খুব নিকট সম্পর্কের অতীত কোলাহলে হোঁচট খাই

শাহানাজ খুশি
 | প্রকাশিত : ১০ জুলাই ২০২০, ১৪:৪৯

বিভাগীয় শহরগুলোতে যাদের জন্ম,বেড়ে ওঠা,তাদের কথা ভিন্ন।কিন্তু যারা থানা/ইউনিয়ন পর্যায়ে জন্ম,বেড়ে উঠা তাদের জন্য সে সময় একটা রেল ষ্টেশন/বাসস্ট্যান্ড/থানা অনেক বড় বিষয়।আমাদের এলাকায় আমরা ছিলাম সেই গর্বের অধিকারী। জন্মের পর থেকে আমাদের বাড়ীর নিকটবর্তী ছিল থানা,একটু দুরে রেল ষ্টেশন।

আমার বুদ্ধি হবার পরেই বাড়ীতে শুধু বিদ্যুৎ দেখা নয়,রীতিমত রাইস এন্ড ওয়েল মিল দেখেছি। সেদিক থেকে আমরা অনেক ভাগ্যবান। ছোট বেলায়,মা খালার বাড়ি ভেড়ামারা যেতো রেল গাড়িতে। টমটমের মুখটা কাপড় দিয়ে ঘিরে এক ধরনের পর্দা করে দিত। ভেতরে আমরা!কি ভয়ানক উত্তেজনা। কারন মা যেতেন অনেক বছর পর পর। তখন "চাটমোহর" লেখা এই বোর্ডটা ছিল ধুসর খয়েরী রংয়ের। জায়গায় জায়গায় রং ওঠাও ছিল। রেল গাড়িটাও ছিল একই রংয়ের।

তখন থেকেই এই ষ্টেশনের "চাটমোহর" লেখা বোর্ডটা আমার হার্টবিট বাড়ানো আনন্দের নাম। ট্রেনের সিগন্যাল পড়াকে বলতো,'পাখা, পড়া। এ সব কিছু কোনদিনই আমার কাছে ঝাপসা হয়নি। ছোটবেলার অনুভুতি গুলো আমার সামনে চলার পথ অনেকটা বাঁধাগ্রস্থ করেছে। দীর্ঘদিন আমি বাড়ি গিয়েছিলাম না। যখন যাওয়া শুরু করেছি,তখন হাইওয়ে ধরে গাড়িতে।

কিন্তু আমার মন পড়ে থাকতো এই ডেস্টিনি!এই ষ্টেশনে। ২৪ বছর পর,গত বছর এই স্টেশনে নেমে,আমি সব সৌজন্যতা ভুলে দৌড়ে গিয়েছিলাম ঐ বোর্ডের কাছে! বদলে গেছে সেই রং/লেখা/ ষ্টেশনের আদল! "চাটমোহর লেখা নতুন বোর্ড আমাকে চিনলো কিনা জানিনা!

কিন্তু আমি সেই একই আবেগে ভেসেছি! কারো কারো জীবনের অনেক গুরুত্বপর্ন অংশ আঁটকে যায় এমন রঙ,এ/ গন্ধে/ শব্দের স্মৃতিতে! আমি আমার জীবনের সব অলি গলিতে সব সময় এমন নানান ল্যাম্পপোস্ট/ষ্টেশন/খুব নিকট সম্পর্কের অতীত কোলাহলে হোঁচট খাই! রক্তাত্ব হই,আবার ফিরে যাই! কারন,এ ব্যাথায়/ আমার আপন লাগে তাই।

লেখক: অভিনয়শিল্পী

ঢাকাটাইমস/১০জুলাই/এসকেএস

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফেসবুক কর্নার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :