করোনায় ক্যানসার রোগীদের বিশেষ ভ্যাকসিন কানাডার

প্রকাশ | ১০ জুলাই ২০২০, ১৪:২৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকা টাইমস
এই গবেষণার নেতৃত্বে রয়েছেন অধ্যাপক ডক্টর রেবেকা আওয়ার

ক্যানসার রোগীদের করোনা থেকে বাঁচাতে, শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে এবং সংক্রমণ-প্রতিরোধী ক্ষমতা গড়ে তোলার জন্য বিশেষ ভ্যাকসিনের ট্রায়াল চলছে কানাডায়। বিশ্বে প্রথমবারের মতো ক্যানসার রোগীদের উপর আএমএম-১০১ ভ্যাকসিনের ক্লিনিকাল ট্রায়াল করছেন কানাডার ওট্টাওয়া হাসপাতালের সার্জিকাল অনকোলিস্ট এবং ওট্টাওয়া ইউনিভার্সিটির গবেষক-অধ্যাপক ডক্টর রেবেকা আওয়ার।

করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি ক্যানসার ও এইচআইভি রোগীদের। ক্যানসারের রোগী যাদের কেমোথেরাপি চলছে তাদের ইমিউনিটি পাওয়ার বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা প্রায় তলানিতে এসে ঠেকে। এই অবস্থায় সার্স-কভ-২ ভাইরাসের সংক্রমণ হলে বাঁচবার সম্ভাবনা প্রায় থাকে না বললেই চলে। এই ধরনের রোগীদের কোভিড-১৯ সংক্রমণ থেকে বাঁচানোর জন্য প্রথমবার ইমিউন বুস্টারের ক্লিনিকাল ট্রায়াল করতে চলেছে কানাডিয়ান ক্যানসার ট্রায়াল গ্রুপ । 

এই ট্রায়ালের নেতৃত্বে থাকা ডক্টর রেবেকা জানিয়েছেন, ক্যানসার রোগীদের থেরাপি চলার সময়েই কোভিড সংক্রমণ মোকাবিলার জন্য এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হবে। নির্দিষ্ট ডোজে এই ভ্যাকসিন দিয়ে রোগীদের পর্যবেক্ষণে রাখা হবে।

এই ক্লিনিকাল ট্রায়ালে ওট্টাওয়া হসপিটাল অ্যাকাডেমিক মেডিক্যাল ফাউন্ডেশনের সঙ্গেই রয়েছে কানাডিয়ান ক্যানসার সোসাইটি বায়োক্যানআরএক্স, দ্য ওন্টারিও ইনস্টিটিউট ফর ক্যানসার রিসার্চ এবং ওট্টাওয়া হসপিটাল ফাউন্ডেশন।

রেবেকা জানিয়েছেন, আইএমএম-১০১ হল ইমিউন স্টিমুলেটর। এমন এক ধরনের ড্রাগ যা তৈরি হয় ব্যাকটেরিয়া থেকে। মাইকোব্যাকটেরিয়াম ওবুয়েন্সকে তাপ দিয়ে নিষ্ক্রিয় করে এই ড্রাগ তৈরি হয়। আইএমএম-১০১ ভ্যাকসিন হিসেবে ব্যবহার করা হয়। নিষ্ক্রিয়, দুর্বল ব্যাকটেরিয়াল স্ট্রেন থেকে তৈরি হয় ভ্যাকসিন। কেমোথেরাপির সময় এই ইমিউন স্টিমুলেটর অনেক সময় প্রয়োগ করে দেখেন ডাক্তারা।

তার কথায়, ক্যানসার রোগীদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়াতে ওই নিষ্ক্রিয় ব্যাকটেরিয়া দিয়ে তৈরি ভ্যাকসিন ইনজেক্ট করা হবে। সার্স-কভ-২ ভাইরাসের থেকে অনেক কম সংক্রামক হওয়ায় এবং নিষ্ক্রিয় করে ফেলার জন্য রোগীর শরীরে কোনো ক্ষতি হবে না। কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে, তবে তার উপযোগী ব্যবস্থা রাখা হবে।

কানাডিয়া ক্যানসার ট্রায়াল গ্রুপের সিনিয়র ইনভেস্টিগেটর ডক্টর ক্রিস ও’ক্যালাঘ্যান বলেছেন, যেকোনো ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীরাই হাই-রিস্ক গ্রুপে রয়েছেন। কোভিড সংক্রমণ হলে তাদের সারানো খুব মুশকিল। পাশাপাশি, নানারকম জটিল রোগও দেখা দিতে পারে। তাই যতদিন না কোভিড ভ্যাকসিন বাজারে আসছে, এই আইএমএম-১০১ ভ্যাকসিনের সাহায্যে ক্যানসার রোগীদের রোগ প্রতিরোধ বাড়ানোর চেষ্টা করা হবে।

ওন্টারিও ক্যানসার রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রেসিডেন্ট ও সায়েন্টিফিক ডিরেক্টর ডক্টর ল্যাজ়লো র‍্যাডভানি বলেছেন, তিন পর্যায়ের ট্রায়াল হবে ক্যানসার রোগীদের। এই ইমিউন বুস্টার শরীরে রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়াবে বলেই আশা তাদের।

ঢাকা টাইমস/১০জুলাই/একে