্ঠানটি গত ৮ মার্চ থেকে করোনার একটি টিকা তৈরির কাজ শুরু করেছে বলে জানায়।

তবে টিকাটির প্রি-ক্লিনিক্যাল ও ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের জন্য প্রটোকল অনুযায়ী ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর এবং বাংলাদেশ মেডিক্যাল রিসার্চ কাউন্সিলের (বিএমআরসি) অনুমতি নিতে হবে গ্লোব বায়োটেককে।

সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে গ্লোবের পক্ষ থেকে বলা হয়, টিকাটির আবিষ্কারে সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন গ্লোব বায়োটেকের ড. কাকন নাগ এবং ড. নাজনীন সুলতানা।

গ্লোব ফার্মাসিউটিক্যালসের চেয়ারম্যান মো. হারুনুর রশিদ জানান, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে প্রতিষ্ঠানের গবেষণা কেন্দ্রে প্রাণীর ওপর তাদের টিকার প্রাথমিক পরীক্ষা চালিয়েছেন তারা। এখন গ্লোব বায়োটেকের ল্যাবে বাকি কাজ চলছে।

প্রতিষ্ঠানটির রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ডিপার্টমেন্ট বিভাগের প্রধান ডা. আসিফ মাহমুদ টিকাটির বিষয়ে সরকারের গাইডলাইন অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণের কথা জানান সংবাদ সম্মেলনে।

তবে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর এবং বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিল দেশে কোভিড-১৯ রোগের টিকা তৈরির বিষয়ে এখনো অফিসিয়ালি কোনো খবর তাদের জানা নেই বলে জানিয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট-আইইডিসিআরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. এ এস এম আলমগীর ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘এটা খুবই প্রশংসনীয় উদ্যোগ। তবে এটি এখনো প্রি-ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে আছে, এই পর্যায়ে কয়েকটি ধাপ পার করে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে চারটি ধাপ পার করতে হবে। টিকাটি এখনো মানবদেহে ট্রায়াল করা হয়নি। তাই এখনও বলার মতো কোনও পর্যায়ে নেই টিকাটি।’

‘এমন টিকা তৈরির প্রচেষ্টা সারা পৃথিবীতে আট থেকে দশ হাজার হচ্ছে। প্রি-ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের সবগুলো ধাপে সফল হলেই বাংলাদেশ মেডিক্যাল রিসার্চ কাউন্সিলে তারা (গ্লোব) প্রটোকল জমা দেবে।’

সেখান থেকে অনুমতি মিললে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর বিষয়টি দেখবে এবং তাদের অনুমতি মিললেই টিকাটি ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে যেতে পারবে বলে জানান আইইডিসিআরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা।

নিয়ম অনুযায়ী যেকোনো রোগের টিকা তৈরির ক্ষেত্রে নানা ধাপের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয়। মানবদেহে পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করে সাফল্যের পর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদন পেলেই তা টিকা হিসেবে গণ্য হয়।

এসব প্রক্রিয়া বেশ লম্বা সময়ের উল্লেখ করে আইইডিসিআরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. আলমগীর ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘এসব ধাপ শেষ করতে এগারো থেকে আঠারো মাস পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। তবে কেউ যদি সংক্ষিপ্তভাবে করতে চায় তাহলে ফেজ-২ এবং ৩ একসঙ্গে করতে হবে যেটা অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি করছে।’

(ঢাকাটাইমস/০৪জুলাই/ডিএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :