করোনারোগী শনাক্ত: বাংলাদেশের সঙ্গে বিমান চলাচলে ইতালির নিষেধাজ্ঞা

প্রকাশ | ০৭ জুলাই ২০২০, ১৮:৪৯ | আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২০, ১৯:০২

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

বাংলাদেশ থেকে যাওয়া অভিবাসীদের মধ্যে করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ায় এক সপ্তাহের জন্য বাংলাদেশের সঙ্গে সব ধরনের ফ্লাইট বাতিল করেছে ইতালি সরকার। একই সঙ্গে ওই ফ্লাইটকে ভাইরাসবাহী বোমার সঙ্গে তুলনা করেছে কর্তৃপক্ষ৷

মঙ্গলবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রাণলয়ের বরাতে এতে বলা হয়, গত সোমবার ঢাকা থেকে রোমে অবতরণ করা বিমানের ২২৫ জন যাত্রীর অনেকেই করোনা পজেটিভ হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন৷ এর প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ থেকে আসা সব ফ্লাইট বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী রবার্তো স্পেরান্সা৷ বিমানের সব যাত্রীকে আপাতত দুই সপ্তাহের কোয়ারান্টিনে রাখা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি৷ শেনজেন অঞ্চলের বাইরে থেকে আসা সবার জন্যই এই নিয়ম বাধ্যতামূলক৷

রয়টার্স জানায়, বিমানের ২২৫ জন যাত্রীর অন্তত ২১ জনের করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে৷ তবে এখনো সবার পরীক্ষার ফলাফল পাওয়া যায়নি৷ 

মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে দুই মাস বন্ধ থাকার পর গত ১৬ জুন বাংলাদেশ থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু হয়। পরদিন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ফ্লাইটে রোমে ফিরে যান ২৫৯ জন প্রবাসী। এরপর গত দুই সপ্তাহে হাজারখানেকের মতো প্রবাসী বিমানের বিশেষ ফ্লাইটে ইতালি ফিরে গেছেন।

এর মধ্যে ইতালির রাজধানী রোমের লাৎসিও অঞ্চল কর্তৃপক্ষ প্রবাসী বাংলাদেশিদের ঢালাও করোনাভাইরাস পরীক্ষা করানোর উদ্যোগ নিয়েছে। সম্প্রতি বেশ কয়েকটি ‘ক্লাস্টার’ সংক্রমণের ঘটনায় গত সপ্তাহে কর্তৃপক্ষ ওই সিদ্ধান্ত নেয় বলে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়।

সে সময় রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত কয়েক দিনে লাৎসিও অঞ্চলে নতুন করে আক্রান্তদের মধ্যে ১০ জন বাংলাদেশি। তাদের মধ্যে সর্বশেষ শুক্রবার একজনের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে, যিনি মাত্রই দেশ থেকে ফিরেছেন।

বাংলাদেশের ফ্লাইটকে ভাইরাসবাহী বোমার সঙ্গে তুলনা

এদিকে করোনারোগী শনাক্তের পর বাংলাদেশ থেকে যাওয়া ওই ফ্লাইটকে ভাইরাসবাহী বোমার সঙ্গে তুলনা করেছে কর্তৃপক্ষ৷

লাৎসিও রাজ্যের স্বাস্থ্য কমিশনার আলেসিও ডি'আমাতো বাংলাদেশ থেকে আসা বিমানটিকে ভাইরাসবাহী বোমার সঙ্গে তুলনা করেছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘আমরা সেটিকে নিষ্ক্রিয় করেছি৷''

এক সপ্তাহের জন্য ফ্লাইট বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়ার পর ইতালির দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, ফ্লাইট বন্ধের এই সময়ে ইতালি সরকার ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও শেনজেন অঞ্চলের বাইরে থেকে যাওয়া সবার জন্য নতুন করে পূর্ব সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিয়ে কাজ করবে তারা।

গত ফেব্রুয়ারিতে যখন ইতালিতে ব্যাপকভাবে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে সে সময় বাংলাদেশে এই রোগ পৌঁছায়নি। তখন ইতালিসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে দলে দলে প্রবাসীরা ফিরতে শুরু করে।

ইতালি থেকে প্রথমবার ফেরা কয়েক শ প্রবাসীকে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে রাখার জন্য বিমানবন্দর সংলগ্ন আশকোনা হজক্যাম্পে নেওয়ার পরও তাদের বিক্ষোভের মুখে ছেড়ে দেয় সরকার।

এর কিছু দিন পরে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় করোনাভাইরাস সংক্রমণ দেখা দিতে শুরু করে।  আর এই করোনায় এখন ধুঁকছে বাংলাদেশ।

দেশে প্রতিদিনই বাড়ছে মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনায় একদিনে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংখ্যক; ৫৫ জন মারা গেছেন। এ নিয়ে মোট মৃত্যু ২ হাজার ১৫১ জনের। এ সময়ের মধ্যে শনাক্ত হয়েছেন ৩ হাজার ২৭ জন। এ নিয়ে মোট শনাক্ত হলেন ১ লাখ ৬৮ হাজার ৬৪৫ জন। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৯৫৩ জন।

ঢাকাটাইমস/০৭জুলাই/ইএস