ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদ গঠনসহ কাজে স্বচ্ছতা আনতে বিশেষ উদ্যোগ

প্রকাশ | ০৬ জুলাই ২০২০, ১৪:৩৭

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদ গঠনসহ কর্মকাণ্ডে স্বচ্ছতা আনতে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এরই অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে চেয়ারম্যান করে ৪ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

আর্থিক খাতে অভিজ্ঞদেরই এখন থেকে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদের পরিচালক পদে নিয়োগ দেওয়া হবে। আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল গত ১ জুলাই যুক্তরাজ্যে গেছেন। ফিরবেন ২৩ জুলাই। যাওয়ার আগে তিনি আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আসাদুল ইসলামকে একটি নোট দিয়ে যান। ওই নোটে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে চেয়ারম্যান করে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদ গঠনের নির্দেশনা দিয়ে যান তিনি।

আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, অর্থমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবিরকে চেয়ারম্যান করে চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব/সচিব এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব/সচিব ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব/ সচিব। আর কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব/সচিব।

এই কর্মকর্তারা আরও বলেন, এখন থেকে এই কমিটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান ও পরিচালক নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়গুলো দেখভাল করবেন। তবে, কমিটির কাজের পরিধি নিয়ে এখনো কোনো দিক-নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। অর্থমন্ত্রী দেশে ফেরার পর এ বিষয়ে তিনি প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেবেন।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘রাজনৈতিক ব্যক্তি পরিচালক হতে পারবেন না-এমন কোনো কথা নেই। এই খাতে যেকোনো যোগ্য ব্যক্তিই পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পেতে পারেন। দেখা গেছে, আর্থিক খাত সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই, এমন লোকও পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। অনেক সময় তারা ঋণ মঞ্জুরির জন্য নিজেদের প্রভাব খাটান। এর ফলে, ঋণ নিয়ে নানা ধরনের ঝামেলা পোহাতে হয়।’

বেসিক ব্যাংকের প্রসঙ্গ টেনে এই কর্মকর্তা বলেন, ‘বেসিক ব্যাংকের বিশাল ঋণ কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত ব্যাংকটির তৎকালীন চেয়ারম্যান। তিনি নিয়োগ পেয়েছিলেন রাজনৈতিক পরিচয়ে। তিনি নিজের প্রভাব খাটিয়ে ব্যাংক থেকে বিপুল টাকার কেলেঙ্কারির জন্ম দিয়েছেন। আর এই নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে সরকার।’

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক নিয়োগ প্রসঙ্গে সরকারের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘এর আগে ব্যাংকগুলোর পরিচালক পদ শূন্য হলে আগ্রহীরা আবেদন জমা দিতেন। সেগুলো যাচাই-বাছাই করে অর্থমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হতো। অর্থমন্ত্রী অনুমোদন দিলেই যে কেউ পরিচালক হতে পারতেন।’ তবে কোনো কোনো সময় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকেও এই বিষয়ে সুপারিশ করা হতো বলেও তিনি জানান।

ঢাকাটাইমস/৬জুলাই/আরএ/এমআর