শিক্ষকের লালসার শিকার হয়ে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী গর্ভবতী

প্রকাশ | ১০ জুলাই ২০২০, ২১:৫০

নন্দীগ্রাম (বগুড়া) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

বগুড়ার নন্দীগ্রামে হাফেজের ধর্ষণে পঞ্চম শ্রেণির এক শিক্ষর্থী(১০) তিন মাসের গর্ভবতী হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার থালতা মাঝগ্রাম ইউনিয়নের দারিয়াপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি জানাজানির পর থেকে অভিযুক্ত হাফেজ রুহুল কুদ্দুস (৫৫) পলাতক রয়েছেন।

এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে ও শুক্রবার দুপুরে থানা পুলিশ দফায় দফায় অভিযান চালিয়ে কয়েকজন গ্রাম্য মাতব্বরকে আটক করেছে। তবে অভিযুক্ত হাফেজ রুহুল কুদ্দুস এখনো পলাতক রয়েছেন। আটকরা হলেন দারিয়াপুর শাহপাড়ার আবু সাঈদ (৬০), আফজাল হোসেন (৬৫), বাবু মিয়া (৩৫) ও শাকিবুল্লাহ (৩০)।

শিশুটির পরিবার ও এলাকাবাসী জানান, দারিয়াপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ওই শিক্ষার্থী এলাকার অন্যান্য শিশুদের সঙ্গে কোরআন শেখার জন্য হাফেজ রুহুল কুদ্দুসের বাড়িতে যেত। এ অবস্থায় একদিন কুদ্দুসের বাড়িতে তার পরিবারের লোকজন না থাকায় তিনি সব শিক্ষার্থীকে ছুটি দিয়ে ওই শিশুটিকে পড়া ধরবে বলে বসতে বলে। অন্য শিশুরা চলে যাওয়ার পর হাফেজ তাকে ধর্ষণ করে। এ সময় শিশুটি চিৎকার করলে তার মুখে কাপড় চাপা দেন কুদ্দুস। পরে ওই শিশুটিকে ধর্ষণের কথা বাইরে কাউকে বলতে নিষেধ করে। এ ঘটনা কাউকে বললে তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেন কুদ্দুস। ওই ভয়ে শিশুটি পরিবারের কাউকে বিষয়টি জানায়নি।

সম্প্রতি ওই শিশুটি অসুস্থ হয়। তখন তার বাবা-মা গত ৪ জুলাই তাকে উপজেলা সদরের একটি ক্লিনিকে নিয়ে যায়। ক্লিনিকে চিকিৎসক শিশুটির অল্ট্রাসনোগ্রাফি করে। ওই রির্পোটে শিশুটিকে তিন মাসের গর্ভবতী বলে উল্লেখ করা হয়।

এদিকে গত বুধবার ধর্ষণের বিষয়টি পাঁচ লাখ টাকার বিনিময়ে আপোস-মিমাংসা করার চেষ্টা করেন স্থানীয় মাতব্বররা। কিন্তু শিশুটির বাবা তাতে রাজি হয়নি। ঘটনাটি জানাজানি হলে হাফেজের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠে পুরো এলাকা।

ওই শিক্ষার্থীর ফুপু বলেন, মেয়ের বাবা একজন ভটভটি চালক। আমাদের কোনো লোকজন নেই। হাফেজ বিত্তশালী হওয়ায় অনেকেই বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছে। আমি প্রশাসনের কাছে এ ঘটনার ন্যায়বিচার চাই।

এ বিষয়ে শুক্রবার বিকালে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শওকত কবিরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, শিশু শিক্ষার্থীকে গর্ভবতী করার ঘটনায় থানায় একটি মামলা হয়েছে। অভিযুক্ত হাফেজ রুহুল কুদ্দুসকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

ওসি বলেন, গ্রাম্য সালিশে শিশু গর্ভবতী হওয়ার বিষয়টি টাকার বিনিময়ে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টার ঘটনায় চারজনকে আটক করা হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/১০জুলাই/কেএম)