রিজেন্ট হাসপাতালের অপকর্মে সরকারের মদদ দেখছেন ফখরুল

প্রকাশ | ০৯ জুলাই ২০২০, ১৬:১৮ | আপডেট: ০৯ জুলাই ২০২০, ১৮:৪৬

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

রিজেন্ট হাসপাতালের অপকর্ম সরকারের মদদেই হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বৃহস্পতিবার এক ভার্চুয়াল আলোচনায় বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘একটা হাসপাতাল কী করে একটা মিথ্যা সার্টিফিকেট দিতে পারে। কালকে আমি এ যে দেখলাম একাত্তর টেলিভিশনে- আমাদের সমস্ত মন্ত্রীরা তার (রিজেন্ট হাসপাতালের কর্ণধার মো. সাহেদ) সঙ্গে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠভাবে পরিচিত, অত্যন্ত ঘনিষ্ঠভাবে তাদের সঙ্গে কথা বলছেন, কাজ করছেন। অর্থাৎ পুরোপুরি সরকারের মদদ নিয়ে এই অপকর্মটা তারা করেছে।’

বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট রিসার্চ অ্যান্ড কমিউনিকেশনের উদ্যোগে ‘রাজনৈতিক দলসমূহের নিবন্ধন আইন: করোনাভাইরাস বিপর্যয়ের মধ্যে নির্বাচন কমিশনের আবারো সংবিধানবিরোধী পদক্ষেপ’ শীর্ষক এই ভার্চুয়াল আলোচনা সভা হয়। আলোচকরা নিজ নিজ বাসা থেকে এই আলোচনায় যুক্ত হন।

ফখরুল বলেন, ‘কোভিড-১৯ ভাইরাসের মধ্যে এই সরকারের যে ভূমিকা, তাদের যে পারফরমেন্স-এটা তো বলার অপেক্ষা রাখে না। আমরা সবাই দেখছি, ভোগ করছি প্রতিমুহূর্তে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সকালে উঠে শুনতে হয় মৃত্যুর খবর আবার রাতে শোয়ার আগেও শুনতে হয় মৃত্যুর খবর। এভাবে মহামারিতে মৃত্যু হবে কিন্তু তা কোনো রকমের প্রতিরোধ গড়ে উঠবে না এবং চরম উদাসীনতার মধ্য দিয়ে, অবহেলার মধ্য দিয়ে সরকার মানুষকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেবে-এটা কখনো গ্রহনযোগ্য হতে পারে না।’

ফখরুল আরও বলেন, ‘এই অবস্থা থেকে তাই মুক্তি পেতে হলে আমাদের জনগণের মতামতকে যদি সত্যিকার অর্থেই গুরুত্ব দিতে হয়, সত্যিকার অর্থেই যদি একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র আমরা তৈরি করতে চাই, সত্যিকার অর্থেই একটি কল্যাণমূলক রাষ্ট্র আমরা নির্মাণ করতে চাই জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার কোনো বিকল্প নাই, সেই জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোকে গণতন্ত্রকে রক্ষা করবার জন্য, জনগণের অধিকারকে রক্ষা করবার জন্য তাদের আজকে একটা জায়গায় আসতে হবে এবং নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে শুদ্ধ করে আনার জন্যে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার এবং এই সরকারকে চলে যেতে হবে-এই দাবি তুলতে হবে।’

আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রাখতে ইসির উদ্যোগ

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘রাজনৈতিকদলের নিবন্ধন আইনের সংশোধনের উদ্দেশ্য একটাই- সেটা হচ্ছে আওয়ামী লীগকে বারবার ক্ষমতায় নিয়ে আসা, আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রাখা। নির্বাচন কমিশন তারা তাদের দায়িত্ব পালন করছে, তারা তাদের প্রভুদেরকে ক্ষমতায় রাখার জন্য সমস্ত আইন তৈরি করছে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা আসুন আমাদের দায়িত্ব পালন করি। জনগণের কাছে আমাদের যে কমিটমেন্ট আছে, সেই কমিটমেন্ট নিয়ে আমরা ঐক্যবদ্ধ হই এবং এই সরকারকে চলে যেতে বাধ্য করি নির্বাচন কমিশন নতুন করে গঠন করার প্রক্রিয়া শুরু করতে পারি।’

ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় নিয়ে আসা এবং তাদেরকে ক্ষমতায় রাখার প্রক্রিয়াটি ২০০৭ সালের এক-এগারোর সেনা সমর্থিত সরকার থেকে শুরু হয়েছে। বিরাজনীতিকরণের একটি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে রাজনীতিকে দূরে সরিয়ে, রাজনৈতিক দলগুলোকে একেবারে অকার্য্কর করে। এখনো পরিকল্পিতভাবে সচেতনভাবে সেই কাজ চলছে।’

বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা সাবেক সাংসদ জহিরউদ্দিন স্বপনের পরিচালনায় আলোচনায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ২০ দলীয় জোটের নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক বজলুর রশীদ ফিরোজ ও নির্বাচন কমিশনের সাবেক সচিব আবদুর রশিদ সরকার বক্তব্য দেন।

(ঢাকাটাইমস/০৯জুলাই/বিইউ/জেবি)