‘লকডাউন জবরদস্তি নয়, সেবামূলক দায়বদ্ধতা’

চট্টগ্রাম ব্যুরো, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৭ জুলাই ২০২০, ২৩:১৪

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ.জ.ম নাছির উদ্দীন বলেছেন, করোনাকালে অবনতিশীল পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকার ঘোষিত লকডাউন কার্যকর করা একটি কঠিন কাজ। জনস্বার্থ বিবেচনায় লকডাউন জবরদস্তি ও দমনমূলক নয়, এটি সেবামূলক দায়বদ্ধতা। এই বোধ জাগ্রত করে চট্টগ্রাম মহানগরীর উত্তর কাট্টলীতে প্রথমবারের মতো এলাকাভিত্তিক লকডাউনের অর্জিত সফল অভিজ্ঞতা পরবর্তীতে অন্যান্য এলাকায় প্রয়োগ করা হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অবশ্যই ইতিবাচক সুফল বয়ে আনবে।

গত ১৬ জুন থেকে নগরীর ১০ নম্বর উত্তর কাট্টলী ওয়ার্ডে টানা ২১ দিনব্যাপী লকডাউনের সমাপনী দিন ছিল মঙ্গলবার। এ উপলক্ষে সকালে সিটি গেইট সংলগ্ন সুজানা স্কয়ারে খতমে কোরআন ও দোয়া মাহফিল শেষে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে এক বৈঠকে এসব কথা বলেন মেয়র।

আ.জ.ম নাছির বলেন, স্বাস্থ্য বিভাগ, প্রশাসন, আইনশৃংখলা বাহিনী, স্বাস্থ্যকর্মী ও প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধানে লকডাউন চলাকালে সংশ্লিষ্টরা সবাই সাধারণ মানুষের মন জয় করে নিজেদের দায়িত্ব পালন করেছেন। সেজন্য সবাই সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন করা সম্ভব হয়েছে।

সিটি মেয়র পরবর্তীতে যেসব এলাকায় লকডাউন হবে সেগুলোর সম্ভাব্য আওতা ও পরিধি বিন্যাস করে বলেন, ওই সময় একটি পুরো এলাকাকে স্থবির না করে শুধুমাত্র ব্যাপকভাবে সংক্রমিত স্থানটি বেছে নিয়ে লকডাউনের আওতায় আনা হলে জীবন রক্ষার পাশাপশি জীবিকা ও অর্থনীতির চাকা সচল থাকবে। এর প্রভাবে লকডাউন নিয়ে সাধারণ মানুষের কর্মহীন হয়ে পড়ার ভীতি ও আশঙ্কা দূর হবে এবং লকডাউন চলাকালীন নির্ধারিত এলাকার অধিবাসীরাও স্বস্তি অনুভব করবেন।

তিনি ১০ নম্বর উত্তর কাট্টলী ওয়ার্ডে লকডাউন চলাকালীন অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, এলাকাটি আবাসিক এবং এখানে গার্মেন্টসসহ ছোট-বড় শিল্প ও কলকারখানা রয়েছে। তাই প্রথমদিকে লকডাউন কার্যকর করতে গিয়ে এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থা বেশ বেগ পেতে হয়েছে। তবে দুই-একদিন পর থেকে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষ ও আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্য এবং স্বেচ্ছাসেবকরা এলাকাবাসীর চাহিদা এবং দৈনন্দিন চাওয়া পাওয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে সেবা দিতে সচেষ্ট হলে একটি অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয়।

মেয়র বলেন, লকডাউন চলাকালে এখানে কোনো হতদরিদ্র অভুক্ত ছিলেন না। প্রতিদিন প্রায় দুই হাজার মানুষকে খাবার তুলে দেয়া হয়েছে। এছাড়াও প্রয়োজন অনুযায়ী এলাকাবাসীকে চিকিৎসাসেবাও দেয়া হয়েছে। রোগের নমুনা পরীক্ষার জন্য বুথ ও রোগী পরিবহনের জন্য সার্বক্ষণিক অ্যাম্বুলেন্স ব্যবস্থাও চালু রাখা হয়েছিল। লকডাউন শুরু হওয়ার আগে এই এলাকায় করোনা সংক্রমণে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১১৪ জন। এখন এখানে আক্রান্তের সংখ্যা মাত্র ১১ জন।

ইতোমধ্যে ৫৮ করোনা আক্রান্ত রোগী সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরে গেছেন। এতে বোঝা যায় পরিকল্পিত এলাকাভিত্তিক লকডাউন চলাকালীন স্বাস্থ্য বিধি সামাজিক দূরত্ব এবং অন্যান্য নিষেধাজ্ঞা যথাযথভাবে আরোপিত হলে পরিস্থিতি যাই হোক না কেন ভয়, উদ্বেগ, উৎকন্ঠার অবসান হবে।

অনুষ্ঠানে কাউন্সিলর নিছার উদ্দিন আহমদ মঞ্জু, মহিলা কাউন্সিলর আবিদা আজাদ, মেয়রের একান্ত সচিব মোহাম্মদ আবুল হাশেম, জেলা প্রশাসকের পক্ষে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আলী হাসান, সহকারী পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আরিফ, পাহাড়তলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(তদন্ত)রাশেদুল হক, আকবরশাহ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি সোলতান আহমদ চৌধুরী, আবু সুফিয়ান, ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের যুগ্ম আহবায়ক মোহাম্মদ ইকবাল চৌধুরী, সহসভাপতি লোকমান আলী, সহসম্পাদক রোকন উদ্দিন চৌধুরী, যুবলীগের আবুল কালাম আবু, মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ ও ১০ নম্বর ওয়ার্ডে বিভিন্ন মসজিদের ইমাম ও খতিবরা উপস্থিত ছিলেন।

(ঢাকাটাইমস/৭জুলাই/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :