প্রবাসে নতুন কর্মক্ষেত্র তৈরিতে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে

প্রকাশ | ০৬ জুলাই ২০২০, ১২:২০

ইয়াহিয়া মির্জা

ব্যাংকিং সেক্টরের সঙ্গে যুক্ত আছি। তাই অর্থনীতির খবরেও চোখ রাখতে হয়। এখন অন্যতম প্রধান খবর হলো করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্ব অর্থনীতি বিশাল ধাক্কা খেয়েছে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় নিউ নরমাল লাইফ বেছে নিতে হচ্ছে সবাইকে। কারণ অর্থনীতির চাকা সচল না থাকলে মানুষের জীবিকা অনিশ্চিত হয়ে যাবে।

ফলে করোনার চেয়েও বেশি ঝুঁকি তৈরি হবে। একই পরিস্থিতির মধ্যে আছে আমাদের দেশ। তবে জনবহুল এই দেশে মানুষই যে বড় সম্পদ তা আবারো প্রমাণিত হলো। জুন মাসে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে। বিদায়ী অর্থবছরের শেষ মাসে প্রবাসী বাংলাদেশিরা পাঠিয়েছে ১৮৩ কোটি ডলার। যা একটি মাসের হিসাবে রেকর্ড।

জুন মাসে বিপুল অংকের রেমিট্যান্স আসায় বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে হয়েছে ৩,৬১৪ কোটি ডলার। এটিও ইতিহাসের সর্বোচ্চ। বিদায়ী ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে মোট প্রবাসী আয় ১,৮২০ কোটি ডলার। এটিও একটি রেকর্ড। নানা দুঃসংবাদের মধ্যে রেমিট্যান্সের ইতিবাচক দিক ব্যাংকিং সেক্টরসহ অন্যান্য সেক্টরের জন্যও সহায়ক হবে। কারণ একজন প্রবাসী বাংলাদেশি পরিবারের জন্য টাকা পাঠালেও তা অর্থনীতির সকল ক্ষেত্রের অগ্রগতিতে ভূমিকা রাখতে সক্ষম।

বর্তমান কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও প্রবাসী ভাইবোনেরা জীবনের ঝুঁকি নিয়েই কাজ করছেন। এই কারণেই তারা দেশে পাঠাতে পেরেছেন রেকর্ড পরিমাণ অর্থ। এই প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি আমার অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে দোয়া। তাদের জন্য শুভ কামনা করি সবসময়। করোনাভাইরাসের প্রকোপে তারাও কঠিন সময় পার করেছেন। তাদের আশপাশে হয়তো কেউ আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যুর ঘটনাও আছে।

সর্বশেষ যে খবর দেখেছি, তাতে করোনায় মারা যাওয়া প্রবাসী বাংলাদেশির সংখ্যা প্রায় দেড় হাজার। দেশে হয়তো তাদের অনেকের পরিবার বিপদে পড়ে গেছে। তাদের পাশে দাঁড়াতে সরকারি-বেসরকারি সব সংস্থার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। প্রবাসে মৃত্যুবরণকারী সব বাংলাদেশিদের প্রতি আমার শ্রদ্ধা। করোনার কারণে প্রবাসে প্রাণ হারানো ব্যক্তিদের দাফন-কাফন কিংবা শেষকৃত্যের জন্য বাংলাদেশের দূতাবাসগুলো নজর দিয়েছে- এ খবরটি আমার ভালো লেগেছে।

পরিশেষে বলতে চাই, করোনাভাইরাসকে পরাজিত করে প্রবাসী ভাইবোনেরা দেশের অর্থনীতির চাকা গতিশীল করেছেন। অন্যান্য সব সেক্টর এভাবে ঘুরে দাঁড়াবে বলে আমার বিশ্বাস। করোনার কারণে মানুষ বেকার হযেছে। আবার পরিবর্তনশীল পৃথিবীতে নতুন নতুন কর্মসংস্থানের দুয়ার উন্মুক্ত হচ্ছে। এর জন্য প্রবাসে নতুন কর্মক্ষেত্র তৈরিতে আমাদের সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে। কারণ জনবহুল দেশে জনশক্তি রপ্তানি অব্যাহত রাখা প্রয়োজন।

আসুন আমরা সবাই হতাশ না হয়ে নিজ নিজ কর্মে নিয়োজিত থাকি। অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবো এবং সতর্কতা নিয়ে পথ চলবো।

লেখক: হেড অব পাবলিক রিলেশনস অ্যান্ড মিডিয়া ডিভিশন, সিটি ব্যাংক

ঢাকাটাইমস/৬জুলাই/এসকেএস