ভার্চুয়াল আদালত স্থায়ী নয়: আইনমন্ত্রী

প্রকাশ | ০৫ জুলাই ২০২০, ২০:২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে ভার্চুয়াল আদালত চালু করতে জারি করা অধ্যাদেশটি স্থায়ী আইনে পরিণত হলেও তা স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে প্রযোজ্য হবে না বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

রবিবার রাজধানীর বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট ভবন মিলনায়তনে সহকারী জজদের অনলাইন প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন আইনমন্ত্রী।

মন্ত্রী বলেন, ভার্চুয়াল আদালত সুচারুভাবে পরিচালনার জন্য বিচারকদের পাশাপাশি আইনজীবীদেরকেও প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।

তিনি বলেন, তথ্য-প্রযুক্তি নির্ভর  এই পৃথিবীতে ভার্চুয়াল কোর্ট প্রথা চালু হবে এটাই স্বাভাবিক।  কিন্তু এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, ভার্চুয়াল কোর্ট স্বাভাবিক বিচার ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণ বদলিয়ে বিকল্প হিসেবে কাজ করার জন্য নয়। সংবিধান, সিআরপিসি (ফৌজদারী কার্যবিধি), সিপিসি (দেওয়ানি কার্যবিধি) এবং সাক্ষ্য আইন অনুযায়ী আদালতের কাজ সাভাবিক পরিস্থিতিতে যে প্রচলিত পদ্ধতিতে পরিচালনা করা হয় সেটাই বলবৎ থাকবে। শুধু অস্বাভাবিক বা বিশেষ  কোন পরিস্থিতির জন্য ভার্চুয়াল কোর্ট প্রথা অবলম্বন করা হবে। ভার্চুয়াল কোর্ট সম্পর্কিত অধ্যাদেশটি স্থায়ী আইনে পরিণত হলেও সেটার ব্যবহার হবে বিশেষ পরিস্থিতিতে।

 

আনিসুল হক বলেন, বর্তমান সরকার আধুনিক তথ্য-প্রযুক্তি সেবার সাথে  বিচারক ও বিচার বিভাগের কর্মকর্তাদের সমান তালে এগিয়ে নিতে চায় এবং সরকারি আইনি সেবার মানোন্নয়নের মাধ্যমে ডিজিটাল পদ্ধতিতে এমন একটি রাষ্ট্র গড়ে তুলতে চায়, যেখানে সকল মানুষ তার আইনগত অধিকার প্রতিষ্ঠায় রাষ্ট্রীয় সেবাসমূহ সহজেই গ্রহণ করতে পারবেন।

মন্ত্রী বলেন, সে কারণে দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ায় পর বিচারকার্যক্রমকে সচল রাখার লক্ষে সরকার দ্রুততম সময়ে ‘আদালত কর্তৃক তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার অধ্যাদেশ, ২০২০’ তথা ভার্চুয়াল কোর্ট পরিচালনা আইন  প্রণয়ন করে, যা বিচার বিভাগকে আধুনিক ও গতিশীল করার জন্য একটি যুগান্তকারী আইন।

‘সরকার বিগত ৯ মে ভার্চুয়াল আদালত পরিচালনা সংক্রান্ত অধ্যাদেশ জারির পরের দিনই ভার্চুয়াল আদালত গঠন করা হয় এবং ১১ মে থেকে সীমিত পরিসরে বিচারকার্যক্রম চালু করা হয়। সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ১১ মে থেকে ২ জুলাই পর্যন্ত ৩৫ কার্যদিবসে সারা দেশের অধস্তন আদালতের বিচারকগণ ভার্চুয়াল শুনানির মাধ্যমে মোট ৯৫ হাজার ৫২৩ টি জামিন আবেদন নিষ্পত্তি করেছেন। একই সময়ে ৪৯ হাজার ৭৬২ জন আসামির জামিন মঞ্জুর করেছেন। এটি সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর ডিজিটাল বাংলাদেশ হওয়ার কারণে। এটি সম্ভব হয়েছে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের পূর্ণ সহযোগিতার কারণে।‘

এ বছরের পহেলা জানুয়ারি সহকারী জজ ও জুডিশিয়াল ম্যজিস্ট্রেটদের নিয়ে চারমাস মেয়াদি বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্স শুরু করা হয়। ৮ মার্চ  বাংলাদেশে করোনাভাইরাসজনিত রোগ কোভিড-১৯ প্রথম শনাক্ত হওয়ার পর ২৩ মার্চ কোর্সটি স্থগিত ঘোষণা করা হয়। অনলাইনের মাধ্যমে সেই কোর্স সম্প্ন্ন করতে রবিবার পুনরায় তা উদ্বোধন করেন আইনমন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন আইন সচিব মো. গোলাম সারওয়ার। সভাপতিত্ব করেন বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বিচারপতি খোন্দকার মুসা খালেদ।

ঢাকাটাইমস/০৫ জুলাই/এএ/ইএস