মানুষ হওয়ার শিক্ষাও গ্রহণ করুন

সাগর দত্ত
 | প্রকাশিত : ০৯ জুলাই ২০২০, ১১:৪৪

হে জাতি, জ্ঞান, বিজ্ঞান, চিন্তা, চেতনা,মননশীলতায় বেড়ে উঠো। কেন শুধু বিসিএস এর চিন্তা! হাসবো না কাঁদবো! এডমিন ক্যাডার পাওয়া

এক ছেলে ২৯ বছর বয়সেও নাকি মোবাইল ব্যবহার করেনি! এদের পাগলামিতে নতুন প্রজন্ম কোথায় পতিত হবে একবার চিন্তা করতে পারেন? পড়াশোনা শেষ করে বিসিএস ক্যাডার বা এরকম টাইপ কিছু হতে হবে- এই ধারণাটা এখন প্রতিটি ৮/১০ বছরের বাচ্চাটার মাথায় ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আর শিশুদের এটাও ফোর্স করা হয়, পাবলিক পরীক্ষায় যে কোনো মূল্যে A+ পেতে হবে।

কোথায় সে বিশ্বজয় করবে তা না, এখন তার চিন্তা কোনোরকম ক্লাস পাড়ি দিয়ে, একগাধা পড়া মুখস্থ করে কিভাবে সে বিসিএস ক্যাডার হবে। ভার্সিটিতে ভর্তির পর একাডেমিক পড়া না পড়ে পোলাপান এমপি থ্রি, অমুক প্রকাশন, তমুক প্রকাশন মুখস্থ করে বিসিএসের পরীক্ষায় বসে। নেই কোনো গবেষণা, নেই কোনো উপলব্ধিতা।

লাইব্রেরিতে ঢুকে মত্ত, ব্যস্ত কোনো দেশের রাজধানী কোথায়, কোথায় কোনো পাখি কবে ডিম পেরেছে, মানুষ বড় না বলদ বড় - -ইত্যাদি ইত্যাদি বিষয় মুখস্থ করা নিয়ে। যতদূর মনে হয় ১০/১২ বছর পূর্বেও এমনটা ছিলো না। এমবিবিএস পাশ করে যে ছেলে বা মেয়ে ডাক্তার হওয়ার কথা, যার কাজ হবে রোগীর সেবা দেওয়া, আজ সেও ছুটছে কিভাবে ম্যাজিস্ট্রেট হওয়া যায়!বড্ড সেলুকাস!

তাহলে কেন সে ডাক্তারি পড়তে গেলো? সে তো নিশ্চিত তার ডাক্তারি পড়ায় ফাঁকি দিয়েছে, রাষ্ট্রের কোটি কোটি টাকা নষ্ট করেছে। ডাক্তার হলেও নিশ্চিত সে রোগী মেরে ফেলবে। আমরা প্রায়ই শুনি, অমুক হাসপাতালে বা তমুক ক্লিনিকে ডাক্তার রোগী মেরে ফেলেছে। রোগী তো মারবেই কারন সে ডাক্তারি পড়ায় ফাঁকি দিয়েছে। তার মগজে তো ঘুরছে ম্যাজিস্ট্রেট হওয়ার চিন্তা! ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে যে ছেলে তার স্বীয় কাজে পারদর্শী হবে তা না করে সে ছুটছে কিভাবে কিছু বই মুখস্থ করে ট্যাক্স অফিসার হওয়া যায়। সে যদি ট্যাক্স অফিসার না হতে পেরে ইঞ্জিনিয়ার হয়, তাহলে নির্মান কাজে রডের বদল বাঁশ দিবে। হ্যাঁ, এটাই সত্য!এরকম ঘটনাই তো ঘটছে।

একজন গার্মেন্ট কর্মী পোশাক বানায়, তার জন্য আমাকে-আপনাকে লেংটা থাকতে হয়না। কৃষক ফসল ফলায় যা খেয়ে জীবন ধারণ করি!

একটি বেকার ছেলে অনেকগুলো সার্টিফিকেট অর্জন করে আজ একটি পোল্ট্রি ফার্ম স্টার্ট করেছে। বিসিএস জবের চেয়ে "ফার্মিং", "ড্রেস মেকিং" - পেশা আমার কাছে ক্রিয়েটিভ মনে হয়। আপনি এসব পেশায় কেন মানুষকে উদ্বুদ্ধ করেন না?

আজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভালো গবেষক নেই, নেই কোনো গবেষণা। জ্ঞান -বিজ্ঞানে ধ্বস! বিশ্ববিদ্যালয় র্যাংকিং এ ২০০০ এর মধ্যেও বাংলাদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয় যায়গা পায় না। পড়াশোনা শেষ করে শুধু বিসিএস- বিসিএস জপ করা এক ধরনের প্রতিবন্ধিতা নয় কি?

.আমি একজন শিক্ষক। শিক্ষার্থীদের মানুষ হওয়ার শিক্ষা দেই।শিক্ষাজীবন ও কর্মজীবনে আমিও বহু রেকর্ড অর্জন করেছি। তবে আপনাদের মত বিসিএস ক্যাডার হওয়ার জন্য কোনো কালেই মরিয়া হয়ে উঠিনি। সবাই বিসিএস ক্যাডার হলে মানুষ হওয়ার শিক্ষা কে দিবে? আপনারা মানুষ হওয়ার শিক্ষাও গ্রহণ করুন।

লেখক: শিক্ষক ও থিয়েটার কর্মী

ঢাকাটাইমস/৯জুলাই/এসকেএস

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফেসবুক কর্নার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :