কলঙ্ক রটলেও করণই তাদের মেন্টর

বিনোদন ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১০ জুলাই ২০২০, ১২:২৪ | প্রকাশিত : ১০ জুলাই ২০২০, ১২:১০

বলিউড অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের অকালমৃত্যুর পর বহু রথী-মহীরথীর গায়েই স্বজনপোষণের দাগ লেগেছে। সে তালিকায় রয়েছেন প্রযোজক-পরিচালক করণ জোহারের নামও। তা সত্ত্বেও বলিউডের বহু তারকাই করণকে নিজের মেন্টর বলে মনে করেন। করণের ঘনিষ্ঠ মহলের বলে পরিচিত এই তারকাদের অনেকেই তার জন্য বলিউডে জায়গা করে নিয়েছেন বলেও শোনা যায়। সুশান্তের মৃত্যু নিয়ে অনেকেই তাকে কাঠগড়ায় দাঁড় করালেও করণের সঙ্গ ছাড়তে নারাজ এই তারকারা।

পরিচালক-প্রযোজক করণ জোহারের ঘনিষ্ঠদের মধ্যে অন্যতম হলেন শাহরুখ খান। বলিউডের বেতাজ বাদশার সঙ্গে বড় পর্দায় করণের জুটি বাঁধার শুরুটা হয়েছিল ‘কুছ কুছ হোতা হ্যায়’ ছবি দিয়ে। ১৯৯৮ সালে করণ জোহারের ওই ছবি মুক্তি পাওয়ার আগেই অবশ্য তাদের বন্ধুত্বের যাত্রা শুরু।

আদিত্য চোপড়ার ছবি ‘দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে যায়েঙ্গে’র সময় থেকেই শাহরুখ ও করণের বন্ধুত্ব জোরদার হয়। ওই ছবিতে করণ ছিলেন আদিত্যর অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর। সে সময় করণ নাকি শাহরুখকে কথা দিয়েছিলেন, নিজের অভিষেক ছবিতে তাকেই নায়ক করবেন। সে কথা তিনি রাখেনও। তার ডেবিউ ফিল্ম ‘কুছ কুছ হোতা হ্যায়’তে হিরোর রোলে দেখা যায় শাহরুখকে। আবার অনেকে বলেন, করণের ডিরেক্টর হওয়ার পেছনেও নাকি শাহরুখের হাত রয়েছে। ইন্ডাস্ট্রিকে বহু সুপারহিট ফিল্ম উপহার দিয়েছেন এই জুটি।

শাহরুখের পর করণের কাছের মানুষদের মধ্যে নাম আসতে পারে কারিনা কাপুর খানের। কারিনা আর করণের বন্ধুত্ব হবে না-ই বা কেন? দুজনেই নাকি বেজায় গসিপ করতে ভালবাসেন। হ্যাঁ! কারিনার কাছে নাকি বলিউডের সমস্ত গসিপ আগে পৌঁছায়। আর করণের সঙ্গে তার জমজমাট দোস্তির কথাটাও তো অজানা নয় কারও।

কারিনা যে করণের কাছের মানুষ, তা বেশ বোঝা গিয়েছিল ২০০১ সালে তার মাল্টিস্টারার ফিল্ম ‘কাভি খুশি কাভি গম’-এর সময়। সেখানে একটি প্রধান চরিত্রে ছিলেন কারিনা। অথচ সে সময় কারিনার ফিল্মি বাজার ততটা ভালো ছিল না। তা সত্ত্বেও অমিতাভ বচ্চন, শাহরুখ খানের মতো সুপারস্টারদের সঙ্গে দেখা গিয়েছিল তাকে। অনেকে বলেন, ওই ফিল্মের পরই নাকি কারিনার কেরিয়ারে চমক লাগে।

করণ জোহারের কাছের মানুষদের মধ্যে শাহরুখ-কারিনাদের পাশে অনায়াসে আরও এক জনের নাম জুড়তে পারে। তিনি হলেন বরুণ ধাওয়ান। ‘স্টুডেন্ট অব দ্য ইয়ার’ দিয়ে ফিল্মি কেরিয়ার শুরু করা বরুণ আসলে ডিরেক্টর হতে চেয়েছিলেন। কারণ তার বাবা ডেভিড ধাওয়ান ও ভাই রোহিত- দুজনেই পরিচালক। তাছাড়া, করণের ফিল্ম ‘মাই নেম ইজ খান’-এ তার অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টরও ছিলেন বরুণ। তবে করণই নাকি বরুণকে অভিনয়ের পরামর্শ দেন। তাকে নিজের ফিল্ম ‘স্টুডেন্ট অব দ্য ইয়ার’-এ একেবারে হিরোর রোলে নিয়ে আসেন। এরপর ‘বদ্রীনাথ কি দুলহানিয়া’ হোক বা ‘কলঙ্ক’- করণের ফিল্মে বার বার দেখা গেছে বরুণকে।

অনেকে বলেন, করণকে আসলে নিজের গুরু মনে করেন বরুণ। গুরুপূর্ণিমার দিন করণের পায়ে হাত দিয়ে বরুণের প্রণাম করার ছবি তো একবার ভাইরালও হয়েছিল। এও শোনা যায়, করণের কথামতোই নাকি নিজের পারিশ্রমিক বাড়িয়ে দিয়েছেন বরুণ।

বরুণরা ছাড়াও মনীশ মালহোত্রের মতো ফ্যাশন ডিজাইনারও করণের ক্লোজ সার্কলের মধ্যে রয়েছেন। নামজাদা ফ্যাশন ডিজাইনার নন, বরং অভিনয় ও মডেলিংয়ের জন্য বলিউডে পা রেখেছিলেন মনীশ। তবে ‘দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে যায়েঙ্গে’র সময় শাহরুখের পাশাপাশি তার সঙ্গেও বন্ডিং তৈরি হয়েছিল করণের।

করণের বন্ধু হওয়ার লাভও পেয়েছেন মনীশ মালহোত্র। ‘কুছ কুছ হোতা হ্যায়’-তে তাকেই ফিল্মের কস্টিউম ডিজাইন করার দায়িত্ব দেন করণ। এরপর থেকে নিজের বহু ফিল্মে ওই রোলে বার বারই দেখা গেছে মনীশকে। এমনকি করণের পার্টি হোক বা কোনও ইভেন্ট- সবখানেই নজরে পড়ে মনীশ মালহোত্রার উপস্থিতি।

ইন্ডাস্ট্রির উঠতি তারকাদের বেশ ঘনিষ্ঠ করণ। ভিকি কৌশলকে দেখুন! ‘গ্যাংস অব ওয়াসেপুর’-এর অ্যাসিন্ট্যান্ট ডিরেক্টর ভিকিকে ‘লবসব তে চিকেন খুরানা’ বা ‘বম্বে ভেলভেট’-এ দেখা গেছে ছোটখাটো রোলে। সেখান থেকে এই মুহূর্তে বলিউডের নজরকাড়া অভিনেতাদের মধ্যে থাকা ভিকিকে নাকি কাছে টেনে নেন করণই।

২০১৫ সালে ‘মশান’ করার পর থেকেই ভিকি কৌশলের বাজারদর চড়া হতে শুরু করে। সে সময়ই নাকি করণের নজরে পড়েন ভিকি। এরপর করণের পার্টিতে নিয়মিত যাতায়াত শুরু হয় তার। এখন তো করণের ঘনিষ্ঠদের মধ্যে একজন হলেন ভিকি। না হলে করণের কথায় ‘ভূত’-এর মতো ফিল্ম করতে রাজি হয়ে যান তিনি! প্রশ্ন অনেকের। তিনি এর প্রতিদানও পেয়েছেন বলে শোনা যায়। ‘তখত’-এর মতো ফিল্মে নাকি ভিকির রোলও বাড়িয়ে আরও গুরুত্বপূর্ণ করা হচ্ছে।

বলিউডে আরও এক জনকেও লাকি বলে ডাকা যেতে পারে। তিনি হলেন সিদ্ধার্থ মালহোত্রা। সাকুল্যে ১২টা ফিল্ম রিলিজ করেছে তার। বক্স অফিসে সেগুলো যে সুপারডুপার হিট, তা বলা যাবে না। তা সত্ত্বেও বড় ব্যানারে দেখা যায় তাকে। নেপথ্যে যে করণ জোহার, সে কথা বলেন নিন্দুকেরা।

নিন্দুকেরা আড়ালে যা-ই বলুন না কেন, সিদ্ধার্থ প্রকাশ্যেই করণের গুনগান করেন। তাকে বডিউডে আনার পেছনে যে করণের হাত রয়েছে, সে কথাও সরাসরি বলেন সিদ্ধার্থ। করণের কথা নাকি অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলেন আলিয়া ভাট। কোনও প্রজেক্টে হাত দেয়ার আগে তার সঙ্গে পরামর্শ করেন। আর একবার তো আলিয়া প্রকাশ্যেই বলেছিলেন, করণ তার কাছে বাবার মতো।

করণের কথা শুনেই নাকি সুশান্ত সিং রাজপুতের সঙ্গে ‘রাবতা’য় কাজ করতে রাজি হননি আলিয়া। সে সময় ‘শুদ্ধি’ বলে করণের একটি ফিল্মে কাজ করার কথা ছিল তার। তবে সে ফিল্মটি দিনের আলো দেখেনি। তা সত্ত্বেও করণের বহু ফিল্মেই বার বার দেখা গেছে আলিয়াকে। সুশান্তের মৃত্যুর পর অনেকেরই প্রশ্ন, করণের কাছের মানুষ হয়ে উঠতে পারলে কি এই পরিণতি হত তার? উত্তরটা কোনও দিনই মিলবে না!

ঢাকাটাইমস/১০জুলাই/এএইচ

সংবাদটি শেয়ার করুন

বিনোদন বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বিনোদন এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :